মেরালজিয়া প্যারেসথেটিকা ফেলে রাখলে ভোগাবে আজীবন

মেরালজিয়া প্যারেসথেটিকায় ঊরুতে ব্যথা হয়। অনেক সময় অসাড় হয়ে যায়। তবে ঊরুজুড়ে নয়, বাইরের দিকে এমন হয়। কোনো আঘাত ছাড়াই এমন হয়।

ঊরুর বাইরের দিকে যে স্নায়ু থাকে সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেরালজিয়া প্যারেসথেটিকা দেখা যায়। মেরালজিয়া প্যারেসথেটিকা একটি দীর্ঘমেয়াদি অসুখ। ‘ল্যাটেরাল কিউটেনিয়াম নার্ভ অব থাই’ স্নায়ুতে সমস্যা হয়।

অসুখটির আরও কিছু নাম আছে। বার্নহাউট-রথ সিনড্রোম এবং ল্যাটেরাল ফিমোরাল কিউটেনিয়াস নিউরোপ্যাথি। অসুখটিতে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। যেমন, ঊরুর বাইরের দিকে ব্যথা হয়।

অনেক সময় হাঁটুর বাইরের দিকেও ব্যথা হতে পারে। মৌমাছি কামড়ালে যেমন ব্যথা হয়, সেরকম অনুভূতি হতে পারে। সামান্য একটু তাপের প্রভাবে অনেক বেশি ব্যথা হয়।

স্নানের সময় গরম জলের প্রভাবে এমন হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা এবং অসাড়তা ছাড়াও চুলকানি এবং কষ্টদায়ক অনুভূতি হতে পারে। মেরালজিয়া প্যারেসথেটিকা ডায়াগনসিসের জন্য খুব ভালোভাবে ইতিহাস নিতে হয়। নিতম্বের অস্থিতে কোনো আঘাত, ডায়াবেটিস, দুর্ঘটনা ইত্যাদির ইতিহাস সতর্কভাবে নিতে হবে।

পেটের এবং পেটের নিচের দিকে কোনো সমস্যা আছে কি না, দেখতে হবে। একেবারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইলেকট্রোমায়োগ্রাফি এবং নার্ভ কন্ডাকশন স্টাডি করা হয়। খুব কম ক্ষেত্রে সিটিস্ক্যান, এমআরআই লাগে। তবে মাথার সিটিস্ক্যান বা এমআরআই এ ক্ষেত্রে ডায়াগনসিসে সাহায্য করে না।

মেরালজিয়া প্যারেসথেটিকা : চিকিৎসা

  • এতে একেকজনের জন্য একেক চিকিৎসা দেখা হয়। তবে চাপ পড়ে যদি এমন হয় সে ক্ষেত্রে চাপ দূর করলে রোগটি ভালো হয়ে যায়। ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া হয়। তীব্র ব্যথা হলে বিশ্রামের পরামর্শ দেওয়া হয়। অ্যামিট্রিপটাইলিন, কার্বামাজেপিন এবং গাবাপেন্টিন জাতীয় ওষুধও ব্যবহার করা হয়। তবে সব ক্ষেত্রে যে ভালো কাজ হয় তাও নয়। বিরল ক্ষেত্রে সার্জারি করা হয়।
  • কিন্তু তখন চিরদিনের জন্য ঊরুর বাইরের অংশ অসাড় হয়ে যায়। মেরালজিয়া প্যারেসথেটিকার লক্ষণ মেরালজিয়া প্যারেসথেটিকার অনেক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে :
  • বাইরের ঊরুতে ব্যথা, যা হাঁটুর বাইরের দিকে প্রসারিত হতে পারে। ঊরুতে জ্বালাপোড়া, ব্যথা, ঝাঁকুনি, ছুরিকাঘাতের অনুভূতি বা অসাড়তা।
  • ঊরু হালকাভাবে স্পর্শ করা হলেও ব্যথা।
  • দীর্ঘ সময় ধরে হাঁটা বা দাঁড়ানোর পরে আরও ব্যথা।
  • মাঝেমধ্যে কুঁচকিতে ব্যথা হয়, যা নিতম্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আপনি মেরালজিয়ার ঝুঁকিতে থাকতে পারেন যদি আপনি অন্তঃসত্ত্বা, স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের হন।
  • সম্প্রতি নিতম্ব বা পিঠে অস্ত্রোপচার হয়েছে এমন যদি হয়।
  • ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মেরালজিয়া হওয়ার সম্ভাবনা সাত গুণ বেশি, যা ডায়াবেটিস সম্পর্কিত স্নায়ুর আঘাতের কারণে হতে পারে।
  • টাইট প্যান্ট পরা।

লেখক : এম.ডি. (হোমিও), সিনিয়র সুপার স্পেশালিস্ট হোমিওপ্যাথ আন্তর্জাতিক সভাপতি, ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব হোমিওপ্যাথি।

healthhealth tips