ঢাকা ব্যাংকে জালিয়াতি : ৩ হাজার টাকার ডিপিএস হয়ে গেল ২ হাজার টাকা!

দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর আর্থিক লেনদেনের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর গণশুনানীতে। বৃহস্পতিবারের এই অনুষ্ঠানে বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঢাকা ব্যাংকের একটি ডিপোজিট পেনসন স্কিম ( ডিপিএস ) এ বড় ধরণের জালিয়াতির অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ পেয়েই দুদক কমিশনার ঢাকা ব্যাংক কক্সবাজার শাখার কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক নিরসনের নির্দেশনা প্রদান করেন।

কক্সবাজারের এন্ডারসন রোডের বাসিন্দা বিশিষ্ট ঠিকাদার আতিকুল ইসলাম সিআইপি দুদকের গণশুনানীতে উপস্থিত হয়ে ঢাকা ব্যাংক কক্সবাজার শাখা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগ হচ্ছে, ২০০৭ সালে তার স্ত্রী ফারজানা ইয়াসমীনের নামে মাসিক তিন হাজার টাকার একটি ডিপিএস খোলা হয়েছিল। বার বছর মেয়াদী উক্ত ডিপিএস মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পর তিনি ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে যান। আর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন মাসিক দুই হাজার করে কিস্তির সঞ্চয়ী টাকা।

অভিযোগকারী আতিকুল ইসলাম বলেন, মাসিক তিন হাজার টাকার কিস্তি কি করে দুই হাজার টাকা হয়? কেবল ঢাকা ব্যাংক নয় প্রায় সবগুলো বেসরকারি ব্যাংকে ঘটছে এরকম জালিয়াতি। তিনি দুদকের অ্যাকশন দাবি করেন।

দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক তলব করে সন্ধ্যার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা ব্যাংক কক্সবাজার শাখার ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা যথারীতি মাসিক তিন হাজার টাকা করে যাবতীয় কিস্তির টাকা পরিশোধে সম্মতির কথা জানিয়েছি সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের অ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দীন আহমদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গণশুনানী সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার। শুনানীতে পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নুরুল আমিন, মোহাম্মদ ইউনুস ও বিলকিস বানু বলেন, তারা দীর্ঘদিন আগে সংযোগের জন্য আবেদন করেন। সংযোগ ফি ৪০০ টাকার স্থলে যথাক্রমে এক হাজার ও চার হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে নেওয়া হয়। কিন্তু সংযোগ পাননি।

দুদক কমিশনার পল্লীবিদ্যুতের জিএমকে নির্দেশনা দেন শুনানী চলাকালীন সময়ের মধ্যে সংযোগ প্রদানসহ অতিরিক্ত টাকা ফেরৎ দেওয়ার।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কর্মীরা আদালতের বিচারাধীন মামলার আওতাধীন জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ এক কোটি ৭৮ লাখ টাকার একটি চেক প্রদানের অভিযোগ তুলেছেন ফরিদ মাহমুদ সিদ্দিকী নামের একজন।

রামুর মোহাম্মদ ওসমান নামের একজন জমির মালিক মাসুদ রানা নামের একজন সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে শতকরা ৪৫ টাকা করে ঘুষ দাবির অভিযোগসহ আরো বেশ কয়েকজন নানা অভিযোগ তুলেন। কমিশনার এসব অভিযোগ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করে দুদককে জানাতে নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

অনুষ্ঠানে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল নিয়ে নাজিম উদ্দিন ও কক্সবাজার বিচ ম্যানেজমেন্টের অব্যবস্থাপনা নিয়ে কলিম উল্লাহসহ আরো কয়েক ব্যক্তি নানা বিষয়ে অভিযোগ তোলেন।