আমিন মুনশি : কারো প্রতি মন্দ ধারণা, কারো পেছনে লেগে থাকা, দোষ খোঁজা ও বিদ্বেষ পোষণ করার মতো ব্যাধি সামাজিক অশান্তির কারণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) এসব কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করে সামাজিক ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দিয়েছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা (মন্দ) ধারণা করা থেকে বেঁচে থাকো, কেননা তা নিকৃষ্টতম মিথ্যা। তোমরা গোপনে কারো কথা শুনো না, গুপ্তচরবৃত্তি কোরো না, কেনার ইচ্ছা ছাড়া পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কোরো না, হিংসা কোরো না, বিদ্বেষ পোষণ কোরো না, কারো পেছনে লেগে থেকো না; বরং তোমরা আল্লাহর বান্দা ও ভাই হয়ে যাও। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬০৬৬)
আলোচ্য হাদিসে রাসুল (সা.) সাতটি সামাজিক ব্যাধি থেকে তাঁর উম্মাহকে সতর্ক করেছেন, যেসব ব্যাধি সামাজিক অশান্তির অন্যতম প্রধান কারণ। বিপরীতে তিনি সামাজিক ভ্রাতৃত্বের নির্দেশ দিয়েছেন। মুহাদ্দিসরা বলেন, হাদিসে বর্ণিত নিষিদ্ধ কাজগুলো পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যেমন—হাদিসে সর্বপ্রথম মানুষ সম্পর্কে মন্দ ধারণা পোষণ থেকে নিষেধ করা হয়েছে এবং তাকে নিকৃষ্টতম মিথ্যা বলা হয়েছে। তারপরই গুপ্তচরবৃত্তি ও মানুষের কথায় আড়ি পাততে নিষেধ করা হয়েছে। মূলত মানুষ মন্দ ধারণার বশবর্তী হয়েই তা করে থাকে।
মন্দ ধারণাই একসময় মানুষের মনে হিংসা-বিদ্বেষের জন্ম দেয় এবং মানুষকে অর্থহীন শত্রুতার পথে ধাবিত করে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ধারণার বশবর্তী হতে নিষেধ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা অধিক পরিমাণ ধারণা করা থেকে বিরত থাকো। কেননা কিছু কিছু ধারণা পাপতুল্য। তোমরা গুপ্তচরবৃত্তি কোরো না এবং পরস্পরের নিন্দা কোরো না।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১২)
মুহাদ্দিসরা আরো বলেন, হাদিসে বর্ণিত সাতটি কাজ সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের পথে অন্তরায়। সুতরাং সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য তৈরি করতে হলে তা পরিহার করতে হবে।