ভারতে স্কলারশিপ : বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারতে স্কলারশিপ সমূহের তালিকা। প্রতি বছর ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন ভারত ও বাংলাদেশে পড়ালেখার জন্য বিভিন্ন স্কিমে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বিপুলসংখ্যক স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে। স্কলারশিপগুলো নিন্মরূপ:

 

১. আইসিসিআর স্কলারশিপসমূহ ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেসন্স (আইসিসিআর) ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কোর্স গ্রহণে নিম্নোক্ত স্কলারশিপসমূহ প্রদান করে: ক. ইন্ডিয়া স্কলারশিপ স্কিম; খ. বাংলাদেশ স্কলারশিপ স্কিম; গ. সার্ক স্কলারশিপ স্কিম; ঘ. কমনওয়েলথ স্কলারশিপ স্কিম; এবং ঙ. আয়ুশ স্কলারশিপ স্কিম।

 

ভারতে স্কলারশিপ স্কিম

যুব বিশেষত বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থী বিনিময় বৃদ্ধির ভারতীয় প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরকালে মর্যাদাপূর্ণ ইন্ডিয়া স্কলারশিপ স্কিম ঘোষণা করেন। সেই সূত্রে আইসিসিআর ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে স্কিমটি প্রবর্তন করে। এ বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীরা মানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক/স্নাতকোত্তর/পিএইচ ডি কোর্স (ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিসিন ছাড়া)-এ ভারতে অধ্যয়ন করতে পারেন।

 

বাংলাদেশ স্কলারশিপ স্কিম

এ স্কিমের আওতায় আইসিসিআর প্রতি বছর প্রকৌশল, বিজ্ঞান, বাণিজ্য, ব্যবস্থাপনা, ফার্মাসি, চারুকলা ও চিরায়ত ভারতীয় ভাষাসমূহ অধ্যয়নে স্নাতক/স্নাতকোত্তর/এমফিল/পিএইচ ডি/পোস্ট ডক্টরাল কোর্সে (মেডিসিন ছাড়া) শিক্ষার্থীরা ভারতে স্কলারশিপ পেয়ে থাকে।

 

সার্ক স্কলারশিপ স্কিম

এ স্কিমের আওতায় আইসিসিআর স্নাতক/ স্নাতকোত্তর/ এম ফিল/ পিএইচডি (মেডিসিন ছাড়া) কোর্সে স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে।

 

ভারতে স্কলারশিপ : কমনওয়েলথ স্কলারশিপ স্কিম

এ স্কিমের আওতায় আইসিসিআর স্নাতক/ স্নাতকোত্তর/এমফিল/পিএইচডি/পোস্ট ডক্টরাল কোর্সে (মেডিসিন ছাড়া) স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে। উপরোক্ত ক-ঘ স্কিমগুলোর জন্য সাধারণত ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের প্রধান প্রধান সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দানের মাধ্যমে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। আগ্রহী প্রার্থীরা আরও তথ্যের জন্য ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন: www.hcidhaka.gov.in 

 

আয়ুশ স্কলারশিপ স্কিম

প্রতি বছর ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন ভারতের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা ব্যবস্থা যেমন আয়ুর্বেদ, ইউনানি, সিদ্ধ ও হোমিওপ্যাথি কোর্সে অধ্যয়নের জন্য আইসিসিআরÑ এর এ কোর্সের জন্য স্কলারশিপ নির্বাচন সমন্বয় করে থাকে। স্কিমটি সাধারণত জুলাই মাসে ঘোষণা করা হয়।

 

ভারতে স্কলারশিপ ২০১৯-২০

ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন ইতোমধ্যে ২০১৯- ২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স (আইসিসিআর) শিক্ষাবৃত্তি ঘোষণা করেছে। একমাত্র চিকিৎসা শাস্ত্র ছাড়া অন্য সব বিষয়ে ¯œাতক, ¯œাতকোত্তর এবং পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনা করার জন্য মেধাবী বাংলাদেশী নাগরিকদের এ শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়ে থাকে। ভারত সরকার ১৯৭২ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি বাংলাদেশী নাগরিককে আইসিসিআর শিক্ষাবৃত্তি দিয়েছে। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য ¯স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি পর্যায়ে (চিকিৎসা শাস্ত্র ছাড়া) বিভিন্ন কোর্সে পড়াশোনা করার জন্য নি¤œলিখিত বৃত্তি স্কিমগুলো দেওয়া হয়েছেÑ ১. বাংলাদেশ বৃত্তি স্কিম (প্রকৌশলসহ স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি/পোস্ট ডক্টরাল কোর্সের জন্য); ২. ভারত বৃত্তি স্কিম (প্রকৌশল ছাড়া স্নাতক,স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি/পোস্ট ডক্টরাল কোর্সের জন্য); বৃত্তি পেতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং পাশকৃত পরীক্ষায় কমপক্ষে ৬০ শতাংশ নম্বর অথবা জিপিএ ৫-এর মধ্যে ৩ থাকতে হবে। আগ্রহী শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদন করার জন্য https://a2ascholarships.iccr.gov.in এই ঠিকানায় নিজেদের ব্যক্তিগত লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড তৈরি করে নিতে হবে।

আবেদনকারীদের নির্দেশনাগুলো পড়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদনের সময় আবেদনকারীকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ রাখতে হবে: ক. যারা ইঊ/ই ঞবপয কোর্সের জন্য আবেদন করবেন তাদের স্কুল-কলেজের পাঠ্যসূচীতে অবশ্যই পদার্থবিদ্যা, গণিত ও রসায়ন অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। খ. আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই জুলাই ২০১৯- এর মধ্যে ১৮ হতে হবে। গ. সব শিক্ষার্থীকে হোস্টেলে থাকতে হবে। পরিবার ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কারণ ছাড়া বাইরে অবস্থান করা যাবে না। বিস্তারিত তথ্যের জন্য নিম্নাক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করুন: শিক্ষা শাখা, ভারতীয় হাই কমিশন ১Ñ ৩ পার্ক রোড, বারিধারা, ঢাকা ফোন: ৫৫০৬৭৩০-৫৫০৬৭৩০৮ এক্সটেনশনÑ ১০৯৬/১১১২। ই-মেইল: edu1.dhaka@mea.gov.in

 

২. ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী মুক্তিযোদ্ধা সন্তান স্কলারশিপ স্কিম

ভারত সরকার পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারীদের জন্য ১০,০০০ বৃত্তি প্রদান করেছে। ২০১৭-২০১৮ সালে এ প্রকল্প শুরু হয়। ২০১৯-২০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে ১০০০ করে মোট ২০০০ বৃত্তি দেওয়া হবে। স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এককালীন ৫০,০০০ টাকা এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এককালীন ২০,০০০ টাকা পাবেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথভাবে যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করা হবে। এতদ্সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনটি যথাসময়ে মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.molwa.gov.bd এবং স্থানীয় জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হবে। আবেদনকারীরা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্ধারিত ফরমটি ডাউনলোড করে আগামী বছরের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন। বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন: https:/www.hcidhaka.gov.in 

 

৩. আইটেক কর্মসূচি ১৯৬৪ সালে ভারতীয় কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা কৌশল কাঠামোর আওতায় ভারতের উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আইটেক কর্মসূচি প্রচলিত হয় যার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ভারতের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা এবং যথাযথ প্রযুক্তির সুবিধা প্রদান করা হয়। প্রতি বছর হিসাব, নিরীক্ষা, ব্যবস্থাপনা, এসএমই, গ্রামীণ উন্নয়ন, সংসদীয় বিষয়াবলীর মত বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য ১৬১টি সহযোগী দেশে ১০,০০০-এর বেশি প্রশিক্ষণ পর্বের আয়োজন করা হয়। ২০০৭ সাল থেকে আইটেক কর্মসূচির অধীনে ৩,৫০০-র বেশি বাংলাদেশী তরুণ পেশাজীবী ভারতে এ ধরনের বিশেষায়িত স্বল্প ও মধ্যম পর্যায়ের কোর্স সম্পন্ন করেছে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন https://www.hcidhaka.gov.in/pdf/ITE_Brochure_2019-2020.pdf