সিওপিডি রোগের প্রধান কারণ ধুমপান

দেশে চল্লিশোর্ধ্ব বয়সের মানুষের ২১ শতাংশই ভুগছে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডিতে) যাদের ৬২ শতাংশই ধূমপায়ী। বর্তমানে এ রোগীর সংখ্যা ৭০ লাখ। এছাড়া এক কোটি ১০ লাখ মানুষ আক্রান্ত অ্যাজমায়। সিওপিডিতে রোগে বছরে মারা যায় ৬৩ হাজার জন। এ রোগসহ শ্বাসকষ্ট জনিত নানা রোগের প্রধান কারণ ধূমপান আর বায়ুদূষণ। এর প্রভাবে দেশে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে সিওপিডি মৃত্যুর কারণের মধ্যে ৪র্থ স্থান দখল করে আছে। যা ২০২০ সালের মধ্যে এ রোগ মৃত্যুর তৃতীয় কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সিওপিডি রোগের জন্য প্রধান কারণ ধূমপানকে দায়ি করে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একমাত্র ধূমপান ত্যাগের মাধ্যমেই ৮০ শতাংশ এ রোগ হ্রাস করা যায়। সিওপিডি বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিবছরের মত বুধবার হতে সারা দেশে বিশ্ব সিওপিডি দিবস পালন করা হবে। একই সাথে সারা বিশ্বে এ দিবস পালিত হবে।

বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, দেশে ফুসফুসের রোগের মধ্যে বিপজ্জনক হচ্ছে সিওপিডি, অ্যাজমা, যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, আইলএলডি ও লাং ক্যান্সার। আর ফুসফুসের রোগের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বায়ুদূষণ, ধূমপান, অতিরিক্ত ঘনবসতি, দারিদ্র ও অসচেতনতা। পৃথিবীতে ৯০ শতাংশ মানুষ দূষিত বাতাসে শ্বাস নেয়। আর এ কারণে প্রতিবছর ৬৫ লাখ মানুষ শ্বাস কষ্টজনিত রোগে মারাযায়। এরমধ্যে দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ায় ৮ লাখ মানুষ মানুষ মারা যায় সিওপিডি রোগে।

অ্যাজমা অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক বশির আহম্মদ জানান, যে হারে শ্বাসকষ্টের রোগী বাড়ছে, তা ভবিষ্যতে ভয়াবহ রূপ নিবে। যা ২০২০ সালে বিশ্বের মধ্যে মৃত্যুর তৃতীয় কারণ হয়ে দাড়াঁবে। ফুসফুসের যেকোন রোগেই শ্বাসকষ্ট হতে পারে। সেটা অ্যাজমা ও সিওপিডি হতে পারে।

তিনি বলেন, কিন্তু এক্ষেত্রে বড় সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসা খরচ। একজন দারিদ্র মানুষের আয় ১০ হাজার টাকা। কিন্তু এ চিকিৎসায় ওষুধ ক্রয়ে খরচ হয়ে যায় মাসে ৭ হাজার টাকা। একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে এ খরচ বহন করা খুবই কষ্টকর।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. রাশেদুল হাসান আমাদের নতুন সময়কে জানান, ফুসফুসের রোগে বায়ুদূষণের প্রভাবই সবচেয়ে বেশি। দূষিত বায়ুর সঙ্গে নানা বিষাক্ত উপাদান ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। এছাড়া বায়ুদূষণের পাশাপাশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশকেও ফুসফুসের বা শ্বাসতন্ত্রের রোগের জন্য দায়ী। এখন শুধু বস্তিতেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নয়, বরং তার চেয়েও বেশি খারাপ অবস্থা আবদ্ধ পরিবেশের ফ্ল্যাট বাড়ি কিংবা কর্মস্থলে। বিশেষ করে যেভাবে দরজা-জানালা বন্ধ রেখে গুমট পরিবেশে আলো-বাতাসের প্রবাহের সুযোগ না রেখে মানুষ বসবাস করছে তা শ্বাসতন্ত্রের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

ধুমপান