বিশেষজ্ঞ না হলে কবুতরের লিঙ্গ চেনা খুব একটা সহজ কাজ নয়। এমনকি অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও অনেকে কবুতরের নর মাদি চেনার উপায় জানে না।
আসলে পাখিদের সেরকম সুনির্দিষ্ট শারীরিক বৈশিষ্ট্য সাধারণত থাকে না যা দ্বারা খুব সহজে নির্নয় করা যাবে পাখিটি নর নাকি মাদি অর্থাৎ পুরুষ নাকি স্ত্রী। কিন্তু একজন শৌখিন কবুতর পালক কিংবা কবুতর ব্যাবসায়ী হিসেবে কবুতরের নর মাদি চেনার উপায় জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
এখানে কবুতরের নর মাদি চেনার উপায় জানতে বেশ কিছু লক্ষন নিয়ে আলোচনা করবো যা দ্বারা আপনি কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই লক্ষনগুলো।
১. বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য – বিশেষজ্ঞরা সাধারণত কবুতরের নর মাদি চেনার উপায় জানতে তিনটি শারীরিক বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন যা হচ্ছে : চোখ, মাথা এবং সামগ্রিক শরীরের ভর।
ভর : কবুতরের ক্ষেত্রে মাদির চেয়ে পুরুষদের শরীরের ভর কিছুটা বেশি থাকে। একটি পুরুষ কবুতরের শরীরের দৈর্ঘ্য ৩৪৫ মিমি পর্যন্ত হয় এবং শরীরের ওজন প্রায় ২৪০-৩০০ গ্রাম হতে পারে। কিন্তু মাদি কবুতরের শরীরের ওজন সাধারণত ২০০ গ্রাম বা এর কিছুটা কম বেশি হয়ে থাকে। তাই কবুতরের নর মাদি চেনার উপায় হিসেবে ওজন একটি ভালো পদ্ধতি।
মাথা এবং গলা : পুরুষ কবুতরের মাথা গোলাকার, ঘাড় কিছুটা মোটা এবং গলা মাদি কবুতরের তুলনায় লম্বা হয়। অন্যদিকে, স্ত্রী কবুতরের একটি মাথা ছোট ও লম্বাকৃতির এবং ঘাড় তুলনামূলকভাবে পাতলা হয়।
চোখ : মদি কবুতরের চোখ নর কবুতরের চেয়ে বেশি গোলাকার হয়ে থাকে। লক্ষ করলে দেখবেন নর কবুতরের চোখ কিছুটা চ্যাপ্টাকৃতির হয়ে থাকে।
আচরণ: আচরণ পর্যবেক্ষণ করাও কবুতরের নর মাদি চেনার উপায় । পুরুষ কবুতররা সাধারণত খুব রাগান্বিত প্রকৃতির হয় এবং মাদি কবুতর শান্ত হয়। অপরিচিত কোনো কবুতর দেখলে সাধারণত পুরুষ কবুতরই আগে এগিয়ে যায় এবং বেশ আক্রমনাত্মক হয়। কবুতরের ডিম থাকলে নর কবুতর সাধারণত সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নীড়ে বসে থাকে এবং মাদি কবুতর দিনের শেষে আসে।
ডাক: নর কবুতরের ডাক মাদি কবুতরের তুলনায় বেশি জোরালো এবং গলার স্বর মোটা। এছাড়া কবুতরের নর মাদি চেনার উপায় আরেকটি বিশেষ লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে নর কবুতর নাচের তালে তালে ডাকে।
পায়ের আঙ্গুল: কবুতরের নর মাদি চেনার উপায় হচ্ছে এদের পায়ের আঙ্গুল। সাধারণত একটি মাদি কবুতরের পাশের আঙ্গুলগুলো সামনের আঙ্গুলগুলোর সমান হয় না। কিন্তু নর কবুতরের পাশের আঙ্গুল সামনের আঙ্গুলের প্রায় সমানই বলা চলে। নর কবুতরের পায়ের আঙুল মাদি কবুতরের তুলনায় খসখসে এবং অনুজ্জ্বল হয়ে থাকে।
পায়ুপথ: কবুতরের নর মাদি চেনার উপায় ব্রিডিং অবস্থায় সহজতর হয়। কারণ এ অবস্থায় নর মাদি কবুতরের পায়ুপথের পার্থক্য স্পষ্ট বুঝা যায়। সাধারণত পুরুষ কবুতরদের পায়ুপথ চ্যাপ্টা এবং নারী কবুতরের পায়ুপথ বৃত্তাকার হয়ে থাকে।
ডানা পরীক্ষা: এরজন্য আপনাকে হাত দিয়ে কবুতরের ডানা ধরে তুলতে হবে এ অবস্থায় কবুতরের লেজের দিকে নজর রাখুন যদি লেজটি সোজা থাকে তবে কবুতরটি পুরুষ। আর যদি লেজটি ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে থাকে তাহলে মাদি কবুতর।
মেটিং: মেটিং সাধারণত মাদি কবুতরের অনুমোদনের উপর নির্ভর করে। লক্ষ করলে দেখবেন এ সময়ে একটি কবুতর অন্য কবুতরকে অনুসরণ করে এক্ষেত্রে যে কবুতরটি অনুসরণ করে সে হল নর আর যাকে অনুসরণ করে সেটি মাদি। পুরুষ কবুতরটি মহিলা কবুতরটিকে অনুসরণ করতে থাকে যতক্ষণ না সে তাকে সঙ্গী হিসাবে গ্রহণ করে নেয়।
কবুতরের নর মাদি চেনার উপায় হিসেবে এই বৈশিষ্ট্যগুলোই সাধারণত বেশি উল্লেখযোগ্য।