চোখের যত্ন : জেনে নিন ১৬টি উপায়

দৃষ্টির অনুভূতি তৈরিতে তিনটি অঙ্গ জরুরি—আলো, চোখ ও মস্তিষ্ক। আলো চোখের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কোনো কারণে চোখের সমস্যা হলে আলো চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। এতে দৃষ্টিস্বল্পতা দেখা দেয়। তাই চোখ ভালো থাকা অবস্থাতেই দরকার হয় চোখের যত্ন —লিখেছেন ডাক্তার শামস মোহাম্মদ নোমান

কীভাবে চোখের যত্ন নেবেন

  • চোখ সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর চোখ ভাল করে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • ঘুম হতে জাগার সময় আন্তে আস্তে চোখ খুলতে হবে। বিশেষ করে যাদের চোখে আঘাতের ইতিহাস আছে, তাদের চোখ খোলার সময় নতুন করে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যানবাহনের ধোঁয়া, ধুলাবালি ইত্যাদি কারণে চোখে জ্বালাপোড়া হয়। কারও বেলায় অ্যালার্জিও হয়। সেক্ষেত্রে চোখ ঘষাঘষি না করে দ্রুত পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। চোখে অ্যালার্জি থাকলে বাইরে চলাফেরার চশমা ব্যবহার করতে হবে।
  • চোখের সুস্বাস্থের জন্য ভিটামিন এ দরকার। তা না হলে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে। এমনকি অন্ধত্বও হতে পারে। পাকা ফল, সবজি এবং ছোট মাছ ভিটামিন এ-এর অভাব পূরণ করে।
  • চশমা পরলে সেটা পরিষ্কার রাখা দরকার। চশমায় দাগ থাকলে চোখেও চাপ পড়বে। এতে চোখ ও মাথায় ব্যথা হয়।
  • যারা চোখের পাপড়ি ও পাতায় প্রসাধনী ব্যবহার করেন, তাদের ভালো করে চোখ পরিষ্কার করতে হবে। এ ধরনের প্রসাধনী চোখের অ্যালার্জি ও ইনফেকশন ঘটাতে পারে।
  • বাসায় কারও চোখ উঠলে, তার ব্যবহার্য সামগ্রী স্পর্শ করা যাবে না। গরম পানি দিয়ে রোগীর সামগ্রী প্রতিদিন ধুয়ে নিতে হবে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া চোখে এন্টিবায়োটিক ড্রপ দিলে চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হৃাস পায়। এতে চোখে ইনফেকশন হতে পারে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া স্টেরয়েড জাতীয় ড্রপ ব্যবহারে চোখের চাপ বেড়ে গ্লুকোমা হয়ে রোগী দৃষ্টিহীন হয়ে যেতে পারে। চোখের অ্যালার্জি বা কোনো কারণে স্টেরয়েড আই ড্রপ ব্যবহারে সাময়িক ভালো ফল পেলেও তা বহুদিন ব্যবহার করা যাবে না।
  • যাদের চোখে ঘনঘন অঞ্জলী উঠে, তাদের নিয়মনুযায়ী পাপড়ীর গোড়া কটন বাড গরম পানিতে ভিজিয়ে হালকা করে ঘষে পরিস্কার করতে হবে।
  • যাদের চোখের পানি সহজে শুকিয়ে যায়, তাদের নিয়মিত কৃত্রিম চোখের পানি দৈনিক ৩-৪ বার চোখে দিতে হয়। শুষ্ক চোখে সহজে ইনফেকশন হতে পারে।
  • যেসব বাচ্চার জন্মের পর পানি পড়ে ও চোখে ময়লা জমে, তাদের ডাক্তারের পরামর্শে মালিশ করা প্রয়োজন। এতে বেশিরভাগ শিশুর চোখের সমস্যা কেটে যায়।
  • যারা স্নায়ুরোগের কারণে চোখ বন্ধ করতে পারে না, তাদের চোখের শুষ্কতা রোগ হতে পারে। সেক্ষেত্রে দিনের বেলা কৃত্রিম চোখের পানি ও রাতে ঘুমানোর আগে এন্টিবায়োটিক মলম দেওয়া যেতে পারে।
  • ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ছয় মাস পর পর চোখ পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভালো। এতে ডায়াবেটিসজনিত চোখের বিভিন্ন পরিবর্তন ধরা পড়ে।
  • শরীর যেমন একটানা কাজ করে অবসন্ন হয়, তেমনি একটানা কম্পিউটার বা মোবাইল দেখার পর চোখও ক্লান্ত হয়। তাই টানা আধা ঘণ্টা বা এক ঘণ্টা কাজ করার পর পাঁচ মিনিট চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন।
  • ভারী ধাতুর পেশা বা নির্মাণ শিল্পে যারা নিয়োজিত বা চোখে কিছু পড়তে পারে এমন কাজ যারা করেন, তাদের অবশ্যই গগলস ব্যবহার করা উচিত।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, বিএসএমএমইউ।
দিন মহম্মদ আই হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ০১৭১৫২৯৯৬৯৫

eyeeye healthhealthhealth tips