ঢকঢক করে পানি পান করে ডেকে আনছেন মারাত্মক বিপদ

শারীরিক সমস্যা মানেই বেশি করে পানি খেতে হবে। পানিই আমাদের শরীরের অর্ধেক অসুখ দূর করে দেয়। এমন পরামর্শ আমরা সবাই কম বেশি শুনতে অভ্যস্ত। বাচ্চাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়ানো নিয়ে মায়েদের নাজেহাল দশার ছবিও নতুন কিছু নয়।

কিন্তু এখানেই লুকিয়ে রয়েছে অচেনা বিপদ। জীবনে সবকিছুর যেমন নিয়ন্ত্রণ দরকার হয়, তেমনই পানিপানেরও সঠিক ব্যালান্স রাখা জরুরি।

গবেষকরা বলছেন- প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পানি খেলেই সর্বনাশ! শরীরে পানির ঘাটতি হলে যেমন ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় কাবু হতে হয় আমাদের, তেমনই পানির আধিক্য হলে ওভার-হাইড্রেশন হতে পারে, যা থেকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার মধ্যে প্রধান, শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যাওয়া।

হাইপোনেট্রিমিয়া, অর্থাৎ শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যাওয়া, মগজ স্ফীতির জন্য দায়ী। এ ধরনের সমস্যা সাধারণত বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়।

মাথায় আঘাত, পচন, হৃদরোগজনিত সমস্যা থাকলে সাধারণত হাইপোনেট্রিমিয়ার সম্ভাবনা থাকে। মস্তিষ্কের হাইড্রেশন সেনসিং মেকানিজমে প্রভাব ফেলে এটা।

ডিহাইড্রেশন হলে তা যেভাবে মস্তিষ্কের হাইড্রেশন সেনসিং নিউরন চিহ্নিত করতে পারে, ওভারহাইড্রেশনের ক্ষেত্রে এই নিউরন তা পারে না। যার জেরেই সমস্যা হয়, এমনটাই মনে করছেন গবেষকরা।

গবেষকদের সাবধানবাণীর পর এবার থেকে সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত সারাদিনে ক’গ্লাস পানি খাচ্ছেন, তার হিসেব রাখা আপনার ডেইলি রুটিনের মধ্যে রাখতে হচ্ছেই।

ঘুরতে ফিরতে কি আপনার ঘন ঘন পানি খাওয়ার বদ অভ্যেস রয়েছে? কিছু খান বা না খান, ঢকঢক করে কি পানি খেয়ে ফেলেন? তাহলে কিন্তু বিপদ!

শরীর ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু তা বলে অতিরিক্ত পরিমাণে পানি খেলে শরীরে লবণের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে নানা ধরনের রোগ-ব্যাধী হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই তৃষ্ণা না পেলে পানি না খাওয়াই ভাল।

ভারি খাবার, যেমন ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ অথবা ডিনারের পরে পানি খাওয়াটা একেবারেই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। খাওয়ার আগে পানি খেলেও খাওয়ার পরে পানি একবারেই খাওয়া চলবে না। আর খাবার খাওয়ার সময় ঘন ঘন পানি খাওয়ার অভ্যাস একবারেই বর্জন করুন।

হালকা শরীরচর্চার পর সামান্য পরিমাণ পানি খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু ভারি ওয়ার্কআউটের পর পানি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। আসলে শরীরচর্চার সময় ঘামের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল (খনিজ) বেরিয়ে যায়। এই ঘাটতি মেটাতে শরীরচর্চার পর ডাবের পানি খাওয়া চলতে পারে। কিন্তু পানি একেবারেই নয়।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘক্ষণ শরীরচর্চার পর পর দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যায়। এই সময় ঠান্ডা পানি খেলে তা দেহের তাপমাত্রার সঙ্গে বাইরের পরিবেশের তাপমাত্রার সামঞ্জস্য রাখতে পারে না। ফলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

health tips