প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ‘ধ্বংস পাহাড়’ উপন্যাস অবলম্বনে নতুন চলচ্চিত্র তৈরি করবে। ‘মাসুদ রানা’ চরিত্রে কে অভিনয় করবেন? আগেই জানানো হয়েছে, একটি রিয়্যালিটি শোর মাধ্যমে ‘মাসুদ রানা’র জন্য একজনকে খুঁজে বের করা হবে। ‘কে হবে মাসুদ রানা’ শিরোনামের এরই মধ্যে এই রিয়্যালিটি শোর আয়োজন করেছে চ্যানেল আই। আর বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাছাই করার কাজটি করবেন বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস আর নায়িকা পূর্ণিমা।
এই রিয়্যালিটি শোর বিচারক হিসেবে এরই মধ্যে চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ফেরদৌস ও পূর্ণিমা। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এই আয়োজনের পুরো কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। তার আগে প্রমো আর ফটোশুটে অংশ নেবেন ফেরদৌস ও পূর্ণিমা।
‘মাসুদ রানা’ খোঁজার এই আয়োজন সম্পর্কে জানতে আজ শুক্রবার সকালে কথা হয় চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার সঙ্গে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমরা একজন নায়ককে খুঁজে বের করে আনব। এমন একজন নায়ক, যাঁর মধ্যে নায়ক হওয়ার সব গুণ থাকবে। প্রতিযোগীদের সেভাবেই দেখব আমরা।’
এর আগেও ফেরদৌস আর পূর্ণিমা একটি রিয়্যালিটি শোর বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন, নাচবিষয়ক সেই রিয়্যালিটি শোর আয়োজন করেছিল চ্যানেল আই। পূর্ণিমা বলেন, ‘এর আগে আমরা নৃত্যশিল্পী খুঁজে বের করেছিলাম, এবার নায়ক খোঁজা হবে। এবারের আয়োজনটি একেবারেই অন্য রকম।’
‘মাসুদ রানা’ খোঁজার কাজটি চ্যালেঞ্জিং হবে? পূর্ণিমা বলেন, ‘কিছুটা তো হবেই। নায়কের পাশাপাশি মাসুদ রানা হওয়ার মতো যোগ্যতা আছে কি না, সেটাও আমরা দেখব।’
কাজী আনোয়ার হোসেনের ‘ মাসুদ রানা ’ চরিত্রে অভিনয়ে আগ্রহী তরুণদের জন্য আয়োজন করা হচ্ছে রিয়্যালিটি শো ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ম্যানস ‘কে হবে মাসুদ রানা’। যেকোনো বাংলাদেশি কিংবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন। রিয়্যালিটি শো’র সঙ্গে যুক্ত আছে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার। রিয়্যালিটি শোতে নির্বাচিত তিন তরুণ অভিনয় করবেন মাসুদ রানা সিরিজের ‘ধ্বংস পাহাড়’, ‘ভরতনাট্যম’ ও ‘স্বর্ণমৃগ’ উপন্যাস অবলম্বনে তিনটি চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্রগুলো নির্মাণ করবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া। এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে জানিয়েছে, ২০১৮ সালেই শুরু হচ্ছে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ‘ধ্বংস পাহাড়’ অবলম্বনে প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ।
জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ বলেন, ‘গত শতকের ষাট থেকে নব্বই দশকের বাংলাদেশের তরুণেরা বড় হয়েছে মাসুদ রানা পড়ে। এখনো বিশাল একটি জনগোষ্ঠী মাসুদ রানা পড়ছে। যেকোনো নতুন মাসুদ রানার প্রথম সংস্করণে ২০ হাজার কপি ছাপা হয়। এই দেশে এটি এখনো প্রকাশনার জগতে একটি বড় সংখ্যা। আমাদের নিজেদের কোনো সুপার হিরো নেই—নেই সুপারম্যান, স্পাইডারম্যান। আমাদের কাছে সুপার হিরো মানেই মাসুদ রানা। তাই তাকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে আগ্রহী হয়েছি।’
বাংলাদেশে মাসুদ রানাকে নিয়ে প্রথম চলচ্চিত্র তৈরি হয় ১৯৭৪ সালে; সিরিজের ‘বিস্মরণ’ অবলম্বনে ‘মাসুদ রানা’ নামে চলচ্চিত্রটি তৈরি করেন চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ বা সোহেল রানা। চলচ্চিত্রটির মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে জনপ্রিয় এ নায়কের। এরপর ‘মাসুদ রানা’ নিয়ে আর কোনো চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়নি। ছোট পর্দায় আতিকুল হক চৌধুরী এই সিরিজের ‘পিশাচ দ্বীপ’ নিয়ে ‘প্রাচীর পেরিয়ে’ নামে একটি নাটক বানিয়েছিলেন, তাতে মাসুদ রানা হয়েছিলেন জনপ্রিয় মডেল আদিল হোসেন নোবেল।