পাসপোর্ট কেন করবেন, কিভাবে করবেন

পাসপোর্ট বিদেশ যাওয়ার অপরিহার্য অনুষঙ্গ।বৈধভাবে পৃথিবীর যে কোন দেশে যেতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তির একটি পাসপোর্ট প্রয়োজন। এটি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতিরও বড় দলিল।জাতীয় পরিচয়পত্র বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে অন্যতম জোরালো প্রমাণপত্র।কিন্তু দেশের গন্ডি পেরোলেই এ পরিচয়পত্র প্রায় অচল।সেখানে কেবল পাসপোর্টই ব্যাক্তির হয়ে স্বাক্ষ্য দিতে পারে।প্রমাণ করতে পারে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তাই শুধু বিদেশ যাওয়া নয়, মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতির জন্যও প্রত্যেক নাগরিকেরই পাসপোর্ট থাকা উচিত।

তাছাড়া জীবনে অনেক প্রয়োজনের বিষয় হঠাৎ এসে হাজির হয়। একজন ছাত্র হয়তো আকষ্মিকভাবে বিদেশে একটি বৃত্তি পেয়ে যেতে পারেন, চাকরি জীবনে হঠাৎ আসতে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আবার নিজে বা পরিবাবরের কোনো সদস্যের অসুস্থতায় চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া লাগতে পারে। আগে থেকে পাসপোর্ট না থাকলে এমন জরুরী অবস্থায় দিশেহারা হয়ে যেতে হয়। কারণ এটি এমন জিনিস যা চাইলেই এক/দু’দিনে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই নিজের পাসপোর্টটি করে রাখাই ভালো।

পাসপোর্টের ধরণ:

সাধারণভাবে পাসপোর্ট দুই ধরনের। হাতে লেখা পাসপোর্ট ও মেশিনে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট। তবে বর্তমানে হাতে লেখা পাসপোর্ট ইস্যু করা হচ্ছে না। কেবল পুরনো পাসপোর্টের নবায়ন হচ্ছে। আগামি বছর পর্যন্ত এ ধরনের পাসপোর্ট ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া অনেক দেশের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এখন হাতে লেখা পাসপোর্ট গ্রহণ করেন না। তাই মেশিনে পাঠযোগ্য পাসপোর্টই কার্যকর। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) নীতিমালা অনুযায়ী ২০১২ সালের এপ্রিল মাস থেকে মেশিনে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট-এমআরপি) চালু হয়েছে।

মেশিনে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট

মেশিনে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) দেখতে হাতে লেখা পাসপোর্টর মতোই। তবে কার্যকারিতার দিক থেকে বেশ পার্থক্য আছে। মেশিনে পাঠযোগ্য পাসপোর্টে ছোট্ট ইলেকট্রনিক চিপ থাকে। সে চিপে সংরক্ষণ করা হয় পাসপোর্টধারী ব্যাক্তির বিভিন্ন তথ্য। বিশেষ সফটওয়্যারসম্পন্ন কম্পিউটার এ পড়তে পারে। বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগ যাত্রীদের তথ্য এ পাসপোর্ট থেকে তাদের তথ্য ভান্ডারে নিয়ে সংরক্ষণ করে। কোনো ব্যাক্তিকে সন্দেহভাজন মনে হলে তাদের কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে।

কিভাবে আবেদন করবেন

নির্ধারিত ফরম পূরণের মাধ্যমে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা যায়। কাগজের মুদ্রিত ফরম পূরণ করে আবেদন করতে হয়। অনলাইনেও আবেদন প্রক্রিয়ার একটি অংশ সম্পন্ন করা যায়। তবে সে ক্ষেত্রেও মুদ্রিত ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ও আঞ্চলিক কার্যালয়ে এ ফরম পাওয়া যায়। এছাড়া পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকেও এ ফরম ডাউনলোড করা সম্ভব। এখানে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে পারেন

অনলাইনে ফরম পূরণের জন্য প্রথমেই যান পাসপোর্ট অফিসের এই সাইটে – http://www.passport.gov.bd/ । নির্দেশনা ভালোভাবে দেখুন, সতর্কতার সাথে একাউন্ট খুলুন । আপনার নাম ও ব্যক্তিগত তথ্যাদি ( যেমন নামের বানান, প্যারেন্টস এর নাম )  যেন শিক্ষাগত সার্টিফিকেটের মতই হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

আবেদনপত্রে যা যা আছে:

চার পৃষ্ঠার এ আবেদনপত্রে আবেদনকারীকে নাম, বাবার নাম, মাতার নাম, তাদের পেশা, জাতীয়তা, জন্মস্থান, জন্ম তারিখ, জন্ম সনদপত্র নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, যোগাযোগের তথ্য সরবরাহ করতে হবে। এসব তথ্য সঠিক এবং নির্ভূল ভাবে পূরণ করে আবেদনকারীকে নির্দিষ্ট জায়গায় স্বাক্ষর ও তারিখ লিখতে হবে। এ ছাড়া আবেদনকারীকে একটি ৫৫ × ৪৫ মিলিমিটার আকারের রঙিন ছবি (পাসপোর্ট সাইজ ছবি) ফরমে আঠা দিয়ে লাগানোর পর সত্যায়িত করতে হবে। ছবিটি এমনভাবে সত্যায়িত করতে হবে যেন সত্যায়নকারীর স্বাক্ষর এবং সীলমোহর এর অর্ধেক অংশ ছবির উপর আর বাকি অর্ধেক অংশ ফরমের কাগজে থাকে। এক্ষেত্রে, দুটি আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে।

যারা সত্যায়িত করতে পারবেন:

আবেদন ফরমের সত্যায়ন করতে পারবেন- ১. সাংসদ ২. সিটি করপোরেশনের মেয়র, ডেপুটি মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ৩. গেজেটেড কর্মকর্তা ৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ৫. উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ৬. পৌরসভার মেয়র ৭. বেসরকারি কলেজের শিক্ষক ৮. বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ৯. দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ১০. পৌর কাউন্সিলর ১১. রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের নতুন জাতীয় বেতন স্কেলের সপ্তম বা তদূর্ধ্ব গ্রেডের কর্মকর্তারা।

পাসপোর্টের ফি :
পাসপোর্টের জন্য দুই ধরনের ফি নির্ধারিত হয়েছে। সাধারণ পাসপোর্টের জন্য তিন হাজার টাকা এবং জরুরি পাসপোর্টের জন্য ছয় হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে। টাকা জমা দিতে হবে আগের মতোই সোনালী ব্যাংকের নির্ধারিত শাখায়। (টাকা জমা দেওয়ার সময় আরো VAT হিসেবে আরও ১০ টাকা জমা দিতে হবে)। টাকা জমা দেয়ার পর আপনাকে দেয়া রশিদের অংশে একটি নম্বর লিখে দিবে। এই নম্বরটি আপনার পাসপোর্ট ফরমের ক্রমিক নং ২৫ এ নিদিষ্ট শূন্যস্থানে বসাতে হবে। এরপর রশিদটি আপনার পাসপোর্ট ফরমের ১ম পাতার উপরের অংশে ডানদিকে আঠা দিয়ে সংযুক্ত করতে হবে।

সোনালী ব্যাংকের শাখার তালিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন

যে সকল কাগজপত্র লাগবে:

সঠিকভাবে পূরণ করা আবেদন ফরমের সঙ্গে প্রার্থীকে আবেদনকারীর একটি রঙিন ছবি আঠা দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে লাগিয়ে দিতে হবে, সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম সনদপত্রের ফটোকপি। অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৫ বছরের কম) আবেদনকারীর ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বাবা ও মায়ের একটি করে রঙিন ছবিও লাগবে।

আবেদন পত্র জমা দেওয়ার আগে:

আবেদন পত্র জমা দেওয়ার আগেই তা নির্দিষ্ট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা এটি ভেরিফিকেশন বা যাচাই করবেন। আবেদপত্রটি ভেরিফিকেশন করানোর আগে এর সঙ্গে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রশিদটি আঠা দিয়ে আবেদন পত্রের সঙ্গে যোগ করে দিতে হবে। এ ছাড়া আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ছবিটিও যথাযথ কর্মকর্তাকে দিয়ে সত্যায়িত করে নিতে হবে।ছবিটি এমনভাবে সত্যায়িত করতে হবে যেন সত্যায়নকারীর স্বাক্ষর এবং সীলমোহর এর অর্ধেক অংশ ছবির উপর আর বাকি অর্ধেক অংশ ফরমের কাগজে থাকে। পাশাপাশি জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপিটিও সত্যায়িত হতে হবে। যদি কারও জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকে তাহলে পাসপোর্ট ফরমের তৃতীয় পৃষ্ঠায় নির্দিষ্ট স্থানে বসবাসরত এলাকার জনপ্রতিধি দ্বারা প্রত্যয়ন করিয়ে নিতে হবে। এমআরপির আবেদন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাচ্ছে দেশের ১০টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। প্রতিটি আঞ্চলিক অফিসের অধীনে রয়েছে কয়েকটি জেলা।

আঞ্চলিক অফিস-  ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর, যশোর ও গোপালগঞ্জ।
ঢাকা: ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলা।
ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জ জেলা।
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলা।
কুমিল্লা: কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা।
সিলেট:  সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলা।
রাজশাহী: রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলা।
বরিশাল: বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলা।
রংপুর: রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলা।
যশোর: যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, নড়াইল, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলা।

আঞ্চলিক অফিসগুলোর ঠিকানা জানতে এখানে ক্লিক করুন

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার নিয়ম:

আবেদন পত্রটির ভেরিফিকেশন করে দায়িত্বরত কর্মকর্তা আবেদনপত্র যাচাই করে সিলসহ স্বাক্ষর করবেন। এরপর আবেদনপত্রটি নির্দিষ্ট স্থানে জমা দিতে হবে। পাসপোর্ট অফিসেই খোলা আছে বেশ কয়েকটি বুথ। এসব বুথেই জমা দিতে হবে। আবেদনপত্রটি জমা দেবার সময় পাসপোর্ট অফিসের দায়িত্বরত ব্যাক্তি আপনার তথ্যগুলো কম্পিউটারে এন্ট্রি করে রাখবেন। এরপর তিনি আপনাকে একটি টোকেন দেবেন। এরপর সে টোকেনসহ আবেদনপত্রটি নিয়ে ছবি তোলার জন্য আরেকজন কর্মকর্তার কাছে যেতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য যেভাবে ছবি তোলা হয়েছিলো, এখানেও একইভাবে নির্দিষ্ট মাপের ছবি তোলা হবে। এছাড়াও দুই হাতের আঙ্গুলের ছাপও দিতে হবে ইলেকট্রনিক মেশিনে । এরপর নেয়া হবে ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর। তবে, ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর আবেদন পত্রের স্বাক্ষরের সঙ্গে যেনো মিল থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই প্রক্রিয়া শেষে কর্তৃপক্ষ পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য একটি আলাদা ডকুমেন্ট দেবে এবং আবেদনপত্রটি রেখে দিয়ে আপনাকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার তারিখও জানিয়ে দেবেন।আবেদন ফরম জমা দেওয়ার সময় আবেদনকারীকে অবশ্যই নিজে উপস্থিত থাকতে হবে। ফরম জমা দেওয়ার সময় আবেদনকারীর আঙুলের ছাপ রাখা হবে এবং মুখের ছবি তোলা হবে।

পুলিশ প্রতিবেদন:

কয়েকটি ব্যাতিক্রম ছাড়া বাকী সব ক্ষেত্রে পাসপোর্টের জন্য পুলিশ প্রতিবেদন লাগে। আবেদনপত্র জমা হওয়ার পর পাসপোর্ট অধিদপ্তর আবেদন বা ফরমের একটি কপি পুলিশ বিভাগের কাছে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে এটি সংশ্লিষ্ট থানায় যায়। সেখান থেকে একজন কর্মকর্তা আবেদনকারীর ঠিকানায় সশরীরে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। সাধারণভাবে কয়েকটি জিনিস দেখা হয়। এর মধ্যে রয়েছে-আবেদনকারীর ঠিকানা সঠিক কি-না,  এটি তার বর্তমান ঠিকানা হলে তিনি সেখানে অবস্থান করেন কি-না, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অন্যান্য তথ্য সঠিক কি-না। এ ক্ষেত্রে পরিদর্শনে আসা পুলিশ কর্মকর্তা আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম সনদ, পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের সনদপত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র এবং পাসপোর্ট সাইজের ছবি চাইতে পারে।এছাড়া থানায় রক্ষিত তথ্যভান্ডারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় আবেদনকারী কোনো অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত কি-না। তবে এসব কোনো বড় ইস্যু হয় না। পুলিশ কর্মকর্তা কনভিন্সড হলে প্রতিবেদন ইতিবাচক না হওয়ার কথা নয়। মনে রাখবেন, এ প্রতিবেদন যদি ইতিবাচক না হয় তাহলে পাসপোর্ট অধিদপ্তর আপনার পাসপোর্ট ইস্যু করবে না।

কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদন প্রয়োজন নাই-
১.  জাতীয় সংসদের সদস্য,
২.  তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য,
৩.  সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর,
৪.  উপজেল পরিষদ চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান,
৫.  ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান,
৬.  সকল পর্যয়ে সামরিক-বেসামরিক সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারী,
৭.  সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান/সংস্থার প্রত্যানয় সাপেক্ষে আধাসরকারী  ও রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থায় কর্মরত স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারী,
৮.  অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং তাদের স্ত্রী
৯.  সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারী এবং তাদের  স্ত্রী  এবং ১৫ (পনের) বছরের কম বয়সের সন্তান।
১০. ৫ /১০ বৎসর অতিক্রান্ত কিন্তু ১২ বছরের অধিক নহে এমন বৈধ সমর্পনকৃত (সারন্ডারড) পাসর্পোটের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদনের প্রয়োজন নেই|

বি:দ্র: স্ত্রী / ১৫ বৎসরের নিচের বয়সের সন্তানদের ক্ষেত্রে- কর্মকর্তা/কর্মচারীরর সন্তান এবং তার উপর নির্ভরশীল মর্মে প্রত্যয়ন  দিতে হবে।

পাসপোর্ট সংগ্রহ:

কর্তৃপক্ষের দেওয়া তারিখে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা যাবে। তবে, এই সময়ের মধ্যে অবশ্যই পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষ হতে হবে। পাসপোর্ট দেবার আগে ডিবি পুলিশ বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানায় ভেরিফিকেশন করে। আর পুলিশের রিপোর্ট দেওয়ার পরই পাসপোর্ট পাওয়া যায়।

এমআরপি পাসপোর্টের বৈশিষ্ট্য:
মেশিনে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট বিভিন্ন দেশের উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাসপোর্টের আদলে তৈরি। এ পাসপোর্টে উন্নত দেশগুলোর পাসপোর্টের মতোই বিশেষ কাপড়ের কভার ব্যবহার করা হয়েছে। হাতে লেখা পাসপোটের মতোই শুরু থেকে ৫ থেকে পঞ্চম পৃষ্ঠা পর্যন্ত ছবিসহ প্রয়োজনীয় এক পাতায় আছে। আছে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরও। পুরোনো পাসপোর্টে বিভিন্ন দেশের ভিসা লাগানো থাকলে সেগুলো এই পাসপোর্টে থাকছে না। এ পাসপোর্টে এক পাতার এসব তথ্যের পাশাপাশি একপাশে আছে বিশেষ সাংকেতিক নম্বর, যাকে ‘যন্ত্রে পাঠযোগ্য এলাকা’ বলা হয়। এই নম্বরের মধ্যেই থাকছে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য, যা কম্পিউটার পড়তে পারে। জানা গেছে, পুরো প্রক্রিয়াটিই চলছে আন্তর্জাতিক মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের অনুমোদন সংস্থা আইসিএভি-এর নির্দেশনা অনুসারে। এমআরপির তথ্যগুলো যখনই কম্পিউটার এই নম্বরের মধ্যে পড়ে, তখনই মনিটরে সেসব তথ্য দেখা যায়। এই পৃষ্ঠায় রয়েছে জাতীয় পশু বাঘ ও জাতীয় ফুল শাপলার জলছাপ। আরও আছে নানা ধরনের নিরাপত্তা দাগ। পাতার বিভিন্ন স্থানে বাঘের ছবির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের নাম ও শহীদ মিনারের ছবি। এসব জলছাপ বিশেষ আলো দিয়ে দেখলে লেজার রশ্মির মতো দেখায়। এমআরপির শেষ পাতায় আছে সংসদ ভবনের ছবি ও পরিচিতি।

পাসপোর্টের মেয়াদ

সাধারণভাবে পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর। এরপর এটি বাতিল হয়ে যাবে। পাসপোর্টধারী ব্যাক্তিকে নতুন পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। তাছাড়া বিদ্যমান পাসপোর্টের মেয়াদ ৫ বছর পার হওয়ার আগেই তা নবায়ন করতে হবে। নবায়ন করা না হলে ৫ বছর পর এ পাসপোর্ট তার বৈধতা হারাবে।

কিছু লক্ষণীয় বিষয়:
•    যে কোন সমস্যায় দায়িত্বরত আনসারদের সহায়তা নিন।
•    যে কোন সময় ব্যবহারের জন্য স্ট্যাপলার, পিন, আঠা, কলম ইত্যাদি সঙ্গে রাখবেন।
•    পুরো ঢাকা নগরীকে তিনটি অধিক্ষেত্রে বিভক্ত করা হয়েছে- উত্তরা, আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ী অধিক্ষেত্র। টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে যার ঠিকানা যে অধিক্ষেত্রের অন্তর্গত, তাকে সেই অধিক্ষেত্রের পাসপোর্ট অফিসে টাকা জমা দিতে হবে।
•     ছবি তোলার দিন পরিচ্ছন্ন কাপড় পরে যাবেন।

* পাসপোর্টে তথ্য ভুল হলে তা সংশোধন, পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে করণীয় ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চোখ রাখুন অর্থসূচকে।