বিবাহবিচ্ছেদেও মিলল না রেহাই! অ্যাসিড ‘ছুড়ে’ ঝলসে দিল প্রাক্তন স্বামী

ঝগড়া হলে প্রায়ই তরুণীকে অ্যাসিড ছোড়ার হুমকি দিত তাঁর স্বামী। তরুণী ভেবেছিলেন, বিবাহ-বিচ্ছেদ করে মুক্তি মিলবে। বিবাহ-বিচ্ছেদ হল, কিন্তু রেহাই মিলল না। দিনের বেলা প্রকাশ্যেই ওই তরুণীকে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ উঠল তাঁর সেই প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে।

শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে আনন্দপুরের মার্টিনপাড়া গুলশন কলোনিতে। সে দিনই আনন্দপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তকে ধরতে পারেনি পুলিশ। এ দিকে, বারবার ওই যুবকের হুমকির মুখে পড়ে যন্ত্রণায় কাতরালেও হাসপাতালেই ভর্তি হতে ভয় পাচ্ছেন ওই তরুণী। পুলিশ অবশ্য জানায়, অভিযুক্ত পলাতক। খোঁজ চলছে।

আরো পড়ুন : কালো জাদু জানেন এই অভিনেত্রী!

গুলশন কলোনির বাসিন্দা, বছর তিরিশের ওই তরুণীর অভিযোগ, গত শনিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ তাঁর স্বামী বাড়ি থেকে বেরোন। কিছুটা দূরেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয় ওই তরুণীর প্রাক্তন স্বামী জানে আলম খানের। দু’জনের মধ্যে শুরু হয় বাদানুবাদ। তার পরে ফিরে আসেন তরুণীর বর্তমান স্বামী। এ দিন যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে ওই তরুণী বলেন, ‘‘আমি একা ঘরে থাকলে ক্ষতি হতে পারে, এই ভেবে আমার স্বামী আমাকে তপসিয়া রোডে বাবার বাড়িতে পৌঁছে দেবেন ঠিক করেন। বাড়ি থেকে বেরোতেই হঠাৎ আমার দিকে অ্যাসিড ছোড়ে জানে আলম।’’ তিনি জানান, মুহূর্তের মধ্যে গোটা শরীর পুড়ে যাওয়ার মতো জ্বলতে থাকে। রাস্তায় পড়ে ছটফট করতে থাকেন তিনি। স্ত্রীর এই অবস্থা দেখে তাঁকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন স্বামী। সেই সুযোগে পালিয়ে যায়

মঙ্গলবার তপসিয়ায় তরুণীর বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাসিডে মুখ, হাত, গলা, পিঠ ঝলসে গিয়েছে ওই তরুণীর। কোনওক্রমে বেঁচে গিয়েছে চোখ দু’টি। শনিবারই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি আসেন তিনি। কিন্তু যন্ত্রণা বাড়তে থাকায় ফের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, জানে আলমের পরপর হুমকির জেরে ত্রস্ত তাঁরা। হাসপাতালে ভর্তি হলে ওয়ার্ডে ঢুকে সে ফের হামলা চালাতে পারে, এই ভয়েই সেখানে ভর্তি হতে চাইছেন না ওই তরুণী।

 তরুণীর ভাই বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকালে একটা নম্বর থেকে ফোন আসে। এক ব্যক্তি নিজেকে জানে আলম পরিচয় দিয়ে হুমকি দিয়ে বলে, দিদিকে ফিরে না পেলে আমার অন্য বোনেদের উপরেও অ্যাসিড হামলা চালাবে।’’ পরে ওই নম্বরে ফোন করলে সেটি বন্ধ ছিল বলে তাঁর দাবি। ওই তরুণীর বক্তব্য, ‘‘বিয়ের ১৭ বছর পরে ঘর ছেড়েছি। দু’টো মেয়েকেও জানে আলম নিয়ে গিয়েছে। তবু আমার নিস্তার মিলছে না।’’ পুলিশের কাছে তরুণীর মায়ের কাতর আর্তি, অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা হোক। তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। কিছু সূত্র মিলেছে। দ্রুত অভিযুক্ত ধরা পড়ে যাবে।