আসছে ডেঙ্গু মৌসুম : কখন সন্দেহ করবেন আপনার ডেঙ্গু হয়েছে

এবার একটু আগেভাগেই শুরু হয়েছে ডেঙ্গু মৌসুম। প্রতিবছরই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আর বাড়ছে ডেঙ্গু রোগের নানা জটিলতা। মাঝেমধ্যে নতুন রূপ নিয়ে আসে ভাইরাসটি। ডেঙ্গু একধরনের ভাইরাসজনিত জ্বর, যা এডিস মশা দিয়ে ছড়ায়। বর্ষাকালেই এর প্রকোপ বেশি।

কখন সন্দেহ করবেন আপনার ডেঙ্গু হয়েছে

• প্রথম দিন থেকেই তীব্র জ্বর। (সাধারণত ১০২ ডিগ্রি বা এর ওপরে)।

• জ্বরের সঙ্গে তীব্র শরীর, মাংসপেশিতে, গিরায় গিরায়, কোমরে ও চোখের পেছনে ব্যথা।

• জ্বরের ২-৩ দিনের মধ্যে শরীরে লাল র‍্যাশ ওঠা, যা চুলকাতে পারে।

• দাঁতের মাড়ি, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, চামড়ার নিচে রক্তের দাগ দেখা দেওয়া, বমি/পায়খানার সঙ্গে রক্তপাত বা মেয়েদের মাসিকের সঙ্গে বেশি রক্তপাত।

কী করবেন

 সন্দেহ হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রচুর পানি, তরল খাবার (স্যালাইন, ডাবের পানি, তাজা ফলের রস) খেতে থাকুন। জ্বর ও ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামলের বাইরে অন্য কোনো ব্যথার ওষুধ অথবা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খাবেন না।

 কখনো কখনো প্রাণহানিকর

একজন মানুষের জীবদ্দশায় চারবার ডেঙ্গু হতে পারে চার প্রজাতির ভাইরাস দিয়ে। যত বেশিবার ডেঙ্গু হবে, তত বেশি ডেঙ্গু অধিক জটিল আকার নিয়ে হাজির হবে।

কী কী লক্ষ রাখবেন

দাঁতের মাড়ি, পায়খানা, প্রস্রাব, মেয়েদের মাসিকের সঙ্গে অতিরিক্ত রক্ত গেলে, চামড়ার নিচে রক্ত ফোঁটা জমা হলে সতর্ক হোন। শ্বাসকষ্ট হলে, পেট ফুলে গেলে, অতিরিক্ত বমি হলে, চোখ হলুদ হয়ে গেলে; মাথা ঘুরিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

রক্ত অথবা প্লেটলেট এবং শিরাপথে স্যালাইন কাদের লাগবে

• প্লেটলেট কাউন্ট কমে গেলেই অস্থির হওয়ার কিছু নেই। অনেক সময় ৫,০০০-১০,০০০ হলেও প্লেটলেট দিতে হয় না। শুধু শরীরের কোথাও রক্তপাত হলে অথবা রক্তপাতের লক্ষণ দেখা দিলেই রক্ত/প্লেটলেট দিতে হবে।

• মুখে একদমই খেতে না পারলে অথবা অতিরিক্ত বমি/পাতলা পায়খানা হলেই কেবল শিরাপথে স্যালাইন দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

·কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়

• বাড়িতে বা বাড়ির আশপাশে কোথাও পানি জমতে দেবেন না। টব, ভাঙা বাটি, নারকেলের মালা, এসির পানি, পরিত্যক্ত টায়ার, ছোট–বড় গর্ত সব খেয়াল রাখবেন।

• বাথরুমের বালতিতে পানি ধরে রাখা লাগলে বালতিতে ঢাকনা ব্যবহার করবেন।

• মশারি ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে কিছুক্ষণ পরপর মশার ওষুধ স্প্রে করুন।

সহকারী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা