স্বপ্ন ও সফলতার মন্ত্র | কিছু উক্তি কিছু গঠনমূলক উপদেশ

লক্ষ্য আমাদের সকলের জীবনের একটি প্রত্যয় অধ্যায়। যার পূর্ণতা ও সফল করার জন্যে মানুষ প্রতিটা সময় লড়াই করে যাচ্ছে। কেউ ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়‌, কেউ শিক্ষক হয়ে দেশের নিরক্ষরতা দূর করতে চায়।

আমাদের মানুষের চাওয়া এবং পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা অনেক। কেউ অনেক সফল অথবা ব্যর্থ হয়। আমাদের সমাজটাই হচ্ছে এরকম যে, কেউ ব্যর্থতার গল্প জানতে চাইবে না‌।

জীবনে যদি ব্যর্থ হয়ে থাকেন তাহলে ভেঙে পড়বেন না। ব্যর্থতাকে নিজের হাতিয়ার করে সাফল্য অর্জন করতে হবে। সফলতা ও ব্যর্থতার সিঁড়ি বেয়ে জীবনে এগিয়ে যেতে হবে।

অজুহাত পরিহার করুন

আমরা জীবনের চলার পথে নানান অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই। আপনার সাফল্য ও ব্যর্থতার মাঝে অজুহাত বাঁধা থাকে। যদি সেই অজুহাতকে প্রাধান্য দিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকেন তখন লক্ষ্য আপনার দরজা খুলে পালাবে। জীবনে তখন আপনি লক্ষ্যে সফল হবেন যখন অজুহাত নামক পোকাকে মস্তিষ্ক থেকে মুছে ফেলবেন। তাই নিজের লক্ষ্যে সৎ থাকুন।

 

 

সময়ের ব্যবহার

কাজ পরে করবো অথবা এখন করবো না বলে কোনো কিছু ফেলে রাখবেন না‌। কথায় আছে The Fruit will lost, if you kept waiting to much for later.

তাই সময়ের সাথে চলুন। সময়ের সদ্ব্যবহার করুন। সময় আপনাকে চমৎকার উপহার দিবে।

 

অভিজ্ঞতা অর্জন করুন

অভিজ্ঞতা এমন একটি জিনিস তা শুধু মাত্র একান্ত নিজের অর্জন। এটা কেউ শেখাতে পারে না। এ শিক্ষা কাউকে দেওয়াও যায় না।

জীবনের লক্ষ্যের চরাই উতরাইয়ে ব্যর্থ হয়েছি বলে হেরে যাবো তা কিন্তু নয়। এ থেকে কিছু শেখার অভিজ্ঞতা হলো তা পরবর্তী প্রচেষ্টার কাজে motivational solution হিসেবে কাজ করবে।

 

 

অনবরত চেষ্টা করুন

জীবনে সবকিছুর প্রচেষ্টা একবার হলেও করা উচিত। আল্লাহ তায়ালা সবাইকে কিছু না কিছু অদম্য ক্ষমতা অবশ্যই দিয়েছেন। চেষ্টা ও পরিশ্রম না করলে সেই ক্ষমতার অবকাশ সহজে পাওয়া যায় না। তাই সারা জীবন ঘুমিয়ে না কাটিয়ে লক্ষ্য পূরণে প্রচেষ্টা করুন। সফলতা আসবেই।

 

কটু কথায় কান দেবেন না

আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন মানুষ বসবাস করেন। আপনাকে নিয়ে কটু কথা বলার লোক অভাব হবে না। পাছে লোকে কথা বলবেই তাই বলে থেমে থাকব, কখনোই না!

আপনার জীবন শুধু আপনার একান্ত। তাতে প্রশ্ন করা বা দুঃখ করার ক্ষমতা শুধু আপনার। অন্যদের অনুপ্রবেশ করতে একদম দিবেন না।

 

 

শেখার প্রতি আগ্রহ রাখুন

অজানা  কিছুর ধারণা থাকতে হলে সেই বিষয়ে শেখার প্রাধান্য দিতে হবে। না হলে দক্ষতা বাড়াতে পারবেন না। মনে রাখবেন, অজ্ঞতা মানুষের প্রধান শত্রু। তাই কোনো কিছু শেখার ক্ষেত্রে আগ্রহী থাকুন সবসময়।

 

বিখ্যাতদের উক্তি পড়ুন

আমাদের পৃথিবীতে অনেক প্রতিভাবান ব্যক্তি আছেন যারা পরিশ্রম করে নিজেদের সাফল্য অর্জনের মহিমা ছড়িয়েছেন। যেমন- আলবার্ট আইনস্টাইন, নিউটন, শেক্সপিয়ার, নেলসন ম্যান্ডেলা, মাদার তেরেসা ইত্যাদি। আমাদের জীবনে তাদের ইতিবাচক উক্তিগুলোর নানা প্রভাব ফেলে।

 

সাফল্য নিয়ে শেক্সপিয়ার বলেছেন, ‘সাফল্যের শর্ত তিনটি। অন্যের চেয়ে বেশি জানুন। অন্যের চেয়ে বেশি কাজ করুন। অন্যের থেকে কম আশা করুন ‌‌।

 

ক্লিমেন্ট স্টোন একজন আমেরিকান সফল উদ্যোক্তা। তিনি বলেন,

‘সফলতার মতো ব্যর্থতার ও দিক এক একজনের কাছে এক একরকম‌। কিন্তু ইতিবাচক মনোভাব থাকলে সহজেই সেই ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠা যায়।’

 

টমাস আলভা এডিসন‌ বলেছেন, ‘হার মানাই হচ্ছে সফলতার ব্যর্থতা। প্রতিবার হার মানার আগে আরেকবার চেষ্টা করা।’

 

আইনস্টাইন বলেছিলেন, হাল ছেড়ে দিও না, মনে রেখো কাজটি যদি সহজ হতো তাহলে সবাই করতে পারতো।

 

কাজে উদ্যমী হোন

কোনো কাজে উদ্যোগ নিলে সেটি অবশ্যই মনোযোগ সহকারে করুন। কোথায় কোন তথ্য লাগবে, সমাধান কী করে করা যায় খেয়াল রাখতে হবে। 

মানুষ মাত্রই ভুল করে। যদি কোনো কাজে ভুল হয়, তাতে নিজেকে ছোট মনে করার কিছু নেই‌‌। কিন্ত সেই ভুল থেকে কিছু শেখার অভিজ্ঞতা হলো। এটাই অনেক কিছু। আর লক্ষ্যে পৌঁছাতে নানা অভিজ্ঞতার সাগর পাড়ি দিতে হবে।

আইনস্টাইন বলেছিলেন, ১ ঘন্টা যদি আমাকে কোন কাজ দেওয়া হয়, আমি ৫০ মিনিট সেই সমস্যার ঘটনা নিয়েই ভাবি। বাকি ১০ মিনিট সমস্যার সমাধানের নিয়ে।

 

পারব না বললে হবে না। আশানুরূপ ফলাফল না পেলে আবার চেষ্টা করুন। অবশ্যই সেই সমাধান এক সময় আপনার কাছে এসে ধরা দিবে। তাই কোনো ভবেই অধৈর্য হওয়া চলবে না।

জীবনে কোনো কিছুই ব্যর্থ নয়। ভালো ও মন্দ নিয়ে এই জগত সংসার। প্রচেষ্টা একবার করুন দেখবেন সাফল্য আপনার হাতের মুঠোয়।

নিউটন, আইনস্টাইন, এডিসন উনারা কেউ রাতারাতি বিখ্যাত হয়নি। পরিশ্রম ও একাগ্রতা তাদের সফল করেছে।

নিজের প্রতি আস্থা রাখুন। আর প্রতিদিন নিজেকে ১% হলেও উন্নত করুন। দেখবেন বছর ঘুরে আপনার পরিবর্তন ৩৬৫%। নেতিবাচক মনোভাব নিজেকে প্রভাবিত করতে দিবেন। ওভারকনফিডেনস রাখবেন না। হতাশ হবেন না। কারো সাফল্যের জন্য হিংসা ও বিদ্বেষ পোষণ করবেন না। তিনি তখন পরিশ্রম করে সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে। আপনি ও‌ পারবেন। স্রষ্টাই আপনার পরিকল্পনা পূরণ করবেন।

 

মাদার তেরেসা বলেছেন, “God doesn’t require us to succeed,HE only requires that you try.

আপনার নিজের ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের শীর্ষ চূড়ায় উঠতে ইতিবাচক মনোভাব, অদম্য চেষ্টা ও পরিশ্রম বাঞ্ছনীয়।

 

লিখেছেন ইসরাত জাহান স্বর্ণা

 

ইতিবাচক যে ভাবনাগুলো বদলে দিতে পারে আপনার জীবন

 

কলামক্যারিয়ারমোটিভেশন