ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসাশাস্ত্রে আগ্রহ বাড়ছে চীনা তরুণদের

চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছর নতুন প্রবণতা চোখে পড়েছে—দেশটির অনেক মেধাবীই এখন টিসিএম বা ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসাশাস্ত্র বিষয়ে পড়ার জন্য ভর্তি হচ্ছেন।

এ বছর চীনজুড়ে টিসিএম প্রোগ্রামগুলোর ভর্তি নম্বরের মাপকাঠি বেড়েছে। বেইজিং ইউনিভার্সিটি অব চাইনিজ মেডিসিনে এ বছর বেশ কয়েকটি কোর্সে ভর্তির মানদণ্ড গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। একই প্রবণতা দেখা গেছে কুয়াংচৌ ইউনিভার্সিটি অব চাইনিজ মেডিসিনেও।

বেইজিংয়ে নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী চাং হংলিন বলেন, ‘কাওখাও পরীক্ষার অনেক আগেই ঠিক করেছিলাম টিসিএম পড়ব। হাইস্কুলে ফুটবল খেলার সময় গোড়ালির চোটে ভুগতাম। শেষ পর্যন্ত টিসিএম-ই আমাকে সুস্থ করে তোলে।’

প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার দর্শনে গড়ে ওঠা টিসিএম এখন তরুণ প্রজন্মের কাছে নতুনভাবে ধরা দিচ্ছে।

চ্যচিয়াং প্রদেশে টিসিএম প্রতিষ্ঠানে সন্ধ্যায় ইচিনচিং (শ্বাস-প্রশ্বাস ও শরীরচর্চা) শেখানো হয়, যা কর্মজীবী তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়। চাহিদার কারণে এক ঘণ্টার ক্লাস চলে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত।

চিয়াংসির তরুণরা এখন ভেষজ গাছ চেনার পাশাপাশি টিসিএম মাসাজ মক্সিবাশন শিখছে। থাইচি, আকুপাংচার, ভেষজ চা—এসব নিয়ে তৈরি কনটেন্টও এখন তরুণ ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে লাখ লাখ ভিউ পাচ্ছে।

কানসু প্রদেশে চলছে টিসিএম-ভিত্তিক রাতের বাজার। আকুপাংচার, কাপিং, ভেষজ ফুট-বাথ, পালস ডায়াগনসিসের জন্য ভিড় জমছে সেখানে।

২০২৪ সালে চীনের বিভিন্ন হাসপাতালে টিসিএম বিভাগে রোগী এসেছিল ১৬০ কোটি বার।

বেইজিংয়ের তোংচিমেন হাসপাতালে টিসিএম ইন্টার্ন সুন আননিং জানান, ‘আমার বন্ধুরা প্রায়ই আমার কাছে বাতুয়ানচিন বা ভেষজ পানীয়ের টিপস জানতে চায়।’

২০২২ সালে চীন সরকার নতুন পরিকল্পনা নেয় টিসিএম শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে। ২০২৪ সালে এ খাতে চীনের রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ দাঁড়ায় ২২.৭ বিলিয়ন ইউয়ান, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। একই বছরে সহকারী টিসিএম চিকিৎসকের লাইসেন্স পেয়েছেন ৬৭ হাজার জন।

চীন সরকার এখন পর্যন্ত ১,১৫০-রও বেশি বিশেষায়িত টিসিএম বিভাগ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৩ সালের শেষে চীনে লাইসেন্সধারী টিসিএম চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ লাখ ৪০ হাজারে।

সূত্র: সিএমজি

chinahealthtcm