class="post-template-default single single-post postid-21113 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

অমুসলিমদের কাছ থেকে নবীজী যেসব পোশাক উপহার পেয়েছিলেন

হাদিস ও সিরাতের কিতাবগুলোতে মহানবী (সা.)-এর বিভিন্ন পোশাকের বিবরণ পাওয়া যায়। মহানবী (সা.) বৈচিত্র্যময় পোশাক পরিধান করতেন। জুমা, ঈদ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনি বিশেষ পোশাক পরিধান করতেন। তাঁর সফরের জন্য ছিল আলাদা পোশাক। রাসুল (সা.)-এর  সেই সব পোশাকের ব্যবস্থার দুটি প্রধান মাধ্যম হলো মুসলিম ও অমুসলিমের দেওয়া হাদিয়া-তোহফা।

সাহাবায়ে কেরামের হাদিয়ার মধ্যে হজরত দাহয়াতুল কালবি (রা.)-এর হাদিয়া ছিল। তিনি দুটি মোজা ও একটি জুব্বা মহানবী (সা.)-কে হাদিয়া দিয়েছেন। রাসুল (সা.) এগুলোকে এত বেশি পরিধান করেছেন যে তা পুরনো হয়ে গিয়েছিল। (তিরমিজি, বাবু লুবসিল জুব্বাহ)

তেমনি হাবশার বাদশাহ রাসুল (সা.)-এর জন্য কালো কালো মোজা পাঠিয়েছিলেন অন্য হাদিয়া-তোহফার সঙ্গে। (তিরমিজি, বাবুন ফিল খুফফিল আসওয়াদ)

মুহাদ্দিসদের বর্ণনা অনুযায়ী, আবু জাহাম ইবনে হুজাইফা (রা.) রাসুল (সা.)-কে একটি নকশাওয়ালা সিরীয় জুব্বা হাদিয়া দিয়েছিলেন। নামাজে ওই নকশার দিকে মন যাওয়ায় তা ফেরত দিয়ে একটি মোটা কাপড়ের পরিধানবস্ত্র নিয়েছিলেন। (বুখারি শরিফ, বাবুন ইজা ছল্লা ফি ছাওবিন লাহু আলামুনল)

হজরত সুহাইল (রা.) থেকে বর্ণিত, একজন নারী রাসুল (সা.)-কে একটি চাদর হাদিয়া দিয়েছিলেন। ওই নারী এ কথাও বলেছিলেন—আমি নিজ হাতে আপনার জন্য বুনেছি। রাসুল (সা.) তা সাদরে গ্রহণ করলেন এবং ‘ইজার’ হিসেবে ব্যবহার করতেন। (বুখারি শরিফ)

এ ছাড়া আরো বহু কাপড় হাদিয়ার কথা বিভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায়। (ইবনে সাআদ, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা ২১৫)

অমুসলিমদের হাদিয়া থেকে প্রাপ্ত মহানবী (সা.)-এর পোশাক

অমুসলিমদের হাদিয়া-তোহফার কথাও পাওয়া যায়; যেমন—দাওমাতুল জান্দলের বাদশাহ মহানবী (সা.)-এর জন্য রেশমের জুব্বা পাঠিয়েছিলেন। তেমনি বহু বাদশাহ রাসুল (সা.)-এর জন্য পোশাক-পরিচ্ছদ হাদিয়া পাঠিয়েছেন। যেমন জু-ইয়াজন নামের এক বাদশাহ রাসুল (সা.)-এর জন্য এমন এক লাল কাপড়জোড়া পাঠিয়েছেন, যা তিনি ৩৩টি উটনীর বদলা ক্রয় করেছিলেন। আর রাসুল (সা.)-এরও চিরাচরিত নিয়ম ছিল, যাঁরা হাদিয়া দিতেন তাঁদেরও তিনি হাদিয়া দিতেন। এই সুন্নত অনুযায়ী রাসুল (সা.)-ও সেই শাহ জু-ইয়াজনের জন্য এমন একটি কাপড়জোড়া হাদিয়াস্বরূপ দিয়েছেন, যা ২৫টি বড় উটনীর বদলে ক্রয় করেছেন। (আবু দাউদ, বাবু লুবসিস সওফ ওয়াশ শার)

বিভিন্ন বর্ণনা দ্বারা নবী করিম (সা.)-এর পোশাক-পরিচ্ছদ সম্পর্কে বাস্তব যে রূপটি ফুটে ওঠে তা হলো, শুরুর দিকে পোশাক-পরিচ্ছদের সংকট প্রকট ছিল। বেশির ভাগ সময় তিনি দুই কাপড় পরিধান করতেন, অর্থাৎ শরীরের ওপরের অংশের জন্য চাদর কিংবা জুব্বা কিংবা কুর্তা ইত্যাদি আর নিচের অংশের জন্য সাধারণত ইজার পরিধান করতেন। দ্বিতীয়ত যা জানা যায় তা হলো, মোটা কাপড় পরতেন, মাঝেমধ্যে দামি, উন্নত পোশাকও পরিধান করেছেন। সবই আল্লাহ তাআলার নিয়ামত। শুরুর যুগ ছিল সংকীর্ণতা ও সংকটের। পরের যুগ ছিল সচ্ছলতার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!