শরীরে পানি জমা : কারণ ও প্রতিকার

বিভিন্ন কারণে দেহে পানি জমা সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে হাত, পা ও মুখমণ্ডলে। অনেকে শরীরে পানি জমলে ওষুধ খেয়ে থাকেন। কিন্তু অনেকসময় এসব ওষুধের কারণে পানি জমার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। মূলত এ সমস্যার সমাধানের জন্য প্রয়োজন জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা।

শরীরে পানি জমার সমস্যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এডিমা বলা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে শরীরে পানি জমার কারণ কী? আর তা প্রতিকারের উপায়ই বা কী? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

একটানা অনেকক্ষণ বসে থাকলে- 

অনেক বেশি সময় বসে কিংবা দাঁড়িয়ে থাকলে দেহের রক্ত সংবহন কমে যায়। এর ফলে দেহে পানি জমতে পারে। এটি প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হলো শারীরিক সক্রিয়তা বৃদ্ধি করা। একটানা অনেকক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে না থেকে হাঁটাহাঁটি করুন। প্রতি ২/৩ ঘণ্টা পরপর ওয়াশরুমে যাওয়ার অভ্যাস করুন।

পানি পানে ঘাটতি-

পর্যাপ্ত পানি পান না করা দেহে পানি জমার খুব সাধারণ একটি কারণ। কেননা, শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে ইলেকট্রোলাইটের লেভেল বৃদ্ধি পায়। যার ফলে শুরু হয় পানি জমা। তবে এর মানে এই নয় যে খুব বেশি পানি পান করবেন। একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক ৩-৪ লিটার পানি পান করাই যথেষ্ট।

নানা স্বাস্থ্য সমস্যা- 

কিডনি রোগ, হৃদরোগ, লিভার ইনফেকশন অথবা ব্রেইন টিউমার ইত্যাদি স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে শরীরে পানি জমতে পারে। এমন কোনো সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া- 

বিভিন্ন ওষুধ যেমন ব্লাড প্রেশারের ওষুধ এম্লোডিপিন সেবনের ফলে দেহে পানি জমতে পারে। এছাড়াও নন স্ট্যারয়ডাল অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ঔষধ, কর্টিকোস্ট্যারয়েডস এবং বার্থ কন্ট্রোল পিল এডিমা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। তবে কোনো ওষুধ বাদ দেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।

মাত্রাতিরিক্ত লবণ খাওয়া- 

শরীরে পানি জমার আরেকটি কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া। সোডিয়াম পানিকে আবদ্ধ করে ফেলে এবং শরীরের কোষের ভেতরের ও বাহিরের তরলের মাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই, উচ্চমাত্রার সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন- প্রসেসড ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ভাতের সঙ্গে বাড়তি লবণ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা বদলে ফেলুন।

দেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান ম্যাগনেসিয়াম। এটি দেহে অতিরিক্ত পানি জমার সমস্যা কমিয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক ২০০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণে নারীদের দেহে পানি জমার সমস্যা কমে। বাদাম, হোল গ্রেইন, ডার্ক চকলেট, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদিতে ম্যাগনেসিয়াম থাকে। তাই এসব খাবার গ্রহণের মাধম্যে পানি জমা সমস্যা কমাতে পারেন।