২০০ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ মুখের ঘা

২০০ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ মুখের ঘা

মুখের ভেতরের মাংসে বা জিহ্বার ঘা খুবই কষ্টকর, কিছু খেতে গেলেই জ্বালা করে, ব্যথা করতে থাকে। চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী, প্রায় ২০০ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় মুখগহ্বরের ঘা থেকেই। বর্তমানে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ থেকে শুরু করে ক্যানসার, এমনকি এইডস (AIDS)-এর মতো মারাত্মক রোগ শরীরে বাসা বাধতে পারে।

শুধু তাই নয়, গর্ভাবস্থাতেও শরীরে নতুন করে বাসা বাধা অনেক রোগের লক্ষণ ঘা থেকে প্রকাশ পায়।

সাধারণত, গালের ভেতরের অংশে বা জিহ্বায় কোনোভাবে কেটে গেলে ঘা হতে পারে। শক্ত ব্রাশের খোঁচা লেগেও এই সমস্যা অনেকেরই হয়। খুব গরম খাবার বা পানীয় খেতে গিয়ে ছাল উঠে গেলে বা গালের ভেতরে কামড় লাগলেও এই রকম ঘা হতে পারে। মুখের ঘায়ের ক্ষেত্রে এগুলো খুবই সাধারণ কারণ। এ ছাড়াও নানা মারণব্যাধির প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে মুখের ভেতরে ঘা হতে পারে।

যাদের হৃদরোগ বা ডায়াবেটিস আছে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম এবং দীর্ঘদিন ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের মুখেও এক ধরনের ক্ষতিকর জীবাণু বাসা বাধতে পারে।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ধূমপান বা জর্দা দিয়ে পান অথবা নানা ধরনের পান মশলা খাওয়ার অভ্যাস আছে, তাদের মধ্যে মুখের ঘা বা মুখে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। বিশেষত, যারা পানের সঙ্গে জর্দা খান এবং অনেকবার পান খান তাদের মুখের ঘা বেশি হয়।

সাধারণত ভিটামিন বি-১২ বা আয়রনের অভাবেই এই সমস্যা বেশি হয়। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন, ফল, দুধ, শাক-সবজি, মাছ এবং চর্বি ছাড়া মাংস খাওয়া জরুরি। এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, আয়রন ও জিঙ্ক থাকায় মুখে ঘায়ের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

মুখ আমাদের শরীরের খুবই স্পর্শকাতর একটি অংশ। তাই নিজে নিজে কোনো ওষুধ ব্যবহার করতে যাবেন না। যা-ই করবেন, তা অবশ্যই যেন হয় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।

সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো চিকিৎসার পরও মুখের ঘা যদি দু’সপ্তাহ থেকে তিন সপ্তাহ স্থায়ী হয়, তবে অবশ্যই বায়োপসি বা মাংসের টিস্যু পরীক্ষা করে দেখতে হবে। কারণ, মুখের বেশ কিছু ঘা বা সাদা ক্ষতকে বিজ্ঞানীরা ‘প্রি-ক্যানসার লিশন’ বা ক্যানসারের পূর্বাবস্থার ক্ষত বলেই ব্যাখ্যা করে থাকেন। সুতরাং আগেভাগেই সতর্ক হওয়া জরুরি। আর মুখের ভেতরের অংশে ঘা হওয়া মাত্রই চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।

মুখের ঘা