আমাদের হাড়ে এপিফিস নামের গ্রোথ প্লেট থাকে। যার কারণে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আমাদের উচ্চতা বাড়ে। ওই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উচ্চতা বাড়ার জন্য দরকারি সব উপাদান পেলে তবেই ঠিকঠাক বাড়বে শিশু। বয়ঃসন্ধির সময় যত শেষ হয়ে আসে, ততই ওই প্লেটের বৃদ্ধি কমে আসে। এরপর এতে প্রভাব রাখে জিনেটিকস, লিঙ্গ ও হরমোন। এগুলো স্বাভাবিক থাকলে আসবে খাবারের ভূমিকা
শিম : শিমের প্রোটিন ইনসুলিনের মতো গ্রোথ-ফ্যাক্টর ওয়ানের বিকাশে ভূমিকা রাখে, যা শিশুর বাড়ন্ত উচ্চতার জন্য বিশেষভাবে দরকার। এর আয়রন ও ‘বি’ ভিটামিনও উচ্চতা বৃদ্ধির টিস্যুর উন্নতি করে।
মুরগি : প্রোটিনসহ অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে মুরগিতে আছে ভিটামিন বি১২, যা দ্রবণীয় এবং উচ্চতা বাড়াতে সহায়ক। হাড়ের বৃদ্ধিতে সরাসরি সম্পর্ক আছে—টরিন নামের এ উপাদানটিও মুরগির মাংসে পাওয়া যায়। ৮৫ গ্রাম মুরগির ২০ গ্রামই প্রোটিন। আরও আছে নায়াসিন, সেলেনিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন বি৬।
ডিম-দুধ : ডিম হলো পুষ্টির পাওয়ার হাউস। সাধারণ একটি ডিমে ৫-৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। আবার ডিমের ভিটামিন ‘ডি’ শরীরকে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। ৮৭৪ শিশুর ওপর এক গবেষণায় ডিমের সঙ্গে উচ্চতা বৃদ্ধির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক পাওয়া গেছে। আবার দুধেও আছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম। শিশুর বৃদ্ধির নেপথ্যে এ খাবারটিই মূলত কলকাঠি নাড়ায় বেশি।
কাঠবাদাম : শিশুদের ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়ানো কঠিন। সে ক্ষেত্রে খাবারের সঙ্গে কাঠবাদাম মিশিয়ে দিলে সে চাহিদা পূরণ হবে। এর ভালো চর্বি, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম, চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
সবুজ পাতা : নিঃসন্দেহে এর উপকারের শেষ নেই। বিশেষ করে পালংশাক আর বাঁধাকপির কথা বলতেই হয়। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও আয়রনের বড় উৎস এগুলো। হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়ক ভিটামিন কে-ও আছে এ ধরনের শাকপাতায়।
দই : এতে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার দল পরিপাকতন্ত্র ঠিকঠাক রাখে। এটি এক ধরনের প্রোবায়োটিক খাবার, যা শিশুর বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে।
মিষ্টি আলু : মিষ্টিআলুর খনিজ ও ভিটামিন ‘এ’ বাড়তে সাহায্য করে। দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় দুই ধরনের ফাইবারই আছে এতে, যার ফলে অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়ে। আর অন্ত্র ঠিক থাকার মানে হলো শরীর বৃদ্ধির বাদবাকি কলকবজাও কাজ করবে বাধাহীন।
হোল গ্রেইন বা গোটা শস্য : ‘বি’ ভিটামিন, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন সবই পাওয়া যায় গোটা শস্যে। শস্য প্রক্রিয়াজাত করা হলে এসব পুষ্টি অনেকটাই হারিয়ে যায়। তাই শিশুকে ওটস, রুটি, ছাতু এসবেও অভ্যস্ত করানো ভালো। চ
ফল : প্রতিদিনই কিছু না কিছু ফল দিন। এক দিন বেশি করে খেলে পরের কয়েক দিন খেতে হবে না, এমন ধারণা ভুল। বিশেষ করে ভিটামিন ‘সি’ আমাদের প্রতিদিনই প্রয়োজন হয়। কারণ এটি শরীর ধারণ করে রাখে না। তাই উচ্চতাসহ যাবতীয় বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন অন্তত একটি সাইট্রাস জাতীয় ফল থাকুক পাতে।
সূত্র : কালবেলা ওয়াল্র্ড