হৃষ্টপুষ্ট ব্রয়লার মুরগি খেতে কার না ভাল লাগে? তার উপর, দোকানদার যখন মুরগির রানের মাংস দেখিয়ে বলে, “দ্যাহেন, এমন গোলাপি মাংস পাইবেন কোথাও?” তখন তো আনন্দ আর ধরে না! মাংস যত গোলাপি, ততই যেন স্বাদ।
থামুন! কী খাচ্ছেন? লোভনীয় গোলাপি মাংসের রূপে বিষ খাচ্ছেন না তো? অতিরিক্ত স্বাস্থ্যবান ব্রয়লারের মুরগির গোলাপি মাংস আপনার স্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত, জানেন কি?
ব্রয়লার মুরগি কীভাবে ক্ষতি করে?
আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন(এফডিএ)-এর একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে মুরগিকে তাড়াতাড়ি বাড়িয়ে তোলা এবং মাংসের রঙ আরও বেশি গোলাপি করার জন্য এদের খাবারে আর্সেনিক মেশানো হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি মূলত “জেনেটিক্যালি মডিফাইড(Genetically Modified)” এক ধরণের মুরগি যারা স্বাভাবিকের তুলনায় তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠবে এবং অতিরিক্ত মাংসল হবে। এই প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করতে এর শরীরে বাইরের জিন ছাড়াও হরমোন, আর্সেনিক, কার্সিনোজেন উপাদানসহ বিভিন্ন ধরণের ঔষধ ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে যা মানবদেহের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
ব্রয়লার মুরগির আয়ুষ্কাল সর্বোচ্চ ৬ সপ্তাহ। এই স্বল্প সময়ে এদের এধরণের খাবার গ্রহণের ফলে শ্বাসকষ্ট, ব্রংকাইটিস ইত্যাদি অসুস্থতা দেখা দেয় এবং বাজারে এই অসুস্থ মুরগি বিক্রি করা হয়। খেয়াল করলে দেখবেন অসুস্থ ব্রয়লার মুরগি সবসময় বসে থাকে। দাড়িয়ে থাকতে পারেনা।
পোল্ট্রি ফার্মগুলোতে মুরগির খাবারে ‘থ্রি-নাইট্রো’ নামক এক ধরণের ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা জার্মানিতে বহু বছর আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তখন এর নাম ছিল ‘রক্সারসোন’।
স্বল্প মাত্রায় আর্সেনিক ব্যবহৃত হলে তা শরীরে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে; কিন্তু এর মাত্রা বেশি হলে শরীরের অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। ব্রয়লার মুরগি মোটাতাজা করতে প্রচুর পরিমাণে আর্সেনিক ব্যবহার করা হয়।
অনেকে বলে থাকেন, মুরগির খাবারে শুধু আর্সেনিক নয়, অন্যান্য অ্যান্টিবায়োটিকও মেশানো হয়। সেটাও খারাপ। অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করলে শরীরে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে।
সুতরাং ব্রয়লার মুরগি কেনার আগে লক্ষ্য রাখুন মুরগিটি স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত মোটাতাজা কি না। অথবা মুরগিটি সব সময় বসে আছে কি না। এছাড়াও, মুরগির মাংস অস্বাভাবিক গোলাপি হওয়াও ভাল লক্ষণ নয়।