দুর্বা একটি লতানো ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ। প্রত্যেক গিট থেকে শিকড় বের হয়। পাতা ৫ ইঞ্চি/ ১ ইঞ্চি লম্বা হয় দেখতে চিকন। অগ্রভাগ সরু । সমগ্র ঘাস ব্যবহার করা হয়। রূপচর্চায় দুর্বাঘাসের মতো লজ্জাবতীরও আছে ব্যবহার। আর আমাদের গ্রামবাংলার মেঠোপথ থেকে শহরের পথের ধারেও এ দুটি ভেষজ অনেক পরিমাণে দেখা যায়। রূপচর্চায় দুর্বার মতো লজ্জাবতীরও আছে বেশ কিছু ব্যবহার। চলুন জেনে নেওয়া যাক দুর্বা ও লজ্জাবতীর কিছু ভেষজ গুণ ।
রূপচর্চায় দুর্বা ঘাসের ব্যবহার
যে কেনো ধরনের এলার্জি (severe allargic) তে দুর্বা পাতার চূর্ণ মধুসহ লেহন/ বেটে খেলে এলার্জি কমে যায়। এ ক্ষেত্রে পাতার রস সেবন করলেও ফল পাওয়া যায়।
অকালে ও অকারণে চুল ঝরায় দুর্বার রস (চারভাগের এক ভাগ) তিল তেল জ্বাল দিয়ে মাথায় মাখলে চুল গজবে ও চুল পড়া বন্ধ হবে।
পাইরিয়া রোগে শুকনো দুর্বার গুড়া ও নিম পাতার গুড়া এক সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে এবং রাতে শোবার আগে দাঁত মাজতে হবে।
শরীরের কোথাও কেটে গেলে দুর্বা বেটে বা থেতো করে প্রলেপ দিলে তাড়াতাড়ি রক্ত পড়া এবং কাটা অংশ জোড়া লেগে যায়।
ছত্রাকজনিজ ত্বকের বিবর্ণতায় কাঁচা হলুদ ও দুর্বা বেটে প্রলেপ দিতে হবে। তবে পরিমাণে কম হতে হবে।
দুর্বা ও কাঁচা হলুদ এক সাথে বেটে পাঁচড়ায় প্রলেপ দিলে পাঁচড়া রোগ নিবারিত হয়।
দুর্বা পাতার রস কাঁচা হলুদের রস একসাথে সেবন করলে চেহারায় লাবণ্য আসে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১০ দিন সেব্য। কিছুদিন বন্ধ রেখে আবার সেবন করতে হবে।
লজ্জাবতীর ভেষজ গুণ
লজ্জাবতী গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। পাতা যৌগিক। একটি ডাটার মাথায় ৪টি পাতা যুক্ত ডাটা থাকে। স্পর্শ করলেই বিপরীত দিকের পাতাটি নেমে নিচের বেগুনি লাল বর্ণের। বার মাসই ফুল ও ফল হয়। এর পাতা তেতুলের মতো।
রূপচর্চায় লজ্জাবতীর ব্যবহার
বিভিন্ন চর্মরোগ ও দেহের লাবণ্যতায় সমগ্র গাছ আধা চূর্ণ করে ২ কাপ পানিতে মিশিয়ে জ্বাল করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেকে নির্যাসটুকু প্রত্যহ ২ – ৩ বার সেব্য।
দেহের ক্ষত স্থানে সমগ্র গাছ ভালোভাবে পিশে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে প্রত্যহ ২-৩ বার লাগাতে হবে।
বগল ঘেমে যাদের জামা বা গেঞ্জিতে হলদে দাগ লাগে তারা লজ্জাবতীর গাছ পিষে নিয়ে সিদ্ধ করা গাঢ় পানি দিয়ে শরীর ও বগল নিয়মিত মুছলে ভালো হয় এবং দুর্গন্ধ কমে যায়।
পুরানো ঘায়ে বা মাংস পচে ক্ষয়ে যাচ্ছে এক্ষেত্রে লজ্জাবতীর ক্বাথ (সিদ্ধ কৃত ঘন পানি) দিয়ে দিনে ৩ ৪ বার কয়েকদিন লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়।