Sunday, December 22
Shadow

বাংলার ঐতিহ্য ও তার সংগ্রামী ধারক

পেশায় একজন আইসক্রিম বিক্রেতা। হারিয়ে যেতে বসা বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘কোণ’ আইসক্রিম বিশেষভাবে নিজের হাতেই তৈরী করেন আজগর আলী। অধিকাংশ সময় তাকে দেখা যায় সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এনায়েতপুর, ঘোড়াপীর মাজার, ক্যাম্পাস, নলাম, খেজুরটেক এলাকায়।

বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলায় তার বাসা।  জীবিকার তাগিদে দুই বছর ধরে থাকছেন সাভারে। আইসক্রিম বিক্রির উপার্জনেই কোনোমতে জীবন অতিবাহিত করছেন তিনি।

দেশে নতুনত্বের যুগে ভুয়া দুধের ভেলকির প্রেমে পড়া নতুন প্রজন্মের কাছে হয়তো তিনি বা তার তৈরি খাটি দুধের কোণ মালাই আজ অচেনা। কিন্তু একসময় এটিই তার জীবিকার প্রধান উৎস ছিল। এখনো এটি চলছে তবে আজ নেই সেই জৌলুশ। চলছে কোনোমতে সংসার জীবন।

স্ত্রী, চার সন্তান আর বাবা-মাকে নিয়ে বেশ বড় পরিবারই ছিল তার। তখন বিক্রির চাহিদা বা উপকরণের দামও ছিল কম। এখন পরিবারে সন্তানেরা অন্যান্য উপার্জনের পথ ধরেছেন। কিন্তু প্রবীণ বয়সে স্ত্রী আর ছোট সন্তান নিয়ে আইসক্রিম বিক্রির স্বল্প আয়ে কোনোরকমে সংসার চালাতে হচ্ছে তার।

আইসক্রিম তৈরীর দুধসহ অন্যান্য উপকরণের দাম যে হারে বেড়েছে ঠিক সেই অনুপাতেই কমেছে তার বেঁচা-বিক্রি। দিনে ২০০-২৫০ টাকা বিক্রি করে তিনজনের সংসার চলেনা। তবুও জীবন কেটে যাচ্ছে তার নিয়মে।

অন্যদের মতো তার ফ্রিজে করে আইসক্রিম বিক্রির সুযোগ নাই। দিনশেষে সব বিক্রি করতে না পারলে গলে যায় মালাইয়ের বরফগুলি। বাধ্য হয়ে ফেলে দিতে হয় সেগুলো। সেদিনকার মত দিনটি হয়তো অনাহারেই কাটাতে হয়!

তবে এতেই বেশ সুখী তিনি। ৩ বেলা ভাত না জুটাতে পারলেও দিন শেষে যা বেচতে পারেন তা দিয়েই আজকের এ কঠিন সময়ে মূল্য বৃদ্ধির যুগে হাসিমুখে ধরে রেখেছেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য।

লেখাঃ মোঃ আখলাক ই রাসুল

শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!