পুলিস সূত্রের খবর, অদিতি জেরায় স্বীকার করেছে প্রতুল চক্রবর্তীর যাবতীয় ডকুমেন্টও খালে ফেলে দেয় সে। এদিকে প্রতুল চক্রবর্তীর কোনও আত্মীয় পরিজন না আসায়, এখনও দেহ সত্কার করা হয়নি। কোনও পরিজন না পাওয়া গেলে শেষ পর্যন্ত আইনি পদ্ধতি মেনে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমেই দেহ সত্কার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিস।
খড়দহের প্রৌঢ় প্রতুল চক্রবর্তীর খুনের তদন্তে নেমে কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে পড়ছে কেউটে! উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই ঘটনার পর্দাফাঁস করতে ১৪ বছরের আগে ঘটে যাওয়া বারাসতের চার জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুরও নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। ২০০৪ সালে অদিতির প্রথম পক্ষের স্বামী বারাসতের চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা জয়দীপ বিশ্বাসের মৃত্যু হয়। কয়েকদিনের ব্যবধানে ওই পরিবারে আরও তিন জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। মৃত্যু হয় জয়দীপের মা, পিসি ও পিসেমশাইয়ের। এরপর ওই বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে চলে যান অদিতি। অদিতি তাঁর প্রথম পক্ষের স্বামীর চাকরি পান।
প্রসঙ্গত অদিতির সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী প্রতুল চক্রবর্তীরও ডিভোর্স হয়েছে কিছুদিন আগে। এরপর থেকে ম্যাট্রি মনি সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে নতুন করে নিজের বিয়ের জন্য বেশ কয়েকজন যুবকের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। এরই ফাঁকে কলকাতার বাসিন্দা বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত এক যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে অদিতির। বয়সে ছোট সেই যুবকের সঙ্গে বিয়ে করারও পরিকল্পনা ছিল অদিতির। সেই সম্পর্কে বাধা দেওয়াতেই খুন হতে হয় প্রতুলকে।
প্রথম অদিতি পুলিসকে জানিয়েছিল, ঘটনার দিন প্রতুল তাকে খুন করার চেষ্টা করেছিলেন। নিজেকে বাঁচাতে প্রতুলকে খুন করেছে অদিতি। কিন্তু পরে জেরায় অদিতি স্বীকার করে, পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই প্রতুলকে খুন করেছে সে। ঘটনার দিন সাড়ে তিন ঘণ্টা প্রতুলের সঙ্গে খড়দার ওই ফ্ল্যাটে থাকে অদিতি। তারপর প্রতুলকে মদ্যপান করান। নিজেও মদ্যপান করেন। এরপর বালিশ চাপা দিয়ে প্রতুলকে খুন করে অদিতি। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে দেয়।
গত ২০ ডিসেম্বর খড়দহের শান্তিনগর খালপাড় থেকে উদ্ধার হয় প্রতুলবাবুর দেহ। শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে প্রথমেই সন্দেহ করে পুলিস। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া যায় মহিলাদের একটি রুমাল। উদ্ধার হওয়া সেই রুমালের সূত্র ধরেই প্রতুল চক্রবর্তীর স্ত্রী অদিতিকে গ্রেফতার করে খড়দা থানার পুলিস।