যে কারণে অভিশপ্ত হয়েছিলো হযরত লুত (আ.) এর জাতি

বর্তমান সময় সমকামিতার নামে বিশ্বব্যাপি যে আয়োজন-কুপ্রথা চালু হয়েছে এটা নিতান্তই অসামাজিক, অমানবিক ও অসুস্থ মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ সমকামিতার অপরাধের মতো ঘৃণ্য কাজটিকেই ‘আধুনিকতা’ এবং ‘অধিকারের’ কথা বলে অব্যাহতভাবে পাপাচারকে প্রসারিত করছে! এই ধরনের মানুষকে উদ্দেশ্য করেই পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, তারা চতুষ্পদ জন্তু-জানোয়ারের মতো, বরং তার চেয়েও নিকৃষ্ট (সুরা আরাফ- ১৭৯)

ইতিহাস সাক্ষী, অভিশপ্ত গোষ্ঠি কওমে লুত সমকামের অপরাধে ধ্বংস হয়েছিল। হজরত লুত (আ.) তাদেরকে বার বার হালাল পন্থায় নারীদের সঙ্গে যৌন চাহিদা পূরণ করার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু সেই জাতি তার কথা শুনেনি। ফলাফল কী হয়েছিলো? আল্লাহ তায়ালা হজরত জিবরাইলকে (আ.) পাঠিয়ে কওম লুতকে আজাব দিলেন। ধ্বংস করে দিলেন একটি জনপদকে।

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘অতঃপর যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছল, এরপর যখন আমার সিদ্ধান্ত কার্যকর হলো, তখন আমি জনপদের উপরিভাগ নিচে এবং নিম্নভাগ উপরে উঠালাম এবং তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর-পাথর বর্ষণ করলাম। (সুরা হুদ: ৮২) কওমে লুতের বাড়িঘর ধ্বংসপ্রাপ্ত রূপই আজকের ‘ডেডসি’ বা মৃত সাগর। এইটাই মর্মান্তিক আজাব দিয়েছিলেন আল্লাহ মহান- আজও সে জনপদে কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যাদের তোমরা লুতের সম্প্রদায়ের কাজে (সমকামে) লিপ্ত দেখবে তাদের উভয়কেই হত্যা করো। (তিরমিজি: ৪/৫৭; আবু দাউদ: ৪/২৬৯; ইবনে মাজা: ২/৮৫৬) রাসুল (সা.) বলেন, আমার উম্মতের মধ্যে যখন পাঁচটি জিনিস আরম্ভ হবে তখন তাদেরকে নানা প্রকার রোগ-ব্যাধি ও আজাবের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেয়া হবে। তার মধ্যে একটি হল নর নারীর মধ্যে সমকামিতা প্রচলিত হওয়া। (মুসনাদে আহমদ)

সমকামিতা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি লুতকে প্রেরণ করেছি, যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ? যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বের কেউ করেনি। তোমরা তো নারীদের ছেড়ে কামবশত পুরুষদের কাছে গমন কর। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ। (সূরা আরাফ ৮০-৮১) হজরত আবু মুসা আশআরী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে পুরুষ পুরুষের সাথে নোংরা কাজে লিপ্ত হয়, উভয়ে ব্যভিচারকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। তেমনি যে নারী আরেক নারীর সঙ্গে কুকর্মে লিপ্ত হয় উভয়ে ব্যভিচারকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। (শুয়াবুল ঈমান)
হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আমি আমার উম্মতের জন্য সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটা আশঙ্কা করি সেটা হলো লুতের উম্মত যা করত সেটার অনুসরণ করা। (তিরমিজি)