স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করেন, নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এস এম শফিকুল ইসলামের গুণ্ডাদের তাণ্ডবে আওয়ামী লীগের কর্মীরা বাড়িছাড়া হয়েছে। প্রাণের ভয়ে কর্মীরা খুলনা, আশাশুনি ও সাতক্ষীরা শহরের আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছে।
খুলনা জেলা বঙ্গবন্ধু আইনজীবী সহকারী সমিতির দপ্তর সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী সানা অভিযোগ করেন, নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মারপিট ও হামলার শিকার হচ্ছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী রেজাউল করিম বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের রামদার কোপে জখম হয়েছেন। মহারাজপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ওহিদ মোড়ল লাঞ্ছিত হয়েছেন। উত্তর বেদকাশি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক আবু বক্কার সিদ্দিকীর স্ত্রী তসলিমা খাতুন ও পুত্রবধূ ফাতেমা খাতুনকে অপমাণিত করা হয়েছে। উপজেলায় শাসক দলের ৫০০ নেতাকর্মী প্রাণের ভয়ে বাড়িছাড়া হয়েছে। তাদের অপরাধ বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরোধিতা ও আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে সমর্থন দেওয়া।
আইয়ুব আলী সানা বলেন, খুলনার দক্ষিণ প্রান্তের জনপদ কয়রা উপজেলা জামায়াত অধ্যুষিত বলে বদনাম রয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপির সমর্থকরা আওয়ামী লীগের বিরোধী প্রার্থীকে সমর্থন দেয়। তাদের সমর্থনে এবার বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম শফিকুল ইসলাম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ফল ঘোষণার পর তাঁর সমর্থকরা উপজেলায় তাণ্ডব চালাচ্ছে।
অন্যদিকে নৌকা প্রতীক সমর্থন করায় দৈনিক খুলনাঞ্চল পত্রিকা ও আজকের সংবাদের কয়রা প্রতিনিধি কয়রা প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মো. শাহজাহান সিরাজকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে চেয়ারম্যান সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিক সিরাজ প্রাইভেট পড়ানো শেষে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে খেদুর ব্রিজের কাছে আগে থেকে ওত পেতে থাকা নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলামের জামাতা শামীম, তার ভাই শাহীন, দেলোয়ার, ইকবাল, ইয়াকুব, আক্তারুল, কামাল, আসাদুল, জুবায়ের, আবু সাঈদসহ ১৪-১৫ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে সিরাজকে কুপিয়ে আহত করে। তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করে নদীতে ফেলে দেয়। সিরাজের চিৎকারে লোকজন ছুটে এসে শাহিন নামের এক যুবককে দাসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। গুরুতর অবস্থায় সিরাজকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ এ ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আহত সিরাজ হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
কয়রা থানার ওসি তারক বিশ্বাস বলেন, সাংবাদিক শাহজাহান সিরাজের ওপর হামলায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা শান্ত রাখতে কাজ করছে।