গর্ভপাত কি কেবল নারীদের শারীরিক সমস্যার ওপরেই নির্ভর করে? একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে কিছু ক্ষেত্রে পুরুষ সঙ্গীর শুক্রাণুর ডিএনএর ক্ষতির (sperm DNA damage) কারণে ঘন ঘন গর্ভপাত (recurrent pregnancy loss) হতে পারে। ENDO 2019 এ উপস্থাপিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, বারেবারে গর্ভপাতের কারণ হতে পারে স্পার্ম ডিএনএ ড্যামেজও।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের এমডি পিএইচডি, গবেষক চেন্না জয়সেনা বলেন, “আমাদের গবেষণা থেকে জানা যায় যে আরপিএল প্রভাবিত নারীদের সঙ্গী পুরুষদের প্রজনন কার্যক্রমে অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা পরীক্ষা করা কার্যকর হতে পারে। এটি একটি নতুন সম্ভাব্য ‘ড্রাগ টার্গেটও’ তৈরি করে। ভবিষ্যতে এমন ওষুধ তৈরি করা সম্ভব যাতে শুক্রাণু ডিএনএর ক্ষতি রোধ করা যায় এবং আরপিএল দম্পতিদের গর্ভপাতের ঝুঁকি কমানো যায়।”
তিনি বলেন, এক-দুই শতাংশ দম্পতির মধ্যে রেকারেন্ট প্রেগন্যান্সি লস বা আরপিএল (recurrent pregnancy loss) রয়েছে। সংক্রামিত নারীরা কারণ নির্ধারণের জন্য অনেক পরীক্ষা করান, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই কোনও কারণ থাকেই না।
আরো পড়ুন : নতুন মাইলফলকে সাবিলা নূর
জানা গেছে, গবেষকরা ৫০ জন এমন সুস্থ মানুষের যাঁদের সঙ্গিনীদের কখনও গর্ভপাত হয়নি, তাঁদের সঙ্গে ৬৩ জন এমন পুরুষের তুলনা করেছেন যাঁদের সঙ্গিনীরা আরপিএল প্রভাবিত। গবেষকরা যৌন মিলনের মাত্রা যেমন টেস্টোস্টেরন, মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে শুক্রাণুর আচরণ এবং সংখ্যা পরিমাপ করেন। এ যন্ত্রের সাহায্যে তারা আণবিক পরীক্ষার মাত্রাও পরিমাপ করেন।
এ ছাড়াও তাঁরা শুক্রাণুর ডিএনএ ক্ষতির স্তরের পরিমাপও করেন। তা ছাড়াও তারা প্রতিক্রিয়াশীল অক্সিজেন প্রজাতি নামক একটি রাসায়নিক বস্তুর স্তরেরও পরিমাপ করে, যা পুরুষদের বীর্য শুক্রাণুর কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
গবেষণায় গবেষকরা জানতে পারেন, আরপিএল প্রভাবিত পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ দ্বিগুণ হয়। যে পুরুষদের সঙ্গীনিদের গর্ভপাত হয়েছে তাদেরও প্রতিক্রিয়াশীল অক্সিজেন প্রজাতির সংখ্যা সাধারণের তুলনায় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের এমডি পিএইচডি, গবেষক চেন্না জয়সেনা বলেন, “আমাদের গবেষণা থেকে জানা যায় যে RPL প্রভাবিত নারীদের সঙ্গী পুরুষদের প্রজনন কার্যক্রমে অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা পরীক্ষা করা কার্যকর হতে পারে। এটি একটি নতুন সম্ভাব্য ‘ড্রাগ টার্গেটও’ তৈরি করে। ভবিষ্যতে এমন ওষুধ তৈরি করা সম্ভব যাতে শুক্রাণু ডিএনএর ক্ষতি রোধ করা যায় এবং RPL দম্পতিদের গর্ভপাতের ঝুঁকি কমানো যায়।”
তিনি আরো বলেন, সংক্রামিত নারীরা কারণ নির্ধারণের জন্য অনেক পরীক্ষা করান, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই কোনও কারণ থাকেই না।