এত দিন তাঁকে দেখলে দর্শকেরা স্লোগান দিত ‘মাশরাফি’, ‘মাশরাফি’ বলে। এখন সেটি রূপ নিয়েছে নৌকা-নৌকায়। রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন, আওয়ামী লীগের হয়ে নড়াইল-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবেন, মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দেখলে ‘নৌকা-নৌকা’ স্লোগান হওয়াটা অস্বাভাবিকও নয়। বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়কের জন্য অবশ্য এই অভিজ্ঞতা একেবারেই নতুন। তা গ্যালারি থেকে ভেসে আসা এ স্লোগান কীভাবে দেখেন, ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্ন হলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা মাশরাফির, ‘আমার দেখার তো কিছু নেই।’
কঠিন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে মাশরাফিকে। এশিয়া কাপ থেকে পিছু নিয়েছে চোট। ভালো করতে পারেননি এশিয়া কাপ ও জিম্বাবুয়ে সিরিজে। এর মধ্যে আবার যোগ হয়েছে রাজনীতি। রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে ক্রিকেট থেকে মনোযোগ সরে যাবে কি না, খেলায় সেটির প্রভাব পড়বে না তো? নানা সংশয়, নানা প্রশ্ন মাশরাফিকে ঘিরে। আজ নিজের ২০০ তম ওয়ানডেতে দুর্দান্ত বোলিং করে ম্যাচের নায়ক হয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক যেন সব প্রশ্নের জবাব দিলেন।
মাশরাফি অবশ্য মনে করেন না, তাঁর জবাব দেওয়ার কিছু আছে, ‘না, জবাবের কী আছে? জবাব দেওয়ার কিছু নেই। খারাপ হলেই কথা বলত। না, জবাব দেওয়ার কিছু নেই। ১৮ বছর ধরে খেলছি। এত সহজে মনোযোগ সরার কথা না। আমি আমার নিজেকে তো চিনি। এত সহজে মনোযোগ সরে যাওয়ার কথা নয়। গত কিছুদিনে নিজেই চেষ্টা করে যাচ্ছি—বলটা যেখানে করতে চাই, সেখানে করতে পারছি কি না। এটাতে মনোযোগ দিয়ে যাচ্ছি। জবাব দেওয়ার কিছু নেই।’
আসলেই জবাব দেওয়ার কিছু নেই? কদিন আগেও দলমত নির্বিশেষে সবাই তাঁকে ভালোবেসেছে। রাজনীতিতে নাম লেখানোর পর থেকেই এ দৃশ্যে এসেছে বদল। মাশরাফি খারাপ করলেই প্রশ্ন তুলবে অনেকে। তাদের জবাব দেওয়ার উপায়ও যে জানা আছে তাঁর, যেটি আজ করে দেখালেন ওয়ানডে অধিনায়ক।
আজ নিজের প্রথম বলেই চার খেয়েছেন। মাশরাফি ভক্তদের বুকটা ধক করে ওঠার কথা তখনই! কিন্তু না, এরপর মাশরাফি বল করে গেলেন টানা। হাঁসফাঁস তুলে দিলেন ক্যারিবীয়দের। নিজের ৭ ওভারের প্রথম স্পেলেই দিয়েছেন ৩২টা ডট! ১৪ রান দিয়ে ২ উইকেট। ২ ওভারের দ্বিতীয় স্পেলটাও হলো দুর্দান্ত। ৫ রানে উইকেট নিলেন একটি। এমনকি স্লগ ওভারে ১১ রান দিয়েও দিনের সেরা বোলার মাশরাফিই। ১০ ওভার, ৩০ রান,৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট!
মাশরাফি জানিয়ে দিলেন, দলের যে বইঠা তিনি ধরে আছেন শক্ত হাতে, তা সহসাই খসে পড়ার নয়।