শিশুদের খুব সাধারণ সমস্যা দাঁতব্যথা। বিশেষ করে দুধদাঁতের শিশুরা দাঁতের যথাযথ যত্নের অভাবে এই সমস্যায় ভোগে। শিশুর দাঁতব্যথা এর কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানাচ্ছেন ডা. সুরাইয়া আহমেদ
শিশুর দাঁত ব্যথার কারণ
দাঁত ক্ষয়রোগ বা ক্যারিজ শিশুর দাঁতব্যথার মূল কারণ। দাঁতের গায়ে লেগে থাকা খাদ্যকণা বা প্ল্যাক ও ব্যাকটেরিয়া জমে দাঁতেব্যথা হয়। স্ট্রেপ্টোকক্কাস মিউটেন ও ল্যাকটোব্যাসিলাস এই দুই ধরনের ব্যাকটেরিয়া সাধারণত ডেন্টাল ক্যারিজের জন্য দায়ী। শিশুর মুখে যখন প্রথম দাঁত ওঠে, অর্থাৎ ছয় মাস বয়সেই দন্তক্ষয় রোগ হয়। ৪২ শতাংশ শিশুর দুধদাঁতে দন্তক্ষয় রোগ হয়ে থাকে। শিশুরা সাধারণত মিষ্টি খাবার বেশি খায়। এটিই দাঁত ক্ষয়ের কারণ। এই খাবারগুলো বেশি সময় ধরে মুখে থাকলে মুখের ব্যাকটেরিয়া এ খাবারগুলো থেকে অ্যাসিড তৈরি করে, যা ধীরে ধীরে দাঁত ক্ষয় করে ফেলে।
প্রতিরোধ
প্রথম দাঁত ওঠার পর থেকেই সঠিক উপায়ে শিশুদের দাঁতের যত্ন নিতে হবে। ১ বছর পর্যন্ত নরম সুতি কাপড় ভিজিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার শিশুর দাঁত ও মাড়ি পরিষ্কার করে দিতে হবে। দাঁত ওঠার সময় ফ্লুরাইড থেরাপি দিতে দাঁত ক্ষয় অনেকটাই ঠেকানো সম্ভব। শিশুদের যথাসম্ভব কম চিনির উচ্চ পুষ্টিকর জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। বিশেষ করে যতদিন শিশু মায়ের বুকের দুধ খাবে ততদিন শিশুরে খাবারে চিনি ব্যবহার করা যাবে না। একটু বড় শিশুদের চকলেট বা স্ন্যাকস জাতীয় খাবার যথাসম্ভব কম দিতে হবে। দিলেও খাবার পর সঙ্গে সঙ্গে দাঁত ব্রাশ করাতে হবে। রাতে দাঁত ব্রাশের পর মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে হবে।
শিশুর দাঁত ব্যথার চিকিৎসা
দাঁতব্যথা হলে প্রথমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসক দাঁত ক্ষয়ের অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পরামর্শ দেবেন। দাঁতে গর্ত বেশি হলে প্রয়োজন মতো স্টেইনলেস স্টিলের ক্যাপ লাগাতে হতে পারে। তবে অবস্থা গুরুতর হলে দাঁত তোলা ছাড়া অন্য উপায় থাকে না। তা না হলে দাঁতের গোড়ায় ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দাঁতব্যথা না হলেও প্রতি ৬ মাসে একবার ডেন্টাল চেকআপ করাতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসায় ঘরোয়াভাবে দাঁতব্যথা কমাতে একগ্লাস গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে কিছুক্ষণ পরপর কুলি করালে শিশু আরাম পাবে।
লেখক : চিকিৎসক, ঢাকা ডেন্টাল হাসপাতাল