class="post-template-default single single-post postid-15978 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

আগুন নিয়ে বিশ্বনবীর ভবিষ্যদ্বাণী

আগুনমৃত্যুর দিনক্ষণ কারো জানা নেই। নির্ধারিত সময়েই সবার মৃত্যু হবে—এটা মহান আল্লাহর বিধান। মৃত্যুর আগে অসুস্থতা বা কোনো পূর্বলক্ষণ দৃশ্যমান হলে মানুষের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার, মহান আল্লাহর কাছে তাওবা করার সুযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু আকস্মিক মৃত্যুতে সেই সুযোগ থাকে না। মহানবী (সা.) আকস্মিক মৃত্যুকে কিয়ামতের আলামত হিসেবে অভিহিত করেছেন। আনাস ইবনে মালেক (রা.) নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের আলামতসমূহের মধ্য থেকে এটাও একটা যে আকস্মিক মৃত্যু বৃদ্ধি পাবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৭৯১২)

আর এই আকস্মিক মৃত্যুর অন্যতম ধরন হলো, অগ্নিকাণ্ডে বা অগ্ন্যুৎপাতে অস্বাভাবিকভাবে মানুষের মৃত্যু। তবে স্মরণ রাখতে হবে যে ইসলাম এ ধরনের মৃতদের শহীদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

কিয়ামতের আগে অগ্ন্যুৎপাত বেড়ে যাওয়া সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামত কায়েম হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত হিজাজের জমিন থেকে এমন আগুন বের হবে না, যা বসরার উটগুলোর গর্দান আলোকিত করে দেবে।’ (বুখারি, হাদিস : ১০৫৪)

কিয়ামতের সর্বশেষ আলামত হলো এক ভয়াবহ আগুন, যা পূর্ব ইয়েমেনের আদন নামক স্থানের একটা গর্ত থেকে বের হয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে এবং মানুষকে তাড়িয়ে একত্র করবে। হুজাইফা ইবনে উসাইদ আল গিফারি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমরা পরস্পর আলোচনা করছিলাম, এমন সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের কাছে এলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, তোমরা কী বিষয়ে আলোচনা করছিলে? উপস্থিত সাহাবিরা বলেন, কিয়ামত প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, কিয়ামত ওই পর্যন্ত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না তোমরা তার আগে ১০টি আলামত দেখতে পাবে। অতঃপর তিনি ১০টি নিদর্শন উল্লেখ করেন—১. ধোঁয়া, ২. দাজ্জাল, ৩. দাব্বাতুল আরদ, ৪. সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হওয়া, ৫. ঈসা ইবনে মারইয়াম (আ.)-এর আগমন, ৬. ইয়াজুজ-মাজুজ, ৭. তিনটি ভূমিধস। একটি পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তে, ৮. একটি ভূমিধস পশ্চিম প্রান্তে, ৯. একটি আরব ভূখণ্ডে, ১০. সর্বশেষ নিদর্শন হলো ইয়েমেন থেকে আগুন, যা মানুষকে তাড়িয়ে হাশরের ময়দানে একত্র করবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯০১)

সালেম ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের আগে হাজরামাউত থেকে অথবা হাজরামাউতের সাগরের দিক থেকে সহসাই একটি অগ্ন্যুৎপাত ঘটবে এবং তা মানুষকে একত্র করবে। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসুল! তখন আমাদের কী করার জন্য আপনি নির্দেশ দেন? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা সিরিয়ায় আশ্রয় নেবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২২৭১)

আবু হুরায়রা (রা.) নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, কিয়ামতের দিন মানুষের হাশর হবে তিনভাবে। একদল যাবে আশা ও ভীতি নিয়ে। দ্বিতীয় দল হবে যারা এক উটে দুজন, তিনজন, চারজন বা দশজন আরোহণকারী। আর অবশিষ্টদের আগুন একত্র করবে। যেখানে তারা থাকবে, আগুনও তাদের সঙ্গে সেখানে থাকবে। তারা যেখানে রাত যাপন করবে, আগুনও তাদের সঙ্গে সেখানে রাত যাপন করবে। তারা যেখানে সকাল অতিবাহিত করবে, আগুনও তাদের সঙ্গে সেখানে থাকবে। তাদের যেখানে সন্ধ্যা হবে, আগুনেরও সেখানেই সন্ধ্যা হবে। (বুখারি, হাদিস : ৬২৭৩)

ওপরে উদ্ধৃত হাদিসের আলোকে জানা যায়, আগুন কখনো কখনো আজাব হয়ে আসে। কখনো কখনো এটি অপমৃত্যুর কারণ। আর কিয়ামতের আগে আগুনের ব্যাপ্তি ঘটবে। আগুনকে কেন্দ্র করে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়বে। মহান আল্লাহ আমাদের এসব ফিতনা থেকে হেফাজত করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!