ডা. রাজিবুল ইসলামের পরামর্শ : পুড়ে গেলে যা করবেন

পুড়ে গেলে যা করবেন

সাধারণ পোড়ায় করণীয়

সাধারণত ত্বকের ওপরের স্তর বা এপিডার্মিস পুড়ে গেলে তাকে মাইনর বা ফার্স্ট ডিগ্রি বার্ন বলে। এপিডার্মিসের নিচের স্তর ডার্মিসের অংশবিশেষ পুড়লে একে সেকেন্ড ডিগ্রি বার্ন বলে। এ রকম পোড়া তিন ইঞ্চির বেশি না হলে তাকে মাইনর বার্নের শ্রেণিভুক্ত হিসেবে ধরে নেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ত্বকের ওপরের ভাগ লাল হয়, ফুলে যায় কিংবা ফোসকা পড়ে। তীব্র জ্বালা বা ব্যথাও হয়। এ সময় করণীয় হলো—

❏ প্রথমেই পোড়া স্থানে ১০-১৫ মিনিট অথবা ব্যথা থাকলে আরো বেশি সময় ধরে ঠাণ্ডা পানি ঢালুন।

❏ আংটি অথবা শরীরের সঙ্গে টাইট হয়ে লেগে রয়েছে, এমন দ্রব্য খুলে ফেলুন।

❏ শরীরে ফোসকা পড়ে গেলে গলাবেন না।

❏ আক্রান্ত স্থানে অ্যালোভেরা জেল, ময়েশ্চারাইজার লাগানো যাবে। সরাসরি কোনো ব্যথানাশক, বরফ, তুলা, ডিম, টুথপেস্ট লাগাবেন না। এতে বরং সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।

❏ ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল ও টিটেনাসের প্রতিষেধক ইনজেকশন দেওয়া যেতে পারে।

❏ প্রাথমিক চিকিৎসার পর যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিন। নিজে কোনো মলম বা ক্রিম লাগাবেন না।

বেশি পুড়ে গেলে

ত্বকের নিচে মাংসপেশি, স্নায়ু, রক্তনালি পুড়লে বা একসঙ্গে বেশি জায়গা পুড়ে গেলে (তিন ইঞ্চির বেশি) সেটাকে মেজর বার্ন বলে ধরে নিতে হবে। সাধারণত ইলেকট্রিক বার্ন বা বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে পুড়লে, সরাসরি আগুনের শিখায় পুড়লে, বোমা বিস্ফোরণ হলে এ রকম হয়। এ ক্ষেত্রে করণীয় হলো—

❏ আক্রান্ত ব্যক্তিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সরিয়ে নিতে হবে।

❏ মুখে বা শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কোনো অঙ্গ পুড়ে গেলে বেশি সতর্ক হোন।

❏ শ্বাসকষ্ট হলে অক্সিজেন দিতে হবে। হাতের কাছে অক্সিজেন না পেলে মুখে মুখে শ্বাস দিতে হবে। প্রয়োজনে সিপিআর দিতে হতে পারে।

❏ আক্রান্ত স্থান পরিষ্কার শুকনো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন। হালকা ব্যান্ডেজও করতে পারেন।

❏ রোগী সচেতন থাকলে বারবার স্যালাইন পানি, ডাবের বা সাধারণ পানি বেশি খেতে দিন।

❏ আক্রান্ত ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিন। এজাতীয় পোড়ায় সাধারণত পোড়া স্থানের অপারেশন বা স্কিন গ্রাফট দরকার হয়। এ জন্য প্রথম থেকেই পোড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।

গ্রন্থনা : ডা. রাজিবুল ইসলাম

https://www.youtube.com/watch?v=r0t64gzuqtg&t=4s

 

ডা. রাজিবুল ইসলামপুড়ে গেলে