আফ্রিকার বৃহত্তম মসজিদ নির্মাণ সম্পন্ন : ১২ লাখ মুসল্লী একসঙ্গে নামায পড়তে পারবেন

আফ্রিকার বৃহত্তম মসজিদ নির্মাণ সম্পন্ন : ১২ লাখ মুসল্লী একসঙ্গে নামায পড়তে পারবেন

দীর্ঘ সাত বছর এবং ১০০ কোটি ডলারের ব্যয়ে অবশেষে সম্পন্ন হল আলজেরিয়ার নতুন মসজিদের নির্মাণ কাজ। এই মসজিদটি নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে। মসজিদটির নাম দেয়া হয়েছে ‘দ্য গ্রেট মস্ক অব আলজিয়ার্স’ বা, জামা আল-জাজাইর। মসজিদটির আয়তন ৪ লক্ষ বর্গমিটার, এটির মিনারের উচ্চতা ২৬৫ মিটার (৮৭০ ফুট), যেখানে একটি পর্যবেক্ষণ ডেক রাখা হয়েছে। আলজিয়ার্স উপকূলের কাছে অবস্থিত যৌগিক গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদে একসাথে ১২ লাখ মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। এর ভূগর্ভস্থ পার্কিংয়ে ৭,০০০ গাড়ি রাখার ব্যবস্থা আছে।

মসজিদ কমপ্লেক্সে একটি কোরানিক স্কুল, ২১ হাজার ৮০০ বর্গমিটারের সুবিশাল ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, একটি রেস্টুরেন্ট, একটি অ্যাম্ফিথিয়েটার ও আলজেরিয়ার ইতিহাসের জন্য নিবেদিত একটি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে।

বর্তমানে এটি আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম মসজিদ। আর বিশ্বের মধ্যে ইরানের মাশহাদে অবস্থিত ইমাম রেজা শ্রাইন (৬ লাখ বর্গমিটার) ও ওমানের মাসকাটে অবস্থিত সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদের (৪ লাখ ১৬ হাজার বর্গ মিটার) পরে এটি তৃতীয় সর্ববৃহৎ মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। এটির মিনারও এখন আফ্রিকার মধ্যে উচ্চতম। এর আগে উচ্চতম মিনার ছিল মরোক্কোর কাসাব্লাংকায় অবস্থিত হাসান দ্বিতীয় মসজিদের, যার উচ্চতা ছিল ৬৭০ ফুট।

আলজিয়ার্সের মসজিদটি তৈরি করেছে চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিএসসিইসি)। এটি একটি বিশাল বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান যারা আফ্রিকা ও বিশ্বব্যাপী ভারী শিল্প ও অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করে। ২০১১ সালে এই মসজিদ প্রকল্পের জন্য কোম্পানিটি যখন দায়িত্ব পায়, তখন এটিই ছিল তাদের বিদেশী প্রকল্পগুলোর মধ্যে সর্ব বৃহৎ প্রকল্প।

গত বছরের শেষের দিকে এটি উদ্বোধনের কথা থাকলেও, বিশ্বব্যাপী তেলের দাম কমে যাওয়ায়, মসজিদটি বাজেট সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল যার ফলে এর নির্মাণ বিলম্বিত হয়।

মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির জন্য আফ্রিকার বৃহত্তম মসজিদ নির্মাণ একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। দেশটিতে বহুবছর ধরেই মুসলমানরা বিদ্রোহ করে আসছে। ১৯৯২ সালের নির্বাচনে ইসলামপন্থীরা জয়ী হলেও, সরকার তখন সেই নির্বাচন বাতিল করে দেয়, যার ফলে বেসামরিক বিদ্রোহের সূচনা হয়। এতে প্রায় ২ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল। নিউজ রিপাবলিক।

আফ্রিকার বৃহত্তম মসজিদ