আর হয়তো কয়েকদিন বাঁচবেন, অথচ আজ তার বিয়ে!
চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মাত্র কয়েক সপ্তাহ বাঁচবেন তিনি। ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেহে। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও হার মানেননি ১৯ বছর বয়সী ডাস্টিন স্নেইডার। সময় নষ্ট না করে নিজের শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন প্রেমিকা সিয়েরা সিভেরিওকে।
ডিনারের শেষে উপহার আর গোলাপের তোড়ার মাঝে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেলেন তাকে। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি সিয়েরাও। তিনিও হয়তো এই প্রশ্নের অপেক্ষাতেই ছিলেন। হাসতে হাসতেই বলে ওঠেন, রাজি।
ফ্লোরিডার ডাস্টিন আর সিয়েরার গল্পটা ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। বিয়ে আজ রবিবার। বাড়ির কাছে ভ্যালরিকোর একটি কটেজে। কিন্তু দিনক্ষণ ঠিক হলেও এত অল্প সময়ে সব আয়োজন হবে কী করে? সেই চিন্তাটা মিটিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা।
তাদের বিয়ের জন্য টাকা জোগাড় করতে একটি ওয়েবপেজ খুলেছেন ডাস্টিনের বোন। শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই তাতে জমা পড়েছে ১৩ হাজার ডলার!
মরণ রোগে ছেলের চেহারা ভাঙলেও মনোবল ভাঙেনি একটুও। ডাস্টিনের মা কাসান্ড্রা ফনডান জানান, ডাস্টিন-সিয়েরা ছেলেবেলার বন্ধু। মাঝে ডাস্টিনের স্কুল বদলে যাওয়ায় বছরখানেক দু’জনের মধ্যে যোগাযোগ ছিল না। তিন বছর আগে হঠাৎ দেখা। দু’জনে ডেটেও গেছেন কয়েক বার।
একটু থেমে তিনি আরো বলেন, ২০১৬-তে খবরটা জানতে পারি। ডাস্টিনের জন্মদিনের ঠিক আগের দিন। সেটা ছিল জুনের একটা সোমবার। সেই সময়ে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তো ডাস্টিন। হু-হু করে ওজন কমছিল।
চিকিৎসকরা জানান, ফুসফুসের বিরল এক ধরনের ক্যান্সারে ভুগছে ডাস্টিন। শুরু হয় চিকিৎসা। কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন; বাদ গেল না কিছুই। মাস ছয়েক পরে দেখা গেল, রোগ খানিকটা নিয়ন্ত্রণে। তবে সে স্বস্তি ক্ষণস্থায়ী। কয়েক মাস যেতে না যেতেই আবারো ফুসফুসে ছোপ ধরা পড়ল।
জানা গেল, নতুন করে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে শরীর জুড়ে। আবার অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি, ওষুধ। তবে পুরোপুরি সেরে ওঠার আশা ক্রমেই ক্ষীণ
হচ্ছিল। সম্প্রতি চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, আর খুব বেশি হলে কয়েক সপ্তাহ বাঁচবেন ডাস্টিন। মুহূর্তে সব অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল স্নেইডার পরিবারের সামনে।
আর তার পরেই ডাস্টিনের এই সিদ্ধান্ত। তিনি জানান, পুরো লড়াইয়ে সিয়েরা আমার পাশে ছিল, আছেও। জীবনের শেষ মুহূর্তটা ওর সঙ্গেই কাটাতে চাই।