রক্তের ক্যানসারের কথা জেনে আর পাঁচ জনের মতো তাঁরাও চিকিৎসকের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘আর ক’দিন?’
কয়েক বছর আগে সেই রক্তের ক্যানসারে আক্রান্তদের ভীরু মনগুলিই এখন জোর সঞ্চয় করেছে। ক্যানসারকে হারিয়ে ‘উজ্জীবন ২০১৮’-এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান গাইলেন তাঁরাই। ক্যানসার সারার পরে যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফেরা যায় স্বাভাবিক জীবনে, তা নিয়ে সচেতনতায় রবিবার এক অনুষ্ঠান হয়ে গেল রোটারি সদনে। দক্ষিণ কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন দশ ক্যানসার-জয়ী।
সেই অনুষ্ঠানেই জানা গেল, ভয়ের কারণে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনে প্রথমে রাজি হননি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ছাত্র কিংশুক দাস। সেই কিংশুকই এখন বলছেন, ‘‘মনের জোর হারাবেন না।’’ সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সমীর বর্ধন জানান, পরিচিতেরা অনেকেই বলেছিলেন, তাঁর জীবন আগের মতো থাকবে না। কিন্তু ঠিক পদ্ধতিতে চিকিৎসায় স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে তাঁর জীবন। মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের বাসিন্দা সন্ধ্যা পড়ুয়াও একই অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘‘আমি তো সব কাজই করছি। মহিলা সমিতি, খেলাধূলা — কিছুই বাদ যাচ্ছে না!’’ তাঁদের দলে রয়েছেন সুব্রতা পাল, রাজনারায়ণ রায়, দীপক পোদ্দার, জগদীশ সাহা, বাবলি চক্রবর্তী এবং শুভাশিস পালও। আর এক ক্যানসার-জয়ী বিমলেন্দু দাস বলেন, ‘‘ক্যানসার মানে মৃত্যু, এমনটা ভাবার কারণ নেই। জন্ম মানেই তো মৃত্যু, এটা ভাবুন!’’ কথাটা শুনে যেন নতুন প্রাণ পেল প্রেক্ষাগৃহ। উদ্যোক্তাদের তরফে হেমাটোলজিস্ট সৌম্য ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রক্তের ক্যানসারের কথা জেনে ভেঙে পড়বেন না। ঠিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করালে অনেক ক্ষেত্রেই সুফল মেলে।’’