প্রতিটি কানের মাঝখানে থেকে গলার পিছন পর্যন্ত একটি ইউস্টাসিয়ান টিউব থাকে। সাধারণত, এই টিউব মধ্যকর্ণে তৈরি তরল নিষ্কাশন করে। এই টিউব কোনোকারনে ব্লক হয়ে গেলে তরল জমা হতে থাকে এবং এর ফলে কানে ইনফেকশন হতে পারে। সাধারণত যেসব কারনে ইউস্টাসিয়ান টিউব ব্লক হতে পারে তা হল –
- এলার্জি
- সর্দি এবং সাইনাসের সংক্রমণ
- দাঁত তোলার সময় অতিরিক্ত শ্লেষ্মা এবং লালা উৎপন্ন হওয়া
- সংক্রামিত বা অতিরিক্ত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত অ্যাডিনয়েড বা গলার উপরের অংশে লিম্ফ টিস্যু
- অতিরিক্ত ধূমপান
কানের ইনফেকশন কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার একটি বড় কারন। কানের সংক্রমণের সময়, কানের পর্দার পিছনে তরল জমা হয়। এই তরলের চাপের কারণে টাইমপ্যানিক ঝিল্লি বা কানের পর্দা ভেঙে যেতে পারে বা ফেটে যেতে পারে। এছাড়াও কানে বায়ুচাপের তারতম্যের কারনে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে। এ অবস্থাকে ব্যারোট্রমা বলা হয়। সাধারণত স্কুবা ডাইভিং, বিমানে চড়া, উচ্চ উচ্চতায় গাড়ি চালানো, উচ্চ শব্দ তরঙ্গ এসবের কারনে ব্যারোট্রমা ঘটতে পারে। এছাড়াও বড় কোনো দুর্ঘটনা, কানে সূচালো কিছুর আঘাত লাগলেও কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে।
কান পাকলে বা কানের পর্দা ফেটে যেসব লক্ষণে বুঝবেন –
- কান থেকে পুঁজের মতো বের হওয়া আবার রক্ত ও বের হতে পারে
- শ্রবণ ক্ষমতার হ্রাস
- কানে কিছু বাজছে এমন অনুভূতি হওয়া
- মাথা ঘোরা বা ভার্টিগো অথাৎ একটি অনুভূতি যে ঘরটি ঘুরছে
- বমি বমি ভাব হতে পারে
- মুখের পেশীতে দুর্বলতা
কান পাকলে বা কানের পর্দা ফেটে গেলে করনীয়-
- আক্রান্ত কানে গরম ভাপ কানের মধ্যে চাপ তৈরি করে আরাম দিতে পারে। প্রতিনিয়ত ভাপ নিলে ব্যাথাও অনেকটা কমে যায়।
- কোনোভাবেই যেন কানে পানি না ঢুকে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পানিতে ঝাপাঝাপি করা ডুব সাতার এসব এড়িয়ে চলাই ভালো যদি কানে ইনফেকশন হয়ে থাকে ।
- মাঝারি কানের সংক্রমণের জন্য উপরের শরীরকে অর্থাৎ মাথা ও কাধ উঁচু করে রাখলে কানের চাপ কমতে পারে।
- কিছু ব্যথার ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন যেমন আইবুপ্রোফেন (অ্যাডভিল) বা অ্যাসিটামিনোফেন (টাইলেনল)।
- যে কান আক্রান্ত সেদিকে কাত হয়ে ঘুমানো এড়িয়ে চলুন।
- এলার্জি, ঠান্ডা, ধূমপান কানে ইনফেকশনে প্রভাব ফেলে তাই এলার্জি অ্যাটাক হবে কিংবা ঠান্ডা লাগবে এমন কাজ এড়িয়ে চলতে হবে এবং ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
- যদি ১০২.২ ফারেনহাইটের বেশি জ্বর থাকে, কান থেকে পুজ বা রক্ত বের হয় কিংবা কানের ব্যাথা ২-৩ দিনের বেশি স্থায়ী হয় সেক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।