দু’দিন ঠান্ডা তো তিনদিন গরম! আর এই হঠাৎ-হঠাৎ সিজ়ন চেঞ্জের ফলে ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে, সঙ্গে জ্বর-জ্বর ভাব। কারণ? আমাদের ইমিউনিটি পাওয়ার কমে যাচ্ছে দিন-দিন। কত আর ওষুধ খাবে? তার চেয়ে নিয়ম করে শুরু করো এমন কিছু ব্যায়াম, যা তোমার শরীরকে সুস্থ রাখবে ভিতর থেকে।
সাইড প্ল্যাঙ্ক
কোর মাসলকে শক্তিশালী করে তুলতে চাইলে প্ল্যাঙ্কের কোনও জবাব নেই। নানা ধরনের প্ল্যাঙ্কের মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে সাইড প্ল্যাঙ্ক। প্ল্যাঙ্ক পজ়িশনে থাকার সময় একটা ব্যাপার অবশ্যই খেয়াল রাখবে, তোমার শরীরটা যেন মাটির সঙ্গে একেবারে সমান্তরালভাবে থাকে। কোমর বা হিপ উঁচু হয়ে থাকলে কিন্তু সেখানে বাড়তি চাপ পড়বে। প্রথম দিকে হাতের মুঠো আর কনুই মাটিতে রেখে প্ল্যাঙ্ক করো। অভ্যেস হয়ে গেলে শুধু হাত আর পায়ের পাতাটা মাটিতে রেখে বাকি শরীরটা তুলে ফেলো মাটি থেকে। সাইড প্ল্যাঙ্ক করার সময় এক হাত আর এক পা মাটিতে রাখবে। অন্য হাত তুলে দাও উপরে, আর একটি পায়ের উপর তুলে দিতে হবে অন্যটি। মিনিটখানেক প্ল্যাঙ্ক ধরে রাখার পর পা ও হাত বদলাও। কোর মাসলের শক্তি যত বাড়বে, প্ল্যাঙ্ক তত ভালভাবে করতে পারবে। কীভাবে বুঝবে তোমার কোর মাসলের শক্তি বাড়ছে? যদি একবারে এক মিনিটের জন্য প্ল্যাঙ্ক ধরে রাখতে পার, তা হলেই বুঝবে তুমি প্রথম ধাপ পেরিয়ে গিয়েছ। শক্তি বাড়লে আরও বেশিক্ষণ এই পজ়িশন ধরে রাখা সম্ভব হবে।
সিঙ্গল লেগ ডেডলিফ্ট
এই ব্যায়ামটিও তোমার কোর মাসলগুলিকে শক্তিশালী করে তুলবে। মেয়েদের শরীরের যে সব অংশে মেদ জমে তাড়াতাড়ি, যেমন তলপেট, কোমর বা নিতম্বের আশপাশে— সেগুলিকে টোনড রাখে সিঙ্গল লেগ ডেডলিফ্ট। এক হাতে একটা ডাম্ববেল বা কেটল বেল নাও, তারপর দাঁড়াও কোমরে হাত দিয়ে। প্রথমদিকে একটা দেওয়ালে এক হাতের ভর দিয়ে দাঁড়াতে পার। এবার যে হাতে ডাম্ববেলটি ধরেছ, সেই পা ঘেঁষে সেটিকে নীচে নামাও, হাঁটু সামান্য ভাঙবে। অন্য পা মাটির সঙ্গে সমান্তরালভাবে তোলো ব্যালেন্সের জন্য। কয়েক সেকেন্ড ধরে রেখে ফিরে যাও আগের অবস্থায়। একবার করার পর পা বদলে নাও। এই ব্যায়াম করার সময় তোমার চেস্ট যেন নীচে না নামে সেই চেষ্টা করবে। এই ব্যায়ামের ফলে তোমার ব্যালেন্স অনেক ভাল হবে। সেই সঙ্গে শক্তপোক্ত ও সুগঠিত হবে নিতম্ব।
সর্বাঙ্গাসন
সর্বাঙ্গাসন থাইরয়েড গ্ল্যান্ডকে স্টিমুলেট করে। থাইরয়েড হরমোনই আমাদের শরীরের আকার নির্ধারণ করে। থাইরয়েডের সমস্যা না থাকলে ত্বক হবে উজ্জ্বল, ঝলমলে। তলপেটের বাড়তি ফ্যাটও কমে যায় চটপট। যোগা ম্যাটের উপর টানটান হয়ে শুয়ে পড়ো। তারপর কোমর থেকে শরীরটাকে ৯০º কোণে উপরে তোলো, কোমরের কাছে হাত দুটো দিয়ে চেষ্টা করো ব্যালেন্স রাখার। পা থাকবে সোজা।
সেকেন্ড পজ়িশন প্লাইজ়
পা কাঁধ বরাবর ফাঁক করে দাঁড়াও। পায়ের পাতার মুখ থাকবে বাইরের দিকে। হাতে একটা ডাম্ববেল বা কেটল বেল নিতে পার চাইলে। এবার হিপের উপর ভর দিয়ে নীচের দিকে নামো। হাঁটু ভাঙবে, থাই মাটির সঙ্গে সমান্তরাল হওয়া পর্যন্ত নামতে হবে। তারপর আবার ফিরে যাও আগের পজ়িশনে। হিপের উপর ভর দিয়ে বসবে এবং উঠবে।
পুশ আপ
পরিচিত এক্সারসাইজ়, কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর। পুশ আপ করলে পুরো শরীরের ব্যায়াম হয়, শরীর টানটান হয়ে ওঠে, মেদহীন হয় চেস্ট মাসল। মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ো। হাত দুটো থাকবে তোমার শরীরের দুই পাশে, কাঁধের চেয়ে একটু দূরে রাখলেই হবে। দুই পায়ের মাঝে সামান্য একটু ফাঁক থাকতে পারে। এবার বুকসমেত পুরো শরীর মাটির কাছাকাছি নিয়ে যাও। উপরে ওঠার সময় হাত দুটো যেন একেবারে সোজা হয়ে যায়, সেটা দেখতে হবে। পুশ আপ করার সময় কোর মাসলগুলো টেনে ধরে রাখবে। প্রতিবার শরীরটা তোলার সময় যেন হিপটাও ওঠে, সেটা দেখতে হবে।
হাই ইন্টেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং
ফুসফুসের শক্তি বাড়ানোর জন্য হাই ইন্টেনসিটি কার্ডিও ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং খুব কার্যকর। এতে অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক বেশি ক্যালোরি পুড়বে। যে কোনও পছন্দসই কার্ডিও ওয়ার্কআউটকেই হাই ইন্টেনসিটি ট্রেনিংয়ে বদলে ফেলা যায়। স্কিপিং, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, ট্রেডমিল— সব করতে পার। যতটা জোরে দৌড়তে বা সাইকেল চালাতে পার, তার ৫০ শতাংশ এফর্ট দাও প্রথম তিন মিনিটে। পরের ২০ সেকেন্ড দাও ৭৫ শতাংশ এবং শেষ ১০ সেকেন্ড সব শক্তি নিংড়ে দাও। মোট ১০ বের করতে হবে।