চিত্রনায়ক সালমান শাহর গৃহকর্মী আবুল হোসেন খান প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এর আগে তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম বাবুল সাক্ষী আবুল হোসেন খানের জবানবন্দি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করার জন্য আবেদন করেন। আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষী আবুল হোসেন খান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন— জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা প্রয়াত সালমান শাহর সঙ্গে রঙিন সুজন সখী নামক সিনেমায় শুটিংয়ের সময় পরিচয় হয়। সেখান থেকে সাক্ষী আবুল হোসেন খান ৫ হাজার টাকা বেতনে সালমান শাহর চাকরি নেন। ঘটনার দিন এবং আগের দিন ও পরের দিন সাক্ষী আবুল হোসেন খান সালমান শাহের সঙ্গেই ছিলেন। ঘটনার আগে সালমান শাহর কাজকর্ম শেষ করে রাতে চলে যান। পরে তিনি তার বাড়িতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে সালমান শাহর বাসায় এসে দেখতে পান তিনি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছেন। এ খবর আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে লোকজন এসে দড়ি কেটে সালমান শাহকে নিচে নামায়।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ। এ ঘটনায় রাজধানীর রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করার আবেদন করেন তিনি। পরে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেয় আদালত। এর পরে ২০১৬ সালের ৭ ডিসেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। মামলাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে সিআইডি। ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। সিআইডির সেই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচারবিভাগীয় তদন্তে পাঠায় আদালত। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী বিচারবিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং আদালতে নারাজি আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত র্যাবকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে অন্য আদালত আদেশ দেয়, এ ঘটনা র্যাব তদন্ত করতে পারবে না। পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন