আল কুরআনের ভাষা ও পার্শিয়ান গোলকধাঁধা

হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর ওফাতের প্রায় চার প্রজন্ম পরে ইংরেজি অষ্টম থেকে নবম শতকে আল-কুরআনের প্রথম ফারসি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। অনুবাদের ক্ষেত্রে কুরআনের ভাষাকে প্রচলিত আদর্শ আরবি থেকে আলাদা করে উপস্থাপন করা হয়। আমাদেরকে বুঝানো হয় কোরআনের ভাষা আরবি হলেও এটা আলাদা। প্রচলিত আরবি ভাষা থেকে এটি ভিন্ন। মূলত পার্শিয়ান স্কলাররা আরবি ভাষার সাথে প্রায় সমুচ্চারিত ফারসি ভাষার মিশ্রণ ঘটিয়ে এই কাজটি করতে সক্ষম হয়। যার মাধ্যমে আল কোরআনের প্রকৃত বার্তাকে তাদের ধর্ম মতে বিকৃত করা হয়। হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনছেন, বর্তমানে আল কোরআনের যে অর্থ প্রচলিত আছে তা আরবদের প্রচলিত আরবি ভাষা থেকে ভিন্ন। আরবদের দৈনন্দিন জীবনে কোরআনের যে শব্দগুলো ব্যবহার করে তা কুরআনের অর্থ হতে আলাদা। যেমন আমরা কোরানিক শব্দ জান্নাত অর্থ বাগান বুঝলেও আরবরা বুঝে কবরস্থান (যেখান থেকে নতুন জীবন তথা পরবর্তী জীবন শুরু হয়), উদাহরণ: জান্নাতুল বাকি। আমরা কিয়ামত অর্থ ধংসযজ্ঞ বুঝলেও আরবরা বুঝে মুল্যায়ন ( evaluation, assessment, judgement ), উদাহরণ قيمة الفاءدة অর্থ মুনাফার পরিমাণ (interest amount)। যার ফলে আল-কোরআন আরবদের মাতৃভাষায় রচিত হলেও তারা এর অর্থ বুঝতে পারে না।
ইসলাম ধর্মে পার্সিয়ানদের প্রভাব সর্বজনবিদিত। আব্বাসীয় খিলাফতের সময় পার্শিয়ানরাই মূলত অনুবাদকৃত কোরানের আদলে বর্তমান ইসলাম ধর্মকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়। আব্বাসীয়রা তাদের রচিত কোরআনের অনুবাদ ও হাদিস গ্রন্থের উপর ভিত্তি করে সমগ্র আরব বিশ্বে শরিয়া আইন চালু করে আরবদের মানতে বাধ্য করে, যা আজও বিদ্যমান। যার ফলে আরবদের কোরআনের উপর নির্ভরশীলতা কমে যায়। যার প্রভাবে আরবরাও আল কোরানের ভাষা কে তাদের ভাষা থেকে আলাদা মনে করে, এবং পার্শিয়ানদের অনুবাদ আনুসরন করে। ফলশ্রুতিতে কুরানে ব্যবহৃত শব্দগুলো তাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাবহার করলেও তারা কুরানের ক্ষেত্রে ভিন্ন অর্থ করে।
আল কুরআনের পরে ইসলামী শরীয়তের মূল ভিত্তি হিসাবে যে হাদীস গ্রন্থ গুলোকে ধরা হয় যেমন আল মুসান্নাফ, বুখারী, মুসলিম তিরমিজি,বাইহাকী ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থগুলোর রচয়িতাগন পার্শিয়ান। আল কুরআনের ভাষা আরবী হওয়াতে অনারব মুসলমানদের নিকট আরবি ভাষা শিক্ষার একটি প্রবণতা রয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ সহ অনারব মুসলিমদেরকে যে পদ্ধতিতে আরবি ভাষা শিক্ষা দেওয়া হয় তার কারিকুলাম ও গ্রামার পার্সিয়ানদের রচিত, এটা মূলত আরবি ভাষা শিক্ষা দেওয়া নয়, পার্শিয়ানদের রচিত কুরআনের অনুবাদ যাতে বুঝতে পারে সেই ব্যবস্থা। ইসলামী অনেক পরিভাষা যেমন নামাজ, রোজা, বেহেস্ত, দোজখ, অজু, শবে বরাত, ইত্যাদি শব্দগুলো ফারসি যা কোরআন এবং হাদীসে নেই। আবার কিছু শব্দ আছে যেগুলো আরবি মনে হলেও এগুলোর যে অর্থ প্রচলিত আছে তা মূলত ফারসি। অর্থাৎ এই আরবি শব্দগুলোর অর্থ প্রায় সমুচ্চারিত ফারসি শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে। যেমন গোসল, কিয়াম, গায়েব, ছফর, ইজ্জত, হাছান, গোলাম, হারামাইন ইত্যাদি। আমি এখানে শুধুমাত্র আপনাদের পরিচিত কিছু শব্দ উল্লেখ করলাম, আল কোরআনের অনুবাদের ক্ষেত্রে পার্শিয়ানদের দৌরাত্ম্য দেখে আপনি শিহরিত হয়ে উঠবেন।
পার্শিয়ানদের করা আল কুরআনের অনুবাদ কে প্রতিষ্ঠা করতে তারা হাদীসের নামে বিভিন্ন মিথ্যা বানোয়াট কল্প কাহিনী ছড়িয়ে দেয়। আমরা এখন এই সকল হাদিসের বিশুদ্ধতা যাচাইয়ে গলদঘর্ম। এক মুহাদ্দিস কোন হাদীসকে হাসান বলছেন তো অন্যজন বলছেন জয়ীফ। এসকল হাদীসের ভিত্তিতে আবার তৈরি হচ্ছে অসংখ্য তাফসির, যেখানে তাফসীরকারগণ তাদের নিজস্ব মতামতকে কোরআনের ব্যাখ্যা বলছেন। আমরাও আমাদের সুবিধামত বিভিন্ন তাফসীর কে দলিল হিসেবে ব্যবহার করে শতধা বিভক্ত হচ্ছি।
আল কুরআনের বিভিন্ন অনুবাদগ্রন্থ যেমন তাফসীরে তাবারি, ইবনে কাসির, জালালাইন, মাআরেফুল কুরান, তাফহীমুল কুরান, ইত্যাদি গ্রন্থের মূল অনুবাদ প্রায় একই। কিন্তু তাফসীর বা ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে অনুবাদকগন তাদের তরিকার সমর্থনকারী হাদীসগুলোকে একত্র করে তাদের নিজস্ব মতামত বা ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। অর্থাৎ অনুবাদকগণ পারসিয়ানদের দেওয়া অর্থকে সঠিক ধরে নিয়ে সেই অর্থের স্বপক্ষে বিভিন্ন হাদিস সংগ্রহ করে তাদের নিজস্ব মতামত তুলে ধরেছেন। এখন আলেমগন বলছেন আল কোরআন বোঝা অত সহজ নয়। এই এই তাফসীর পড়লে কিছুটা বুঝতে পারবেন। অথচ আল্লাহ বলছেন,
وَ لَقَدۡ یَسَّرۡنَا الۡقُرۡاٰنَ لِلذِّکۡرِ فَہَلۡ مِنۡ مُّدَّکِرٍ
আর আমি তো কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য। অতএব কোন উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি? (৫৪: ১৭,২২,৩২,৪০)
আল কুরআন বুঝা যদি কঠিন হয় তাহলে প্রশ্ন আসে আল-কোরআন কিভাবে সার্বজনীন? আল্লাহ কেন এত দুর্বোধ্য করে কোরআন নাযিল করেছেন, যা সকল মানুষের জন্য হেদায়াত কিন্তু সকল মানুষ এর অর্থ বা নির্দেশনা বুঝতে পারেনা? কি আশ্চর্য! যিনি ভাষা সৃষ্টি করেছেন তার কথাই আমরা বুঝতে পারি না! আল্লাহর কি শব্দ ভান্ডার কম? না তিনি কিছু ভুলে গেছেন ? ( নাউজুবিল্লাহ)। আল্লাহ বলেন
مَّا نَفِدَتۡ کَلِمٰتُ اللّٰہِ
words of Allah never run out (31:27)
আল্লাহর কথা কখনওই শেষ হবে না (৩১:২৭)
وَ مَا کَانَ رَبُّکَ نَسِیًّا
and your lord never forget (19:64)
আর আপনার প্রভু কখনোই ভুলে যান না (১৯:৬৪)
অধিকাংশ মানুষ কোরআনের সরল (পড়ুন গড়ল) অনুবাদ পড়ে এর নির্দেশনা বুঝতে পারেনা। অনুবাদের ব্যাখ্যা বা তাফসীর পড়া লাগে। বুঝবে কিভাবে? সরল অনুবাদের নামে আল-কুরআনের প্রকৃত অর্থ কে পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। আপনি যখন গড়ল বা অযৌক্তিক কথা শুনবেন তখন স্বাভাবিকভাবে আপনি চিন্তা করবেন আল কোরআনে তো কোনো ভুল নাই তাহলে আমার বুঝতে ভুল হচ্ছে। আর আপনার ভুলটা শুধরানোর জন্য এর ব্যাখ্যা কি তা জানতে বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থ ঘেটেও কোন কুল কিনারা করতে পারবেন না। শেষ পর্যন্ত কোন একজনের মতকে মেনে নিতে হবে। অথবা বুঝানো হবে এগুলো মুতাশাবিহাত ( ফারসি অর্থ রূপক) আয়াতের অন্তর্ভুক্ত, যার অর্থ বুঝতে গেলে আপনি গোমরাহ হয়ে যাবেন! সুতরাং এগুলোর অর্থ না বুঝাই ভালো!! কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি দেখুন কুল কিনারা করতে পারেন কিনা?
১৮ নং সুরা আল কাহাফ আয়াত ২৮
وَ لَا تُطِعۡ مَنۡ اَغۡفَلۡنَا قَلۡبَہٗ عَنۡ ذِکۡرِنَا
আর আপনি তার আনুগত্য করবেন না— যার চিত্তকে আমরা আমাদের স্মরণে অমনোযোগী করে দিয়েছি। (সহিহ ইন্টারন্যাশনাল)
উল্লেখিত আয়াতটি সূরা আল কাহাফ এর ২৮ নং আয়াতের একাংশ। উল্লিখিত অংশের অনুবাদে প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ যদি কাউকে তার স্মরণ থেকে অমনোযোগী করে দেন তাহলে ওই ব্যক্তির কি দোষ? আর এই ধরনের মানুষ আল্লাহ পৃথিবীতে রাখবেন কেন? গাফেল ব্যক্তি কি আল্লাহর পথে আসতে পারবে? এটা যদি শুধু আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয় তাহলে মানুষের কি করার আছে? হেদায়াতের বানী আল কোরান পড়ে কি লাভ? আল্লাহ না চাইলে তো হেদায়াত হবে না। তাহলে ওই ব্যক্তির বিচার হবে কিসের ভিত্তিতে? আল্লাহ কি কারো সাথে এই ধরনের নির্দয় আচরণ করতে পারেন? এটা কি আল্লাহর মাহানত্ব, মহানুভবতা বা বরত্বের সাথে যায়? এরকম আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এখন বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থ পড়তে শুরু করুন।
উপরোক্ত আয়াতে অনুবাদের মূল সমস্যা اغفلنا ও قلبه শব্দ দুটির আনুবাদে। এই দুটি শব্দের সাথে একটি করে সর্বনাম نا ও ه যুক্ত আছে। সম্মানিত অনুবাদকগণ এই দুটি সর্বনাম পদের ব্যবহারে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন। পুরো কোরআনের অনুবাদে সর্বনাম ও অব্যয় পদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিক ব্যাকরণ মানা হয়নি। অনুবাদকগণ তাদের নিজস্ব খেয়াল খুশি মতো ব্যবহার করেছেন।
যাহোক, اغفلنا বাক্যাংশটি اغفل ও نا শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে গঠিত। اغفل শব্দটি আজ্ঞাসুচক ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য (imperative verbal noun) যার অর্থ উপেক্ষা করা; অগ্রাহ্য করা; অবহেলা করা; অবজ্ঞা করা; প্রত্যাখ্যান করা; তাচ্ছল্য করা; তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা; ইচ্ছাকৃতভাবে অগ্রাহ্য করা; ইচ্ছাকৃতভাবে তুচ্ছ করা; বাতিল করা; স্বীকার না করা ; নগণ্য মনে করা; পাত্তা না দেওয়া; তৃণজ্ঞান করা; তুচ্ছ করা ইত্যাদি।
এবং نا শব্দটি উত্তম পুরুষের কর্মবাচক বহুবচন সর্বনাম (first person objective plural pronoun) যার অর্থ আমাদের/ আমাদেরকে (our/us)।” আমরা” হবে না(not we)। যেমন ربنا আমাদের প্রভু। খেয়াল করুন ذِکۡرِنَا বাক্যাংশে نا শব্দটির অর্থ “আমাদের” করা হয়েছে। نحن অর্থ আমরা। পুরো আল কোরআনের অনুবাদে نا শব্দটি কে অনুবাদকগণ তাদের কল্পিত অর্থের সাথে মিলাতে গিয়ে কোথাও “আমাদের” আবার কোথাও “আমরা” নিয়েছেন, যা ব্যাকরণ বহির্ভূত ।
আল কোরানে نَحۡنُ ও نا শব্দ দুটি এক সাথেও এসেছে যেমন (১৫:৯) نَحۡنُ نَزَّلۡنَا الذِّکۡرَ প্রচলিত অনুবাদ অনুযায়ী نَحۡنُ অর্থ আমরা, نَزَّلۡنَا আমরা অবতীর্ন করেছি, তাহলে আমরা শব্দটি দুইবার ব্যাবহার করার দরকার কি, বিজ্ঞ অনুবাদকগন একটি আমরা বাদ দিয়ে অনুবাদ করেন “আমরা উপদেশ /কোরান অবতীর্ন করেছি”। তাহলে আল্লাহ কি ভুল করে দুইবার আমরা বলেছেন? নাকি আল্লাহ অপ্রয়োজনীয় শব্দ ব্যবহার করেছেন। নাউজুবিল্লা। কোরান সম্পর্কে আল্লাহ বলেন
لَّا یَاۡتِیۡہِ الۡبَاطِلُ مِنۡۢ بَیۡنِ یَدَیۡہِ وَ لَا مِنۡ خَلۡفِہٖ ؕ
বাতিল এতে (কোরানে) অনুপ্রবেশ করতে পারে না, না সামনে থেকে, না পিছন থেকে। (৪১:৪২)
১৫:৯ নং আয়াতে نَزَّلۡنَا অর্থ আমাদের প্রেরিত (our transmission)/আমাদের প্রকাশিত (our revelation) الذِّکۡرَ শব্দটি নির্দিষ্ট বাচক বিশেষ্য (definite noun) যার অর্থ স্মারকলিপি, লিখিত বিবরণ (memorandum)। যার দ্বারা আল কোরআনকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে ।
উপদেশ দেওয়া, স্মরণ করা, স্তব করা ইত্যাদি ফারসি ذِّکۡرَ এর অর্থ।
সুতরাং نَحۡنُ نَزَّلۡنَا الذِّکۡرَ (১৫:৯) এর সঠিক অনুবাদ হবে “আমরা প্রেরণ /প্রকাশ করেছি আমাদের স্মারকলিপি/ লিখিত বিবরণ।”
We reveal/transmit our memorandum.
যাহোক মূল কথায় আসি, مَنۡ اَغۡفَلۡنَا এর সঠিক অর্থ হচ্ছে : যে আমাদেরকে অগ্রাহ্য করে, যে আমাদেরকে উপেক্ষা করে, যে আমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করে ইত্যাদি।
পরবর্তী বাক্যাংশ قَلۡبَہٗ যার মধ্যে ه সর্বনামটির অর্থ তাকে। قلب শব্দটির মূল অর্থ ফিরানো (turn), পরিবর্তন করা (change), ফেরত আনা (return) উল্টানো (knock down), রুপান্তর করা (transform) ইত্যাদি ।
যেহেতু হৃদপিন্ডের (heart) প্রধান কাজ শরীর থেকে রক্ত কে ফিরিয়ে আনা, এবং পরিবর্তন করে আবার শরীরে ফেরত পাঠানো, তাই প্রাচীন কাল থেকেই হৃদয় অর্থে قلب শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রাচীনকালে হার্টকে শরীরের প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী অঙ্গ মনে করা হতো। প্রাচীন মিশরীয়রা বিশ্বাস করত যে মস্তিষ্কের পরিবর্তে হৃদয়ই ছিল মানুষের জ্ঞানের উৎস, সেইসাথে আবেগ, স্মৃতি, আত্মা এবং ব্যক্তিত্বের উৎস। প্রাচীন মিশরীয় বিশ্বাস থেকে উদ্ভূত হয়েছিল যে হৃদয় হল চিন্তা ও আত্মার ঘর। প্রাচীন এই বিশ্বাসের থেকেই قلب শব্দটি হৃদয়, অন্তর, বা মন অর্থেও ব্যবহৃত হয়।
কোন একটি শব্দের অর্থ কি হবে তা নির্ভর করে ঐ শব্দটির আগে ও পরে ব্যবহৃত অব্যয় পদের উপর এবং শব্দটি যে বাক্যে ব্যবহৃত হয়েছে তার প্রসংগ অনুযায়ী। অতএব قلب অর্থ সব সময় হৃদয় বা অন্তর নয়। প্রসংগ অনুযায়ী ১৮:২৮ এ ব্যবহৃত قلب শব্দটির অর্থ হবে ফিরানো,পরিবর্তন করা, রুপান্তর করা ইত্যাদি।
এখন আপনি ১৮:২৮ আয়াতাংশের সঠিক অনুবাদ টি দেখুন কি সহজ এবং সাবলীল ভাষায় আল্লাহ তার বার্তা মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন।
وَ لَا تُطِعۡ مَنۡ اَغۡفَلۡنَا قَلۡبَہٗ عَنۡ ذِکۡرِنَا
And do not follow who ignores us, turn him at our memorandum.
আর তার অনুসরন করো না যে আমাদেরকে এরিয়ে চলে, তাকে আমাদের স্মারকলিপি/ লিখিত বিবরণের (অর্থাৎ কোরানের) নিকটে ফিরিয়ে আন।
সঠিক অনুবাদে আল্লাহর বার্তা খুবই পরিষ্কার। এই কথা বোঝার জন্য আপনাকে আর কোন বই খুজতে হবে না। যেমনি আল্লাহ বলেছেন :
(১৬:১০৩) وَّهذَا لِسَانٌ عَرَبِیٌّ مُّبِیۡنٌ
and this is a language of an arabic of a clear understanding.
এবং ইহা ( কোরান) একটি সুস্পষ্ট বোধগম্য আরবী ভাষা। (১৬:১০৩)
লেখার পরিধি ছোট করার স্বার্থে সবগুলো উদাহরণ এর সঠিক অনুবাদ এখানে করছিনা, ইনশাআল্লাহ অন্য একটি পর্বে করার ইচ্ছা রইল। শুধুমাত্র আয়াত এবং তার প্রচলিত অনুবাদ উল্লেখ করছি
২ নং সুরা বাকারার ১৪২ নং আয়াতে প্রায় একই ধরনের অনুবাদ করা হয়েছে یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ
“তিনি যাকে চান সরল পথ দেখান” (তাফহীমুল কুরান)
এখানেও একই প্রশ্ন আল্লাহর ইচ্ছার উপর যদি কারো সরল পথ প্রাপ্তি হয় তাহলে মানুষের কি করার আছে? এই সরল পথ দেখিয়েই বা কি লাভ যদি মানুষ তা গ্রহন করার স্বাধীনতা না থাকে? আল্লাহ কি তার অসীম ক্ষমতা ব্যবহার করে মানুষের সাথে সেচ্ছাচারিতা করছেন? নাউজুবিল্লাহ। অথচ আল্লাহ মানুষকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছন বলেইতো তার জবাবদিহিতা আছে।
শুধু কি তাই? যারা আল্লাহকে স্মরণ করেনা আল্লাহ তার জন্য একজন শয়তান নিযুক্ত করেন। নাউজুবিল্লা।
وَ مَنۡ یَّعۡشُ عَنۡ ذِکۡرِ الرَّحۡمٰنِ نُقَیِّضۡ لَہٗ شَیۡطٰنًا فَہُوَ لَہٗ قَرِیۡنٌ
আর যে পরম করুণাময়ের যিকির থেকে বিমুখ থাকে আমি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করি, ফলে সে হয়ে যায় তার সঙ্গী। (৪৩:৩৬) (সহিহ ইন্টারন্যাশনাল)
একবার ভাবুন আল্লাহ যদি কারো জন্য শয়তান নিযুক্ত করে তাহলে তার শয়তানি কোন পর্যায়ে যাবে!!
প্রশ্ন হচ্ছে মাহান আল্লাহ কি তার সৃষ্টি মানুষের সাথে এই রকম জঘন্যতম আচরন করতে পারেন? এটা কি আল্লাহর মহানত্নের সাথে যায়? একজন মানুষ আল্লাহকে স্মরণ করলেই কি আর না করলেই কি, আল্লাহর কি এতে কিছু যায় আসে ? আল্লাহ কি একজন মানুষের পিছনে লাগতে পারেন?
ভুল অনুবাদের মাধ্যমে তারা আল্লাহর আচরণকে মানুষের আচরণের কাতারে নামিয়ে এনেছেন। অন্যে জায়গায় অনুবাদ করেছেন, আল্লাহ মুনাফিকদের সাথে ঠাট্টা বিদ্রুপ করছেন!!
اَللّٰہُ یَسۡتَہۡزِئُ بِہِمۡ وَ یَمُدُّہُمۡ فِیۡ طُغۡیَانِہِمۡ یَعۡمَہُوۡنَ
আল্লাহ তাদের প্রতি উপহাস করেন এবং তাদেরকে তাদের অবাধ্যতায় বিভ্রান্ত হয়ে ঘোরার অবকাশ দেন। (২:১৫) (বায়ান্ন ফাউন্ডেশন)
আল্লাহ তাদের সাথে ঠাট্টা করছেন। এদের রশি দীর্ঘায়িত করছেন এরা নিজেদের অবস্থার মধ্যে অন্ধের মত পথ হাতরে মরছে। (তাফহীমুল কুরআন)
ঠাট্টা বিদ্রুপ বা উপহাস করা কি আল্লাহর সাথে যায়? এই ধরনের অশোভন কাজ কি আল্লাহ করতে পারেন?
বিজ্ঞ অনুবাদকগণ অন্য জায়গায় অনুবাদ করেছেন আল্লাহ মূসা (আঃ)এর সাথে ৩০ রাতের ওয়াদা করেছিলেন কিন্তু তিনি তা ৪০ দিনে সম্পন্ন করেন
وَ وٰعَدۡنَا مُوۡسٰی ثَلٰثِیۡنَ لَیۡلَۃً وَّ اَتۡمَمۡنٰہَا بِعَشۡرٍ
আর মূসার জন্য আমরা ত্রিশ রাতের ওয়াদা করি এবং আরো দশ দিয়ে তা পূর্ণ করি।(৭:১৪২)
তাহলে আল্লাহ কি তার ওয়াদা পূরণে ব্যর্থ? ত্রিশ রাতের ওয়াদা করে আরো দশ দিন পরে তা সম্পন্ন করেন? নাউজুবিল্লা
উপরোক্ত প্রত্যেকটি অনুবাদের ব্যাখ্যা বা তাফসীর আপনি খুঁজতে যান দেখবেন তারা আপনাকে কতগুলো গল্প শুনিয়ে দেবে।
এগুলোর না হয় একটি ব্যাখ্যা আপনি পাবেন কিন্তু এখন যে আয়াতটি উল্লেখ করব তার কোনো কূল কিনারা খুঁজে পাবেন না, তখন আপনাকে বলবে এইসব বিষয়ে মাথা ঘামানোর কোন দরকার নেই, এগুলোর অর্থ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলেই ভাল জানেন, এগুলো কোরানের অস্পষ্ট আয়াত ইত্যাদি ইত্যাদি।
وَ هوَ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ وَّ کَانَ عَرۡشُہٗ عَلَی الۡمَآءِ لِیَبۡلُوَکُمۡ اَیُّکُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ
আর তিনিই আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, আর তাঁর আরশ ছিল পানির উপর, যাতে তিনি পরীক্ষা করেন, কে তোমাদের মধ্যে আমলে সর্বোত্তম।(১১:৭)
যখন আসমান ও যমীন সৃষ্টি হয়নি তখন দিনের হিসাব কিভাবে আসলো? তারা বলবে এই দিন কয় ঘণ্টায়,কোথাকার দিন, এই ব্যাপারে আল্লাহই ভাল জানেন। এটা না হয় একটু বুঝা গেল। কিন্তু আল্লাহর আরশ পানির উপরে রেখে কিভাবে আমাদের আমলের পরীক্ষা করবেন?আমাদের কি সাঁতরিয়ে আরশের নিচে যেতে হবে? এই পানি কোথাকার পানি? আমাদের আমলের পরীক্ষা করার জন্য আল্লাহর আরশ পানির উপরে রাখার কি দরকার ছিল? সত্যি কথা বলতে কি এই আয়াতের অনুবাদে কোন আগা মাথা আমি খুঁজে পাইনি। যে কথা আমরা বুঝতে পারবো না সেই কথা আল্লাহর বলার দরকার কি?
আসলে বিজ্ঞ অনুবাদকগণ এ আয়াতে ব্যবহৃত শব্দ গুলো কোরআনের অন্যান্য আয়াতে ভুল অর্থে ব্যবহার করায় এই আয়াতে শব্দগুলোর অর্থ করায় ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেন নি।
ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে আল্লাহর আয়াতকে গোপন করে
فَوَیۡلٌ لِّلَّذِیۡنَ یَکۡتُبُوۡنَ الۡکِتٰبَ بِاَیۡدِیۡہِمۡ ٭ ثُمَّ یَقُوۡلُوۡنَ هذَا مِنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ لِیَشۡتَرُوۡا بِہٖ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ؕ فَوَیۡلٌ لَّہُمۡ مِّمَّا کَتَبَتۡ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ وَیۡلٌ لَّہُمۡ مِّمَّا یَکۡسِبُوۡنَ
সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব লিখে। তারপর বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, যাতে তা তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা লিখেছে তার পরিণামে তাদের জন্য ধ্বংস, আর তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস।(২:৭৯)- সহিহ ইন্টারন্যাশনাল
اِنَّ الَّذِیۡنَ یَکۡتُمُوۡنَ مَاۤ اَنۡزَلۡنَا مِنَ الۡبَیِّنٰتِ وَ الۡہُدٰی مِنۡۢ بَعۡدِ مَا بَیَّنّٰہُ لِلنَّاسِ فِی الۡکِتٰبِ ۙ اُولٰٓئِکَ یَلۡعَنُہُمُ اللّٰہُ وَ یَلۡعَنُہُمُ اللّٰعِنُوۡنَ
যারা আমার নাযিলকৃত সুস্পষ্ট (নিদর্শনাবলী) এবং পথনির্দেশকে কিতাবে মানুষের জন্য সুস্পষ্ট করার পরও গোপন করে, তাদের উপর আল্লাহর লানত এবং অভিসম্পাতের অধিকারীদের অভিসম্পাত। (২:১৫৯)
এখানে মাত্র কয়েকটি নমুনা দেখালাম, যেগুলোর অনুবাদে দৃশ্যমান ভুল দেখা যায় ও প্রশ্ন তোলা যায়। কিন্তু অধিকাংশ আয়াতের অনুবাদ এমন ভাবে করা হয়েছে আপনার কাছে সঠিক মনে হবে। স্পষ্টতই যে সকল আয়াতের অনুবাদ ভুলভাবে করা হয়েছে তা আমাদেরকে ভুল বার্তা দিচ্ছে। আর আমাদের মুক্তির জন্য সঠিক বার্তাকেই অনুসরণ করতে হবে। আল কোরআনের সঠিক অনুবাদ পেতে হলে আল কোরআন যে ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে সে ভাষা থেকে কুরআনের অনুবাদ করতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই কোরানের ভাষা কি? এটি কি প্রচলিত সহজ আরবি ভাষা? নাকি দুর্বোধ্য অন্য কোন আরবি ভাষা!!
কোরআন স্বীকৃত, প্রমিত ও প্রচলিত সহজ আরবী ভাষায় লিখিত। কোরআন যে আরবি ছাড়া অন্য ভাষায় লিখিত নয় সে ব্যাপারে আল্লাহ পরিষ্কার করে দিয়েছেন
وَ لَوۡ جَعَلۡنٰہُ قُرۡاٰنًا اَعۡجَمِیًّا لَّقَالُوۡا لَوۡ لَا فُصِّلَتۡ اٰیٰتُہٗ ؕ ءَؔاَعۡجَمِیٌّ وَّ عَرَبِیٌّ
Had it made by Us a compilation of a foreign language (other than standard Arabic), they would have said they were not made clear its verses of which are of the foreign or are of Arabic? (100% correct translation). (41:44)
ইহা যদি আমাদের দ্বারা তৈরিকৃত বিদেশী ভাষার(প্রচলিত আরবী ব্যাতিত) একটি সংকলন হত, তারা বলত, তারা ইহার আয়াত সমূহ সুস্পষ্ট করতে পারেনি যে এগুলো কি বিদেশী না আরবী? (৪১:৪৪)
যেহেতু قُرْآنًا বাক্যাংশটির শেষ অক্ষরে তানভীন আছে তাই এটি একটি অনিষ্টবাচক বিশেষ্য (اسم نکرۃ) যার ফলে ইহাকে আলকুরান অনুবাদ করা যাবেনা। কিন্তু শেষে “আলিফ” প্রত্যয় থাকার কারনে এর অর্থ হবে “একটি” (a/an ) সুতরাং “قُرْآنًا” অর্থ একটি সহজ কথা, একটি ধারাবাহিক সংকলন,একটি সহজ সংকলন, একত্রে জোড়া লাগানো, একটি বিন্দু যেখানে একাধিক লাইন মিলিত হয়, একটি জংশন ইত্যাদি।
“وَهَٰذَا كِتَابٌ مُصَدِّقٌ لِسَانًا عَرَبِيًّا” (46:12) “
And this book of accredited/authentic/ accurate document of a language of an Arabic” (46:12)(100% correct translation),
এবং ইহা একটি আরবী ভাষার স্বীকৃত/ নির্ভরযোগ্য/ প্রমিত কিতাব।(৪৬:১২)
আরবী শব্দ مُصَدِّقٌ এমন কিছুকে বোঝায় যা সঠিক, সত্য হিসাবে অনুমোদিত, প্রত্যয়িত, গৃহীত, স্বীকৃত, সত্য হিসাবে বিশ্বাসযোগ্য, সত্য হিসাবে স্বীকৃত, সত্যায়িত অনুলিপি, গ্রহণযোগ্য, অনুমোদিত, বৈধ, প্রত্যয়িত, নিবন্ধিত, নিশ্চিত এবং একটি নির্ভরযোগ্য দলিল।
সুতরাং, উপরের আয়াত (৪৬:১২)-তে আল্লাহ নিজেই কুরআনকে স্বীকৃত প্রমিত আরবি ভাষার কিতাব ঘোষণা করেছেন।
১২:২ নং আয়াতে আল্লাহ ইহা সুস্পষ্ট করেছেন
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لَّعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
while Our revelation that’s of an easy going compilation of an Arabic to explain your intellectuals/wise men/who have sense of understanding (100% correct translation)
পক্ষান্তরে, ইহা আমাদের দৈববাণী যা তোমাদের বুদ্ধিজীবী /বিজ্ঞ/ বুঝদার ব্যাক্তির কাছে ব্যাখ্যা করার জন্য আরবীতে একটি সহজ সংকলন। (১২:২)
আয়তে উল্লেখিত أَنزَلْنَاهُ এর শেষে যুক্ত هُ শব্দটি الْكِتَابِ الْمُبِينِ” (সুস্পষ্ট বোধগম্য কিতাব) এর সর্বনাম(pronoun) যা পূর্ববর্তী আয়াত ১২:১ এ উল্লেখ করা হয়েছে।
কোরানিক শব্দগুচ্ছ لَّعَلَّكُمْ কে পুরো কোরান জুড়ে সবসময় ভুল অনুবাদ করা হয়। আল্লাহর কথার অনিশ্চয়তা করতে এর অনুবাদ করা হয় “সম্ভবত তোমরা”, “যাতে করে তোমরা”। অথচ আল্লাহর কথা কোন সন্দেহ ছাড়া যথাযথ, সত্য ও চূড়ান্ত যেখানে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। لَّعَلَّكُمْ শব্দগুচ্ছটি كم+عل+ ل তিনটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। যেখানে “لَّ” শব্দটি অব্যয় (preposition) যার অর্থ জন্য/প্রতি/যাতে। “عَلَّ” শব্দটি মূল শব্দ علل হতে উৎপন্ন, যার অর্থ : ব্যাখ্যা করা, যাচাই করা, যুক্তি দেওয়া, প্রতিষ্ঠিত করা, সুস্পষ্ট করা, যুক্তিযুক্ত করা, উৎসাহ দেওয়া ইত্যাদি। আর “كُمْ” অর্থ “তোমরা” নয় বরং “তোমাদের”। কারন “كُمْ” সর্বনামটি কর্তিবাচ্য (subjective) নয় বরং এটি কর্মবাচ্যে দ্বিতীয় পুরুষ এর বহুবচনিক সর্বনাম (second person objective plural pronoun), যার অর্থ তোমাদের। সুতরাং لَّعَلَّكُمْ শব্দগুচ্ছটির সঠিক অনুবাদ হবে : তোমাদের ব্যাখ্যার জন্য, তোমাদের যাচাইয়ের জন্য, তোমাদের সুস্পষ্টতার জন্য, তোমাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য ইত্যাদি।
“إِنَّا جَعَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لَّعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ”(43:3)
while Our manufactured that’s of an easy going compilation of an Arabic to explain your intellectuals/wise men/who have sense of understanding . (43:3)(100% correct translation)
পক্ষান্তরে ইহা আমাদের তৈরিকৃত যা তোমাদের বুদ্ধিজীবী /বিজ্ঞ/ বুঝদার ব্যাক্তির কাছে ব্যাখ্যা করার জন্য আরবিতে একটি সহজ সংকলন। (৪৩:৩)
“وَكَذَٰلِكَ أَنْزَلْنَاهُ حُكْمًا عَرَبِيًّا”
and thus Our revelation that’s an order of an Arabic .(13ঃ37) (100% correct translation)
আর এমনিভাবে ইহা আমাদের দৈববাণী যা আরবিতে একটি নির্দেশনা। (১৩ঃ৩৭)
“وَكَذَٰلِكَ أَنْزَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا”
and thus Our revelation that’s of a an easy going compilation of an Arabic .(20:113) (100% correct translation)
আর এমনিভাবে ইহা আমাদের দৈববাণী যা আরবিতে একটি সহজ সংকলন (২০ঃ১৩)।
“وَكَذَٰلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ قُرْآنًا عَرَبِيًّا”
and that is Our inspiration towards yourself of an easy going compilation of an Arabic.(42:7) (correct translation)
এবং উহা তোমার প্রতি আমাদের অনুপ্রেরণার একটি সহজ আরবী সংকলন।(৪২:৭)
“قُرْآنًا عَرَبِيًّا”
An easy going compilation of an Arabic. (39:28) (100% correct translation)
আরবীর একটি সহজ সংকলন।(৩৯:২৮)
“وَهَٰذَا لِسَانٌ عَرَبِيٌّ مُبِينٌ”
and this is a language of an Arabic of a clear understanding .(16:103) (correct translation)
ইহা একটি সুস্পষ্ট বোধগম্য আরবী ভাষা।(১৬ঃ১০৩)
“بِلِسَانٍ عَرَبِيٍّ مُبِينٍ”
with a language of an Arabic of clear understanding . (26:195) (correct translation)
সুস্পষ্ট বোধগম্য একটি আরবি ভাষার সাথে (26ঃ195)
“كِتَابٌ فُصِّلَتْ آيَاتُهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِّقَوْمٍ يَعْلَمُونَ”
A book of plainly explaining His verses of an easy going compilation of an Arabic for people who understand.(41:3) (correct translation)
যে সকল মানুষ বুঝে তাদের জন্য তার আয়াত সমুহের স্পষ্ট ভাবে ব্যাখ্যা করার একটি কিতাব যা আরবির একটি সহজ সংকলন। (41:3)
এসকল আয়াত থেকে পরিষ্কার যে আল্লাহর বার্তা এসেছিল একই প্রমিত আরবি ভাষায় যা তখনকার আরব জাতি বা আরব জনগণ বুঝত। (عَرَبِيًّا لِّقَوْمٍ يَعْلَمُونَ) সুতরাং উপরোক্ত আয়াত সমূহের আলোকে বলা যায় সেই দুষ্টরা মিথ্যাবাদী যারা মিথ্যাভাবে দাবি করে যে কুরআনের আরবি প্রচলিত আরবি থেকে আলাদা যা বিশ্বব্যাপী মুসলিম এবং অমুসলিম আরব জাতি এবং আরবি ভাষাভাষী মানুষের নিকট পরিচিত এবং যা তারা বুঝতে পারে ।
সতর্কীকরণ ঃ এই পেইজটি শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা তাদের প্রচলিত বিশ্বাসের বিপরীত হলেও, আল কুরানে বর্নিত আল্লাহর প্রকৃত বিধানের আনুসরন করতে চায়।এবং তাদের অর্জিত বিশ্বাসকে সত্যের মানদণ্ডে যাচাই করার সাহস রাখে। আর যারা নিজেদের পুরনো বিশ্বাসে বা বাপ দাদার বিশ্বাসে থাকতে চায় তাদের জন্য এই পেইজ উপযুক্ত নয়।
শুভেচ্ছান্তে
আবদুল্লাহিল কাউছার
Al Quranইসলাম