জাপানের মন্ত্রিপরিষদ এজন্যে ইমিগ্রেশনের নিয়ম-নীতি শিথিল করতে একটি খসড়া আইনও অনুমোদন করেছে। নতুন আইনে দু’ধরনের ভিসা ক্যাটাগরি তৈরি করা হচ্ছে, যার অধীনে কর্মী সংকট আছে এমন সব সেক্টরের জন্য বিদেশি কর্মী আনা যাবে।
জাপানের ইমিগ্রেশন আইন খুবই কড়া। সেদেশে বিদেশি কর্মীর সংখ্যা খুবই কম।
কিন্তু নতুন নিয়মে নির্মাণ, কৃষি খামার বা স্বাস্থ্য খাতের জন্য ব্লু কলার ওয়ার্কার আনা যাবে।
এ ধরনের কর্মীরা জাপানে পাঁচ বছর পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন যদি কিনা তাদের একটা নির্দিষ্ট মানের কাজের দক্ষতা থাকে এবং তারা জাপানি ভাষা আয়ত্ব করতে পারেন। তাদের পরিবার নিয়ে আসার সুযোগও দেয়া হবে।
আর উচ্চশিক্ষিত এবং দক্ষ কর্মীদের বেলায় পরিবার-পরিজন সহ জাপানেই স্থায়ীভাবে থাকার আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে।
জাপানের মন্ত্রিসভার অনুমোদন করা খসড়া আইনটি এখন পার্লামেন্টে পাশ হতে হবে।
তবে বিরোধী দলগুলো এই প্রস্তাবিত আইনের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তাদের আশংকা এর ফলে জাপানে মজুরি কমে যেতে পারে এবং অপরাধ বাড়তে পারে।
জাপান হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র উন্নত দেশে যেখানে ইমিগ্রেশনের ব্যাপারে এত কড়াকড়ি। এর ফলে জাপান বড় ধরনের সংকটে পড়েছে।
জাপানের জন্ম হার গত শতকের সত্তর দশক থেকে দুই দশমিক একের নীচে। এর মানে হচ্ছে, তখন থেকে জাপানের জনসংখ্যা কমছে। বর্তমানে এই হার এক দশমিক চার। এর বিপরীতে জাপানে মানুষের গড় আয়ু বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। এই দুটি মিলে জাপানে কর্মক্ষম মানুষের মারাত্মক সংকট।
বিবিসির সংবাদদাতা রূপার্ট উইনফেল্ড হেস বলছেন, এটি দেখার জন্য রাজধানী টোকিও ছেড়ে বেশিদূরে যেতে হয় না। স্কুলগুলো খালি পড়ে আছে। খেলার মাঠগুলো শূন্য। ধানের ক্ষেতে কাজ করতে হচ্ছে বৃদ্ধ লোকজনকে।
তবে জাপানে ধীরে ধীরে বিদেশি কর্মীদের আনতে দেয়া হচ্ছে। যেমন অনেক পাড়ার দোকান এখন পুরোপুরি নেপাল থেকে আসা তরুণ কর্মীদের দিয়ে চালানো হচ্ছে। এরা কাগজে-কলমে ছাত্র বা প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে জাপানে এসেছে। কিন্তু যাদের কর্মী দরকার তাদের ব্যবসা চালানোর জন্য, তারা এদেরকেই কাজে লাগাচ্ছেন।
জাপানের ব্যবসায়ীরা বহু বছর ধরেই যুক্তি দিচ্ছেন যে বিদেশ থেকে কর্মী আনার জন্য ইমিগ্রেশন আইন শিথিল করা দরকার।
তবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে বলছেন, তারা কেবল সেরকম কর্মীই আনবেন যাদের কোন একটি বিশেষ কাজে ভালো দক্ষতা আছে এবং যে ধরনের কর্মীর সংকট জাপানে আছে। -বিবিসি বাংলা