স্থূলতা যখন কিডনি রোগের কারণ
নেফ্রাইটিস, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের মূল কারণ। তবে ধীরগতির কিডনি রোগ হওয়ার অন্যতম কারণ স্থূলতা। স্থূলতাজনিত কিডনি রোগ বর্তমানে পৃথিবীতে সুপ্ত মহামারির আকার ধারণ করেছে। এ নিয়ে লিখেছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজির (নিকডু) সাবেক পরিচালক, কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ
দেহে চর্বি জমা হয়ে মুটিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ অধিক খাদ্য গ্রহণ। এ ছাড়া বংশগত কারণ, কর্ম সম্পাদনে ধীরগতি, নানা হরমোন, ওষুধের প্রভাব ইত্যাদিও দায়ী। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের ফলে হজমের পর কিছুটা চর্বিতে রূপান্তর হয়ে দেহে জমা হয়। এই অতিরিক্ত চর্বির কারণে স্থ্থূলতা তৈরি হয়, ওজন বৃদ্ধি পায়। তখন কিডনির ছাঁকনিকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এতে ধীরে ধীরে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়। একসময় দুটি কিডনিই বিকল হতে পারে।
শুধু কিডনি রোগ নয়, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি, শ্বাসকষ্ট, লিভারে চর্বি জমা বা ফ্যাটি লিভার, পিত্তথলির রোগ, হাড়ের নানা সমস্যা, মানসিক রোগ, ক্যান্সার, বন্ধ্যত্ব এবং সর্বোপরি জীবনযাত্রার মানে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটায় এই স্থূলতা। এর ফলে পরোক্ষভাবে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ও কিডনির রোগ সৃষ্টি করে। স্থূল বা অতিকায় মোটা লোকদের আকস্মিক বা হঠাৎ কিডনি অকেজো হওয়া প্রায়ই দেখা যায়।
করণীয়
দেহের স্থূলতা নিয়ন্ত্রণ করে কিডনির কার্যক্ষমতা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন ব্যাপক সচেতনতা। এ জন্য কিছু করণীয় হলো—
♦ সব সময় সুস্থ, সবল, কর্মচঞ্চল থাকা। মুটিয়ে যাওয়া থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা।
♦ কায়িক শ্রম, ব্যায়াম করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
♦ উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা।
♦ টাটকা শাকসবজি, ফলমূল ও সুষম খাবার গ্রহণ।
♦ ফাস্ট ফুড ও কোমল পানীয় পরিহার।
♦ দৈনিক দেড় থেকে দুই লিটার বিশুদ্ধ পানি পান।
♦ তামাক, সিগারেট ও মদজাতীয় তরল পানীয় বর্জন।
♦ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বেদনানাশক, হারবাল ও স্থানীয় ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকা।
♦ কারো উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও স্থূলতা অথবা বংশগত কিডনি রোগ থাকলে কিডনি রোগের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো বছরে কমপক্ষে একবার করিয়ে সচেতন থাকা।
https://www.youtube.com/watch?v=AoO_iZhlnGs&fbclid=IwAR087UtT5y2ImtuRqnFuSkLhhRNQSANoCqoNRJJairlzCPZdLhf7-BP3a6M