১৫০০ কোটি টাকার লোভে দেখিয়ে জিনের বাদশা হাতিয়ে নিলো সাড়ে ৩ কোটি টাকা!

১৫০০ কোটি টাকার লোভে দেখিয়ে জিনের বাদশা হাতিয়ে নিলো সাড়ে ৩ কোটি টাকা!

জিনের মাধ্যমে দেড় হাজার কোটি টাকা দেবে বলে সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মামলায় শুক্রবার তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন কথিত জিনের বাদশা দাবিদার হাফিজ কামরুল ইসলাম (২৬), তার পিতা আবদুল কাদির (৬০) ও তার মা রানু বেগম (৫০)। তাদের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার পুট বটতল গ্রামে।

তারা দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর ইশানকোনা গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী রহমত আলীর বাড়িতে ভাড়া বাসায় বসবাস করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।

জানা গেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলি ইউনিয়নের মকরমপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত মাস্টার আবদুল খালিকের ছেলে জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ী মাওলানা ইমরান আহমদ জিনের মাধ্যমে দেড় হাজার কোটি টাকা পাওয়ার লোভে সাড়ে ৩ কোটি টাকা খুইয়ে এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৮ সালে জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর গোয়ালগাঁও গ্রামের হাফিজ এনামুল হাসানের মাধ্যমে কথিত জিনের বাদশা হাফিজ কামরুল ইসলাম চক্রের সঙ্গে পরিচয় হয় ক্ষতিগ্রস্ত মাওলানা ইমরান আহমদের। একপর্যায়ে জিনের বাদশা দাবিদার হাফিজ কামরুল ইসলাম চক্রের প্রলোভনে পড়ে যান মাওলানা ইমরান আহমদ।

তাকে বলা হয়, ‘শিরনির জন্য নগদ সাড়ে ৩ কোটি টাকা দেয়া হলে জিন তাকে দেড় হাজার কোটি টাকা দেবে।’ এতে মাওলানা ইমরান আহমদ জিনের বাদশাকে কয়েক দফায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা প্রদান করেন।

পরে শর্তসাপেক্ষে মাওলানা ইমরান আহমদকে টাকা ভর্তি বলে ৫টি তালাবদ্ধ বড় ড্রাম ও ২টি বড় ট্রাংক দেয়া হয়। পরে এসব ড্রাম ও ট্রাংকের তালা ভেঙে দেখা যায় এতে টাকার পরিবর্তে কাগজ, ময়লা কাপড়চোপর ও খালি বস্তা রয়েছে। এদিকে এ ঘটনার পর কথিত জিনের বাদশা চক্র জগন্নাথপুর থেকে পালিয়ে যায়।

অবশেষে ২৩ এপ্রিল প্রতারণার শিকার মাওলানা ইমরান আহমদ বাদী হয়ে কথিত জিনের বাদশা হাফিজ কামরুল ইসলামসহ তার পরিবারের ৫ জনকে আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থানার এসআই হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ দল নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার পুট বটতল গ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিনের বাদশা হাফিজ কামরুল ইসলাম ও তার মা-বাবাকে গ্রেফতার করেন।

একইসঙ্গে মামলার বাদী মাওলানা ইমরান আহমদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তালাবদ্ধ বড় ৫টি তেলের ড্রাম ও ২টি বড় ট্রাংক। এতে টাকা থাকার কথা থাকলেও আছে বিভিন্ন কাগজ, ময়লা কাপড়-চোপড় ও খালি প্লাস্টিকের বস্তা। এছাড়া আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এসব তেলের ড্রাম ও ট্রাংকের তালার চাবি। গ্রেফতারকৃতদের শুক্রবার সুনামগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

জগন্নাথপুর থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। শুক্রবার এই প্রতারকচক্রকে গ্রেফতার করে সুনামগঞ্জ জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

জিনের বাদশা