একটা ফাঁকা ছেলে খুঁজে দিন, আই উইল লভ টু ডেট, বলছেন স্বস্তিকা

স্বস্তিকা

টলিউড, বলিউড ছেড়ে হঠাত্ স্বস্তিকা মরাঠি ছবিতে কেন?

আমি সব সময়েই ভাল কাজ, ইন্টারেস্টিং কাজ করতে চাই। ভাষাটা আজকালকার দিনে কোনও সমস্যা নয়। নেটফ্লিক্সে তো সবই আমরা সাবটাইটেলে দেখি। আমার এই প্রথম মরাঠি ছবি ‘আরন’-এও ইংলিশ সাবটাইটেল আছে। পোস্টারেও মেনশন করেছি আমরা।

ঠিকই। ভাষা এখন আর সমস্যা নয়। তবুও ‘আরন’-কেই বেছে নিলেন কেন?

স্ক্রিপ্ট। স্ক্রিপ্টটা খুবই পছন্দ হয়েছিল আমার। মরাঠি ইন্ডাস্ট্রির অনেক বড় নাম আমার রোলটার জন্য প্রায় কনফার্ম হয়ে গিয়েছিল। তখন আমার কাছে খবরটা আসে। স্ক্রিপ্টটা পড়ে আমি ইমোশনালি মুভড হয়ে যাই। খুব চার্জড লেগেছিল। আমার মনে হয়েছিল যদি কোনও ভাবে রোলটার মধ্যে ফিট ইন করে, ডিরেক্টরকে কনভিন্স করে কাজটা করতে পারি তা হলে আমার যেটা সব সময় প্রায়োরিটি মনে হয়েছে কেরিয়ারে যে, ছবি দেখে বেরিয়ে যেন লোকের আমার পারফরম্যান্স, আমার কন্ট্রিবিউশনটা মনে থাকে, তেমন একটা রোল করতে পারি, সেটার প্রচুর জায়গা এই ক্যারেক্টারটায় আছে। আই ক্যান মেক আ মার্ক মনে হয়েছিল।

আবারও জানতে চাইছি, ভাষা এখন আর সমস্যা নয়, ঠিক। কিন্তু আপনার অন্য ভাষায় অভিনয় করতে কি সমস্যা হয়েছিল?

(দীর্ঘশ্বাস) এর থেকে বেশি ডিফিকাল্ট লাইফে আর কিছুই হয় না। আমার যখন কাস্ট কনফার্ম হয় শুটিং শুরু হওয়ার আর এক মাস বাকি ছিল। আমি তখন মুম্বইতেই ছিলাম। শুটিংয়ের আগে ওয়ার্কশপ করেছিলাম। অ্যাকসেন্ট নিয়ে সময় দিয়েছিলাম। শুটিংয়ে ড্রেসার থেকে শুরু করে প্রোডাকশনের লোক, ড্রাইভার, যে খেতে দিত, সবাইকে পাতা ধরিয়ে বলতাম, মুখস্থ হয়েছে কি না দেখ, আর উচ্চারণ ঠিক হচ্ছে কি না দেখ (হাসি)।

উচ্চারণ নিয়ে শুটিংয়েই এতটা কনশাস ছিলেন! ওটা তো ডাবিংয়ে কারেকশনের সুযোগ ছিল?

না। এটা তো সিঙ্ক সাউন্ড। ডাবিং হয়নি। (হাসতে হাসতে) মানে, একটা বাঁশও বাইরে পড়েছিল না। সব আমি কুড়িয়ে বাড়িয়ে নিয়ে নিয়েছিলাম। আর আমি শুটিংয়ে গিয়ে শুনেছি এটা সিঙ্ক সাউন্ড। আগে জানতাম ডাবিং হবে। আমিই ডাবিংটা করব। তা-ও একটা কারেকশনের জায়গা থাকে সেখানে। সময় নিয়ে করা যায়। শুধু ওটাতেই কনসেনট্রেট করা যায়। এই ছবিটায় সেগুলোর কোনও জায়গাই ছিল না। মানে প্রত্যেক দিন পরীক্ষা, আর প্রত্যেক দিন ক্লাসে ফার্স্ট হতে হবে। ও রকম প্রেশার ছিল। খুবই কষ্ট হয়েছে। ত্রাহি ত্রাহি রব বলে না, ও রকম হয়েছিল বলতে পারেন।

 

শিখতে হয়েছে তো মরাঠি?

শুধু মরাঠি নয়। ফরাসিও। প্যারিসে অনেকগুলো সিনে মরাঠিও বলতে হয়েছিল, ফরাসিও বলতে হয়েছিল। একটা ভাষাও আমি জানতাম না। চরিত্রটা খুবই ইনটেন্স। মানে কোনও লাইট মোমেন্ট ছিল না যে মজা করতে করতে ডায়লগ বলে দিতে পারব। একটা সিন ছিল, ফোনে বাড়িতে মরাঠিতে কথা বলছি। আর মুখ ঘুরিয়ে ওখানকার লোকদের সঙ্গে ফ্রেঞ্চে কথা বলছি। খুবই হিটেড কনভারসেশন ছিল। অ্যাগ্রেসিভ আলোচনা। দুটো ভাষার কোনওটাই আয়ত্তে ছিল না। আমার জাস্ট মনে হচ্ছিল, ভূমিকম্প হোক…।

 

কেন?

মানে ভূমিকম্প হয়ে শুটিংটা বন্ধ হয়ে যাক। আমি বেঁচে যাই। এক দিন এত স্ট্রেস হয়েছিল আমি পরিষ্কার বাংলায় ওঙ্কারকে (পরিচালক) বলেছিলাম, আমি বাড়ি যেতে চাই। আমাকে একটু এয়ারপোর্টে নামিয়ে দাও। (হাসতে হাসতে) ও বলছে, কেয়া হো গ্যয়া? থোড়া শান্ত হো যাও। পানি পি লো। আমি বলেছিলাম, আর পানি ফানি পি করে কিছু হবে না…। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি, বাড়ি যাব। আমি জানি না কী করে করে ফেললাম।

এ ধরনের চরিত্র নিশ্চয়ই আগে করেননি?

আমার সব সময়েই মনে হয় নিজেকে রিপিট করব না। একটা অন্য ভাষায় কাজ করতে গিয়েও সেটা মেনটেন করতে পেরেছি। চরিত্রের কাঠামো, মেকআপ কোনও কিছুই আমি আগে করিনি। চরিত্রের নাম আলিটা আপ্টে। সেকন্ড জেনারেশন এনআরআই। বেশি সময়ই প্যারিসে থেকেছে। আলিটা মরাঠিকে বিয়ে করেছে। ফলে আমাকে অথেনটিক মরাঠি বলতেই হবে, এই চাপটা ছিল না। চরিত্রটাই সে রকম ছিল। ফিল্ম ইজ অ্যাবাউট দ্য মিসিং লিঙ্ক। আমার চরিত্র নিয়েই যত ঝামেলা ছবিতে। ফলে আর বেশি বলতে পারব না।

‘আরন’-এর একটি দৃশ্যে স্বস্তিকা।

ছবিটা মিসিং লিঙ্ক বলছেন। এ দিকে ইদানীং একটা ব্যাপারে তো স্বস্তিকা একেবারে মিসিং!

 

কোন ইস্যু?

#মিটু। এত কথা হচ্ছে। আপনি তো মুখই খুলছেন না…

ওহ্ গড। আমাদের এখানে, মানে কলকাতায় তো কোনও কথাই হয়নি। কলকাতায় মিটু মুভমেন্টের কোনও আঁচই পড়েনি।

 

তাই?

অফকোর্স। বলুন তো এখানে কটা লোক কথা বলছে এটা নিয়ে? আমরা সবাই ভাই-ভাই, বোন-বোন। লভ, অ্যাফেকশন, কেয়ার নিয়ে আমাদের সংসার। আমাদের এখানে এ সব হয় না। আমরা জানিই না।

 

রেগে আছেন মনে হচ্ছে?

রাগ নয়। দেখুন এমন কোনও ঘটনা আমি ফেস করিনি। কারণ আমি ফেস করলে কোনও মুভমেন্টের জন্য থোড়ি না বসে থাকব? তখনই মাথাটা দেওয়ালে ঠুকে দেব। মুখও ভাঙব। আমার কোনও পেশেন্সই নেই অ্যাকচুয়ালি। আমার পেশেন্স মাইনাসে রান করে। কবে মুভমেন্ট হবে, কবে আরও ১০ জন মুখ খুলবে তখন আমি নিজে মুখ খুলব কেন? যখন যা খোলার তখনই খুলব না…। অবভিয়াসলি আমার সঙ্গে হয়নি এটা। এখন তো কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এটা বলার পর তো ভয়ের চোটে আরওই লোকে ট্রাই করবে না। আমার মনে হয় যাদের সঙ্গে এগুলো ঘটেও তারা মনে হয় নিজেদের বন্ধুবান্ধবদের মধ্যেও এগুলো আলোচনা করে না।

কেন এমন মনে হয়?

স্বস্তিকা : দেখুন, একটা কথা আমি তো সব সময় বলি, ইফ ইউ গিভ ইন তার পরে চেঁচামেচি করে লাভ নেই। এই মুভমেন্টটার গভীরতা বা রেসপন্সিবিলিটা বা কেন এটা এত বড় আকার নিতে পেরেছে? কারণ যারা হ্যাঁ-তে হ্যাঁ বলে নিজেদের জীবনটা, নিজেদের কেরিয়ার, সম্মান, অস্তিত্বটাকে প্রাধান্য দিয়ে সেই কাজটাই করেনি তাতে তারা ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছে। তাদের কেরিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছে। তারা মানসিক ভাবে আঘাত পেয়েছে। কিন্তু তারা সেটাতে হ্যাঁ বলেনি। আর এখন বলেছে বলেই এটা একটা মুভমেন্টের আকার নিয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে এ রকম অনেক মহিলাও আছে যারা এটা থেকে অ্যাডভান্টেজও তুলেছে। যাদের কেরিয়ার সেটলড, কেউ একটা হয়ে গিয়েছে তারা এখন বলছে আমার সঙ্গেও এটা হয়েছিল, এখন এই চিত্কারটার তো কোনও মানে নেই। আমার সঙ্গে কেউ একটা প্রথম দিন দুর্ব্যবহার করল তার পর আমি তার সঙ্গে কফি খেতে গেলাম, ডিনারেও গেলাম, পার্টিও করলাম, চারটে কাজও করলাম, তার পর সেই লোকটার দিকে আমার আঙুল তুলে লাভটা কী?

নতুন কী কী কাজ আসছে আপনার?

‘কিয়া অ্যান্ড কসমস’, আমার কেরিয়ারের খুব ইম্পর্ট্যান্ট ছবি হবে। ‘শাহজাহান রিজেন্সি’। দেবারতির ছবিটা অনেক দিন পরে এমন একটা চরিত্র, লোকে ও ভাবে আমাকে দেখতে অভ্যস্ত নয়। অল্ট বালাজির হিন্দি ওয়েব সিরিজ করছি। এই সব ক’টাই নেক্সট ইয়ার রিলিজ। কে কে মেননের সঙ্গে একটা হিন্দি ছবি করলাম। মুম্বই গিয়ে ডাবিং করব এ বার।

 

কলকাতা-মুম্বই ব্যস্ততা চলছেই তা হলে?

স্বস্তিকা : জোরকদমে। ওটা আরও বাড়ুক।

 

আর রিলেশনশিপ স্টেটাস?

স্বস্তিকা : একটা ফাঁকা ছেলে খুঁজে দিন। আই উইল লভ টু ডেট। সব জায়গায় আনহ্যাপিলি ম্যারেড মেন-এ ভর্তি হয়ে গিয়েছে। যাকে খুঁজে দেবেন সে যেন আনহ্যাপিলি ম্যারেড না নয়। হা হা হা…।