স্মার্টফোন বাচ্চাদের যে ক্ষতি করে

স্মার্টফোন  বাচ্চাদের  যে ক্ষতি করে

সকাল থেকেই বাচ্চাটি বড্ড ঘ্যানঘ্যান করছিল। মায়ের হাতে অনেক কাজ, তাই বাধ্য হয়ে নিজের স্মার্টফোনটা তিনি ধরিয়ে দিলেন তাঁর ছোট্ট মেয়েটার হাতে। হাতে ফোন পাওয়া মাত্রই দুষ্টু মেয়ে চুপ, আর মা-ও শান্তিতে নিজের কাজ সারতে থাকেন।

 

এরকম ঘটনা আমাদের আশেপাশে প্রায়ই ঘটতে দেখা যায়। কিন্তু জানেন কি এভাবে বাচ্চাদের হাতে স্মার্টফোন দিয়ে তার কতটা ক্ষতি করছেন আপনি?

কয়েকদিন আগেই বিদেশে প্রকাশিত একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী, যে সব বাচ্চারা দিনের মধ্যে প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা স্মার্টফোনের সঙ্গে কাটায় তাদের বুদ্ধির বিকাশ অন্যান্য বাচ্চাদের তুলনায় অনেক কম হয় বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী পৃথিবীর যে সব দেশে শিশুরা স্মার্টফোন ব্যবহার করে তাদের মধ্যে  দক্ষিণ এশিয়াতে শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহার করার হার সবচেয়ে বেশি। চিনের মতো উন্নত প্রযুক্তির দেশেও যেখানে শিশুরা গড়ে মাত্র ২ ঘণ্টা স্মার্টফোনের সঙ্গে কাটায়, সেখানে দক্ষিণ এশিয়াতে নাকি একটি শিশু গড়ে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করে।

সমীক্ষা করে দেখা গেছে, এখনকার সমাজে প্রায় ৯০ ভাগ মায়েরাই কাজের জগতে ব্যস্ত থাকেন। তাই বাচ্চাকে দেওয়ার মতো সময় তাঁদের হাতে প্রায় থাকে না বললেই চলে। আর ঠিক সেই কারণেই বাচ্চাকে সহজে ভোলাতে তার হাতে স্মার্টফোন ধরিয়ে দেন বাবা-মায়েরা। অনেকে তো আবার বাড়ির বাচ্চার জন্য আলাদা করে একটা ট্যাব বা স্মার্টফোন কিনে রাখেন। যাতে খাওয়ার সময় ওই ডিভাইসে কার্টুন বা গানের ভিডিও দেখতে দেখতে শিশুটি অনায়াসে খেয়ে নেয়। কিন্ত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের এভাবে ভুলিয়ে রাখতে গিয়ে অভিভাবকরাই তাদের বিরাট ক্ষতি করছেন। প্রতিদিন স্মার্টফোনটা ব্যবহার করলে শিশুদের কল্পনা শক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। এমনকী অনেক শিশুর মধ্যে বেশি খাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। যা থেকে অল্প বয়েসেই তাদের মধ্যে দেখা যায় স্থূলতার সমস্যা। এছাড়া দিনের মধ্যে ৫-৬ ঘণ্টা ফোন বা ট্যাবের সামনে কাটালে শিশুদের দৃষ্টিশক্তির উপরও তার প্রভাব পড়ে। ফলে অল্প বয়েসেই তাদের চোখের সমস্যা শুরু হয়।

 

তাহলে উপায়? মা-বাবাদেরই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে শিশুর মন বই পড়া, ছবি আঁকা, খেলাধুলার দিকে ঘোরানোর। এতে শিশুর স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। আর মা-বাবাও নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন।

টিপসফিটনেসশিশুস্বাস্থ্য