ভিটামিন ও খনিজ : এই ৭টি মিস করছেন না তো?

দৈনন্দিন জীবনে আমাদের ভিটামিন ও খনিজ প্রয়োজন। এর মধ্যে কিছু ভিটামিন ও খনিজ আছে যেগুলো প্রতিনিয়ত আমাদের লাগবেই। এগুলো সম্পর্কে জানাচ্ছেন মাহমুদ হোসাইন সরকার

 

ভিটামিন ও খনিজ

পটাশিয়াম

আপনার খাবারে এই খনিজ উপাদানটি খুবই প্রয়োজন। কেননা এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সাথে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায় এবং হাড়ের ক্ষয়রোধ করে। স্নায়ু ও পেশীর কার্যক্রম সচল রাখতে এর বিকল্প নেই। দুধ, গোলআলু, মিষ্টিআলু, কলা, অ্যাভাকেডো এবং মটরশুটির মধ্যে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম পাওয়া যায়।

 

ম্যাগনেশিয়াম

ভিটামিন ও খনিজ এর মধ্যে হাতের কাছে সহজে পাওয়া  সবজি পালংশাক ম্যাগনেশিয়ামের সবচেয়ে বড় উৎস। শিম, ছোলা, সকল প্রকার শস্য দানা এবং বাদামে (বিশেষ করে কাঠবাদাম) প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম থাকে। রোগ-শোক দুরে রাখতে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এসব খাবার রাখা উচিত। আপনার যদি পাকস্থলী অথবা অন্ত্রের সমস্যা থেকে থাকে, টাইপ-২ ডায়বেটিস এবং মাদকাসক্তির ফলে সৃষ্ট সমস্যা থাকে; অথবা যদি আপনি যদি অল্প বয়সেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভোগেন তা হলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি রয়েছে।

 

ভিটামিন এ

ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি ও প্রখর রাখতে সহায়তা করে। রোগ নিরাময় ক্ষমতা ও টিস্যু বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা রয়েছে। দুই ধরনের ভিটামিন ‍এ রয়েছে রেটিনল ও কেরটিনয়েডস। অকালে দৃষ্টিহীন হওয়া থেকে রক্ষা পেতে ভিটামিন এ এর জুড়ি নেই। হলুদ রঙের শাকসবজি এবং ফলমুল যেমন মিষ্টিআলু, গাজর এবং শীতকালীন স্কোয়াসের ভিটামিন এ বেশি পরিমানে রয়েছে। পালং শাক ও ব্রুকলিতে যথেষ্ট ভিটামিন এ পেতে পারেন।

 

ভিটামিন ডি

আপনার শরীরের স্নায়ু তন্তু, পেশী ও হাড় সবকিছুরই ভিটামিন ডি প্রয়োজন। এই ভিটামিনটি আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সর্বোত্তম পর্যায়ে রাখে। সূর্যালোক শরীরে ভিটামিন ডি উৎপন্ন করে। কিন্তু অতিরিক্ত সূর্যালোক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরনের জন্য বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যালমন, ম্যাকরল এবং অতিবেগুনি রশ্মিতে উৎপন্ন মাশরুম বেশি বেশি করে খাওয়া দরকার। প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন -কলিজা,  পনির এবং ডিমের মধ্যেও ভিটামিন ডি রয়েছে। দুধ, দামী ব্র্যান্ডের কমলার জুস এবং শস্য দানাও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার।

 

ক্যালসিয়াম

এই খনিজ উপাদানটি শক্ত দাত ও সূদৃঢ় হাড় গঠন ছাড়াও  শারীরবৃত্তীয় অনেক কাজ করে। এটি পেশী ও হৃদযন্ত্রের জন্য একটি মুখ্য উপাদান। এমনকি পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের সাথে ইহা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। দুগ্ধজাত দ্রব্য এই খনিজের আদর্শ উৎস। অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে ক্যানে সংরক্ষিত স্যালমন এবং পাতা কপি। শরীরে ক্যালসিয়াম শোষন করার জন্য ভিটামিন ডি প্রয়োজন।

 

ভিটামিন সি

ভিটামিন সি সাধারণ ঠান্ডা প্রতিরোধ করতে না পারলেও গবেষেণা বলছে এটি রোগের প্রকোপ কমায় এবং রোগী দ্রুত স্বস্তি অনুভব করে। অধিকাংশ ফলমূল ও শাকসবজিতে পাওয়া এই ভিটামিনটি দ্রুত টিস্যু ও হাড়ের বৃদ্ধি ঘটায়। এন্টি অক্সিডেন্ট হওয়ায় এটি কোষকে ধংশের হাত থেকে রক্ষা করে।

 

ফাইবার বা আঁশ

সকলপ্রকার শস্যদানা, শীম, শাকসবজি এবং ফল ফলাদি থেকে অনেক প্রকার সুবিধা পাওয়া যায়। উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার কোলেস্টেরল কমায় এবং শরীরবৃত্তীয় কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে। এমনকি এটি হার্টের রোগ, ডায়বেটিস এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। অতিরিক্ত আঁশ জাতীয় খাবার দেহের ওজন কমাতেও ভূমিকা রাখে।

খনিজপুষ্টিভিটামিনস্বাস্থ্যস্বাস্থ্য টিপসহেলথ টিপস