থিয়ানকংয়ে যত্নে আছে ইঁদুরগুলো, ‘ভর্তি পরীক্ষা’ হয়েছিল যেভাবে - Mati News
Friday, December 5

থিয়ানকংয়ে যত্নে আছে ইঁদুরগুলো, ‘ভর্তি পরীক্ষা’ হয়েছিল যেভাবে

চীনা মহাকাশ স্টেশন থিয়ানকংয়ে নিয়ে যাওয়া চারটি ইঁদুর সুস্থ আছে। নভোচারীদের নিবিড় যত্নে তারা ধীরে ধীরে মানিয়ে নিতে শুরু করেছে কক্ষপথের পরিবেশে। তবে এরইমধ্যে তাদের ফেরার সময়ও ঘনিয়ে এসেছে।

ইঁদুরগুলোর একটি ভিডিওচিত্র পাঠানো হয়েছে পৃথিবীতে। তাতে দেখা গেছে, চীনা মহাকাশচারীরা একটি বিশেষ পরিবহন ব্যাগ থেকে ইঁদুরগুলোকে বের করছেন। এরপর তারা ইঁদুরগুলোকে রাখার জন্য কিছু জিনিসপত্র ও যন্ত্র স্থাপন করেছেন এবং সেগুলোর সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছেন।

সক্রিয় হওয়ার পর ওই ডিভাইসটি ইঁদুরগুলোর নির্ধারিত বাক্সে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের স্থিতিশীল তাপমাত্রা বজায় রেখেছে।

আরামদায়ক এ পরিবেশে ইঁদুরগুলো খাবার খেয়েছে। তাদের আচরণও স্বাভাবিক।

ইঁদুরের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাটি যখন খোলা হয়, তখন দেখা যায় ওটার ভেতর শূন্য মাধ্যাকর্ষণের কারণে ইঁদুরের মল ও খাবারের কণা ভাসছে। পরে বাতাস প্রবাহিত করে সেই কণাগুলোকে বাক্সের আঠাল তলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এতে করে ইঁদুরগুলোর জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত হয়।

জিনগত দিক দিয়ে মানুষের সঙ্গে বেশ মিল থাকায় ইঁদুরদের প্রায়ই ডাক পড়ে গবেষণাগারে। তাই বলে যেনতেন কয়েকটি ইঁদুর ধরেই মহাকাশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়নি। ওদেরকে পার হতে হয়েছে কয়েক ধাপের বাছাই প্রক্রিয়া।

চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস (সিএএস)-এর টেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সেন্টার ফর স্পেস ইউটিলাইজেশনের বিশেষজ্ঞ হুয়াং খুন জানালেন, প্রথম ধাপে ইঁদুরগুলোকে শারীরিক ফিটনেসের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। একটি ঘূর্ণায়মান চাকার ওপর রেখে তাদের শক্তি, সহনশীলতা  দৃঢ়তা মাপা হয়।

মহাকাশে স্পেস স্টেশন সারাক্ষণই ঘোরে। তাতে ইঁদুরগুলোর ‘মোশন সিকনেস’ দেখা দেয় কিনা সেটা যাচাই করা হয়েছে বহুমাত্রিক একটি ঘূর্ণায়মান চাকতির ওপর রেখে।

ইঁদুরগুলোকে উল্টো করে ঝুলিয়ে পরীক্ষা করা হয় তাদের আচরণগত প্রতিক্রিয়ার মাত্রা ও কোনো কিছু আঁকড়ে ধরার ক্ষমতা। বুদ্ধি পরীক্ষার জন্য প্রাথমিকভাবে বাছাই করা ইঁদুরগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয় গোলকধাঁধায়। মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশে ইঁদুরগুলো খাবার অনুসন্ধান করতে পারবে কিনা, সেটাও দেখা হয় এতে।

সবশেষে স্পেস স্টেশনের কেবিনের পরিবেশের সিম্যুলেশন ঘটাতে ইঁদুরগুলোকে একটি বদ্ধ কেবিনেটে রাখা হয়। আর এসব পরীক্ষায় সবচেয়ে ভালো ফল করা সেরা চারটি ‘ইঁদুর নভোচারী’কে দেওয়া হয় কক্ষপথের টিকিট।

শেনচৌ-২০ মিশনের সঙ্গে এই ইঁদুরগুলোকেও ফিরিয়ে আনা হবে পৃথিবীতে।

সূত্র: সিএমজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *