ফোন ক্যামেরা
নাসাকে ধন্যবাদটা এবার দিয়েই ফেলুন। ১৯৬০ সালে নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির (জেপিএল) গবেষক ইউজিন ল্যালি পরামর্শ দেন, অনেকগুলো লাইট সেন্সরকে গ্রিড আকারে সাজিয়েও ছবি তোলা যায়। ১৯৯০ সালে ওই প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করেই নাসা তাদের স্পেসক্রাফটের ক্যামেরার আকার ছোট করে আনে। এরপরই তারা বুঝতে পারে যে, এই ক্যামেরা টেলিস্কোপ ছাড়াও আরও অনেক জায়গায় ব্যবহার হতে পারে। সময়মতো সেটাই লুফে নিয়েছিল মোবাইল ফোন নির্মাতারা।
কৃত্রিম অঙ্গ
আগে প্লাস্টার দিয়ে কাজ সারা হলেও আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ কৃত্রিম অঙ্গ তৈরিতেও নাসার অবদান আছে। নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টার কৃত্রিম হাত তৈরিতে ব্যবহার করেছে বিশেষ ফোম ইনসুলেশন, যেটা কিনা ব্যবহার করা হতো রকেটকে প্রচণ্ড তাপ থেকে বাঁচাতে। সেই ফোমটাই পড়ে গেল নকল হাত তৈরির কারাখানায়।
জয়স্টিক
গেমারদের তো এটা ছাড়া একদিনও চলে না। তবে তাদের আগে উড়োজাহাজ ল্যান্ড করাতে এটা ব্যবহার করত মার্কিন নেভি ও নাসা। তবে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে ব্যবহৃত সিমুলেশন কন্ট্রোলারগুলো দেখেই অনুপ্রেরণা পায় গেমিং ডিভাইস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান থ্রাস্টমাস্টার। এরপরই তারা নিয়ে আসে আধুনিক জয়স্টিক।
বেবি ফুড
শিশুকে খাওয়ানোর চেয়েও নভোচারীকে খাওয়ানো নিয়ে বেশি টেনশনে থাকতে হতো নাসাকে। এ কারণে মারটেক বায়োসায়েন্স করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করে নাসা। উদ্দেশ্য হলো নভোচারীদের জন্য সহজপাচ্য একটা পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্টারি খাবার তৈরি করা। তখন গবেষকরা এমন দুটো ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করলেন, যা মায়ের বুকের দুধেও থাকে। সেখান থেকেই ক্রমে তৈরি হলো বেবি ফর্মুলার উন্নত সংস্করণ।
স্যাটেলাইট টিভি
১৯৫০ ও ৬০-এর দিকে নাসা অনেক স্যাটেলাইট পাঠায় কক্ষপথে। নাসাই প্রথম এটিঅ্যান্ডটির জন্য বাণিজ্যিক স্যাটেলাইটটি তৈরি করে। যা ১৯৬২ সালে কক্ষপথে পাঠানো হয়। পরবর্তী কয়েক বছর ওই স্যাটেলাইটের পাঠানো ছবি, শব্দ ও এর মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে গবেষণা করে। যার ফলে আমরা এখন স্যাটেলাইটে টিভি চ্যানেলগুলোর প্রোগ্রাম দেখছি।
সাঁতারের পোশাক
নভোযানকে কক্ষপথে যাওয়া বা ফেরত আসার সময় ব্যাপক ঘর্ষণের ভেতর থাকতে হয়। এই ঘর্ষণ যত কমানো যায় মহাকাশযানের জন্য ততই মঙ্গল। আর এ নিয়ে গবেষণায় নাসার সঙ্গে ছিল স্পিডো নামের আরেকটি সংস্থা। যৌথ গবেষণাতে বেরিয়ে এলো একটি উপাদান। যা দিয়ে সাঁতারের পোশাক বানালে দেখা যাচ্ছে সাঁতারু আগের চেয়ে বেশি তরতর করে এগিয়ে যেতে পারছে। পানির ঘর্ষণ বলটাও কমে আসছে অনেক। নাসার জ্ঞান নিয়ে স্পিডো বানিয়ে ফেলল এলজেডআর রেসার সুইমস্যুট।
মহাকাশে কত অজানা খুঁজে বেড়ায় নাসা। এই খোঁজাখুঁজিটা সহজ করতে দরকার হয় নানা জিনিসপাতির। সেসব বানাতে গিয়ে আরও কিছু কাজের জিনিস বানিয়ে ফেলল যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। সেসবের কথা জানাচ্ছেন ফয়সল আবদুল্লাহ