জিনিসপত্র কিনতে গেলেই জিন্স বা ট্রাউজারের পিছনের পকেট থেকে সহজেই বেরিয়ে এল কালো মোটা মানিব্যাগ। দরদাম কেনাকাটা মিটিয়ে আবার ব্যাগ চালান হয়ে গেল প্যান্টের পিছনের পকেটে। এ দৃশ্য অচেনা নয়।
দীর্ঘ ক্ষণ একটানা প্যান্টের পিছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখেন অধিকাংশ পুরুষ। কোনও কোনও মেয়েও পশ্চিমী পোশাকের সঙ্গে ব্যাকপকেটে মানিব্যাগ রাখেন। রোজনামচায় এমন ঘটনা আপাত ভাবে শারীরিক কোনও কোনও ক্ষতি করে না। কিন্তু এই অভ্যাস আসলে কোন ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে জানলে আজ থেকেই সাবধান হবেন আপনিও!
দিনের পর দিন এই ভাবে ব্যাগ রাখাকেই কোমরে ব্যথা, হাড়ের সমস্যা ও স্নায়ুরোগের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন চিকিৎসকরা। হাড় ও স্নায়ুর অসুখ নিয়ে দীর্ঘ দিন গবেষণা চালানো দেশ-বিদেশের নানা সংস্থাই এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব হেল্থ সায়েন্সের গবেষকরাও ছেলেদের নানা হাড়ের সমস্যা এবং পায়ে বা কোমরে বাতের বেদনার জন্য এই স্বভাবকেইঅনেকাংশে দায়ী করছেন।
প্যান্টের পিছনে একটি পকেট দেওয়া থাকে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে ওই পকেটে মানিব্যাগ রাখতে হবে। আমরা আমাদের সুবিধার জন্য টাকাপয়সা রাখা ভারী ব্যাগ চালান করে দিই পকেটে। যাঁরা অল্প টাকাপয়সা নিয়ে বেরোন, তাঁদেরও ব্যাঙ্কের কার্ড, খুচরো পয়সা, বাতিল কাগজে ভরে থাকে মানিব্যাগ। এ বার পকেটে সেই ব্যাগ পুরেই আমরা বসে থাকি, হাঁটাচলা করি, ট্রেনে-বাসে চড়ি।
অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘প্যান্টের পিছনের পকেট যেখানে থাকে, ঠিক সেখানেই অবস্থান করে সিরোটিক স্নায়ু। এই দীর্ঘ সময় ওভাবে ব্যাগ রাখায় এবং ওই অবস্থায় চেপে বসে থাকার কারণে সিরোটিক স্নায়ু ও সংশ্লিষ্ট পেশীর উপর প্রবল চাপ পড়ে। ফিমার হাড়ের মাথাতেও চাপ পড়ে। এতেই কোমরে ব্যথা ও হাড়ের সমস্যা দেখা দেয়।’’
কোমরে ব্যথা বা বাতের অন্যতম কারণ পিছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখা। ক্ষতি
অমিতাভবাবুর সুরে সুর মেলাচ্ছেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ সুগত দেবও। ‘‘দীর্ঘ সময় ধরে প্যান্টের পিছনের পকেটে ব্যাগ রেখে দেওয়ায় সিরোটিক নার্ভের নিচে থাকা তন্তুর উপরেও চাপ পড়ে। এতে কোমরে ব্যথা তো হয়ই, কারও কারও ক্ষেত্রে পা অবশ হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে হাড়ের ক্ষয়ও ঘটে।’’
তা হলে উপায়
পকেট টুকটাক জরুরি কাগজ বা কলম রাখার কাজে ব্যবহার করুন। মানিব্যাগ রাখুন কাঁধের ব্যাগে। ক্ষতি
নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
ইতিমধ্যেই এই ব্যথার শিকার হলে গরম সেঁক নিন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।