গর্ভাবস্থায় যে খাবার খাবেন না

গর্ভাবস্থায় যে খাবার খাবেন না

 

গর্ভাবস্থায় নারীদের অনেক কিছুই খেতে ইচ্ছে করে। সাধারণত যে সব খাবার খাওয়ার ইচ্ছে জাগে না এসময় সেগুলোও তারা খেতে চান। প্রিয়জনের ইচ্ছেকে সম্মান দিয়ে স্বামীও কোনো কিছু বিবেচনা না করেই স্ত্রীকে এনে দেন সেসব খাবার। কিন্তু স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় সব খাবার খাওয়া গর্ভবতী নারীদের মোটেই উচিত নয়।

সম্প্রতি মার্কিন স্নায়ু ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর নিকোল আভেনা জানিয়েছেন, কোন কোন খাবার খেলে গর্ভবতী নারী ও তার অনাগত সন্তানের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। ১. যষ্ঠিমধু: রুচি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে অনেক নারীই যষ্ঠিমধু খেয়ে থাকেন। এমনিতেই যষ্ঠিমধুর গুনের শেষ নেই। তবে গর্ভাবস্থায় যষ্ঠিমধু শরীরের জন্য না হলেও অন্য ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। সম্প্রতি চিকিৎসা সম্পর্কিত মার্কিন ম্যাগাজিন American Journal of Epidemiology এ বলা হয়েছে গর্ভাবস্থায় যষ্ঠিমধু খেলে অনাগত সন্তানের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় যেসব নারী যষ্ঠিমধুর রস গ্রহণ করেন তাদের বুদ্ধির মাত্রা অর্থাৎ আইকিউ লেভেল অন্তত ৭ পয়েন্ট কমে যায়।

২. অংকুর জাতীয় খাদ্য: কোনো সন্দেহ নেই গর্ভাবস্থায় সবুজ শাক-সবজি গ্রহণ করা উত্তম। তবে তা হজমযোগ্য কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরী। তবে গর্ভাবস্থায় যারা অংকুর বা কন্দ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করে থাকেন তারা এখন থেকে সেগুলো কাঁচা অবস্থায় না খেলেই ভালো করবেন। যেমন রসুন, মুলা, পিয়াজ ইত্যাদি। যদি এসব খাদ্য খেতেই হয়, তবে তা রান্না করে খাবার পরামর্শ দিয়েছেন ডক্টর নিকোল আভেনা। ৩. খরমুজ: পুষ্টির জন্য বাঙ্গি, তরমুজ বা খরমুজের মত রসাল ফল উত্তম। তবে সেটা গর্ভবতী নারীদের জন্য কতটা উত্তম সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। কেননা, মার্কিন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের মতে এসময় যতটা সম্ভব খরমুজ জাতীয় ফল এড়িয়ে চলা উচিত। খরমুজে এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে যা গর্ভের সন্তানের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। এমনকি গর্ভপাতও ঘটাতে পারে। ৪. ফলের জুস: খাঁটি ফলের রস পান করা স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই ভালো।

অনেকেই তাই সামর্থ্য ও সুযোগ পেলেই ফলের রস পান করেন। পান করান প্রিয় সন্তানকেও। কিন্তু অনাগত সন্তানের কথা বিবেচনায় রেখে গর্ভাবস্থায় নারীরা তা পান না করলেই ভালো করবেন। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর নিকোল আভেনা জানিয়েছেন, দোকান থেকে কিংবা অন্য কারো হাতে তৈরি এসব জুস খাওয়া একদম উচিত নয়। যুক্তি হিসেবে বলেন, পরিচ্ছন্নতার অভাবে এসব পুষ্টিকর পানীয় হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকর। যার কারণে গর্ভবতী নারী নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারেন।

যার প্রভাব পড়তে পারে গর্ভের সন্তানের উপরও। ৫. সালাদ: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অন্যান্য খাবার না খেয়ে অনেকে শুধু সবজি’র সালাদ গ্রহণ করে থাকেন। এতে নানা মারাত্মক রোগ শত হাত দূরে থাকে বলেই এতদিন অনেকে জেনে এসেছেন। বার্ধক্যও আসে দেরিতে। কিন্তু সেটা যদি তাজা হয় তবেই তাকে স্বাস্থ্যকর বলা যেতে পারে। কারণ ডক্টর আভেনা’র মতে, যারা আগে সালাদ বানিয়ে তা সংরক্ষণ করে পরে আহার করেন তারা না জেনেই মারাত্মক ভুল করেন।

কেননা, সেখানে বাসা বাধে এমন সব জীবাণু যা শরীরের জন্য ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। আর গর্ভবর্তী নারীদের জন্য এসব জীবাণু পেটের অসুখসহ নানা জটিলতার জন্ম দিতে পারে। ৬. সোডা: আভানার মতে, কোনো গর্ভবতী নারীর জন্য কফি’র চাইতেও বেশি ক্ষতিকর হতে পারে সোডাযুক্ত পানীয়। মুটিয়ে যাওয়া এড়াতে যারা ক্যালোরি ও চিনিমুক্ত সোডা পান করে থাকেন তারা নাকি আরও বেশি বিপদের মধ্যে পড়েন।

 

গর্ভাবস্থায়