মেয়ে তুমি এতো রাতে একা কেনো রাস্তায়?

লুৎফর রহমান রিটন:


মেয়ে তুমি এতো রাতে একা কেনো রাস্তায়?
তোমাকে যায় না নেয়া এতোটুকু আস্থায়।
বাড়ি কই? থাকো কই? কোথা যাও বাপুরে?
রাতের পুলিশ মোরা, বাবুরাম সাপুড়ে।
বাজাবো তোমার বীন ঝাকানাকা আজিকে
পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি নচ্ছার পাজিকে!
মেয়েরা ঘরের শোভা। কিবা দিনে কি রাতে,
একা কেনো বেরিয়েছো এই রাত বিরাতে!


‘ভদ্র মেয়ে’রা রাতে একা যায় বাইরে?
ভালো করে তোকে আজ দেখে নিতে চাই রে।
সন্দেহ করি মোরা ‘মেয়েলোক’ মাত্রে
রিকশা-সিএনজিতে ঘোরাঘুরি রাত্রে!
‘ভালো মেয়ে’ একা ঘোরে? কাভি নেহি, কাভি না
আইনের হাত থেকে আজ পার পাবি না।
রাতের পুলিশ মানে যমদূত, বুঝলি?
একবার ছুঁয়ে দিলে হয়ে যাবে খুজলি।
ভেবেছিস চেকপোস্ট বসিয়েছি এম্‌নি?
নেমে আয়! নেমে আয়! যতো সব ঢেমনি!


কোত্থেকে এসেছেন? হোটেলের নামটা?
কোনো লাভ হবে না গো মেরে মুখ ঝামটা।
নাগরের সন্ধানে? রেটটা কি বান্ধা?
রাতের পুলিশ মোরা বুঝি সব ধান্দা।
পুলিশের খপ্পরে পড়েছেন অতীতে?
হম্বিতম্বি জল হবে দ্রুত গতিতে!
আপনি মডেল নাকি? চেহারায় মাঞ্জা…
ব্যাগ সার্চ করে দেখি? আছে মদ-গাঞ্জা?
সাহস তো কম নয়! মুখে মুখে তর্ক?
কার কার সাথে শুনি আছে সম্পর্ক?
‘ভালো মেয়ে’ ঘরে থাকে ‘বাজে মেয়ে’ বাহিরে
সে কথাটা বারবার বলে দিতে চাহি রে…


দেখো মেয়ে সেলফোনে করিতেছি ভিডিও
ভাইরাল করে দেবো পড়ে যাবে ঢিঁঢিঁ-ও!
পুলিশকে ঘাটিও না তুমি এই বঙ্গে
একশোটা ভূত থাকে পুলিশের সঙ্গে।
হইচই করলেই নিয়ে যাবো থানাতে
নতুন গল্প পারি ঝট করে বানাতে।
ফের কথা! বেয়াদব! সাহস তো কম না!
রস বের হয়ে যাবে নিয়ে গেলে রমনা।
লোকজন জেনে যাবে মেয়ে তুমি ‘ভালো না’
(ভালো যদি চাও তবে কিছু টাকা ঢালো না…)


হে পুলিশ করিও না নারী অবমাননা
(করিলে কী হতে পারে তা কি তুমি জানো না!)
এটা নয় অধিকার, মনে রেখো সূত্র
নও তুমি ইশ্বর। জমিদারপুত্র।
তুমি বাপু নেমে এসো মানুষের কাতারে
মর্যাদা দিতে শেখো বোন-বধু-মাতা রে।

ভাবিও না নারীগণ মানে অবগুন্ঠন
করিও না নারীদের মর্যাদা লুন্ঠন।
নারীর গর্ভে তুমি জন্মেছো, ভুলো না।
সম্মান করো তাঁকে, নেই তাঁর তুলনা।