শ্বাসকষ্ট কোনো রোগ নয়!
নিঃশ্বাস ছাড়া মানুষ স্থবির, মৃত। শ্বাসকষ্ট মানুষের নিঃশ্বাস কেড়ে নিয়ে তাকে মৃত্যুর কোলে ফেলে দেয়। তাই যাদের শ্বাসকষ্ট রয়েছে, তাদের উচিত বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করা।
শ্বাসকষ্ট কী?
শ্বাসকষ্টের লক্ষণগুলো হলো—শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে না পারা, শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া, রেসপিরেটরি ডিসট্রেস নামেও পরিচিত। এই অসুবিধার সঙ্গে মানসিক অভিজ্ঞতা বা অনুভূতিও সম্পর্কযুক্ত। এই অনুভূতির কোনো শারীরবৃত্তীয় কারণ না থাকলেও শ্বাসকষ্টের কারণে একজন ব্যক্তির এমন অনুভূতি হতে পারে।
কারণ
♦ হাঁপানি বা অ্যালার্জি।
♦ ঠাণ্ডা লাগার ফলেও অনেকের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
♦ অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া।
♦ সাইনোসাইটিস, হার্ট ফেইলিওর, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগ।
♦ ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি)
এ ছাড়া বহুবিধ কারণে শ্বাসকষ্টের অনুভূতি হতে পারে। আবার জ্বরসহ বেশ কিছু শারীরিক রোগেও শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর দহন বা মেটাবলিজম বেড়ে যাওয়ার জন্য নিঃশ্বাসের হার বেড়ে যায়। হাইপারভেন্টিলেশন সিন্ড্রোমের কারণটা যদিও খুব স্পষ্ট নয়, তবে এটার সঙ্গে উৎকণ্ঠা আর এক ধরনের ভয় পাওয়া রোগের (প্যানিক ডিস-অর্ডারের) সম্পর্ক আছে। সেই অর্থে এটা মনের রোগ।
ঘুমানোর জন্য বিছানায় শোয়ার পর কিছু ব্যক্তির শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়।
এটা নাকের সমস্যা ও অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে এমনটি হতে পারে।
করণীয়
♦ ধূমপান পরিহার করুন। পরোক্ষ ধূমপানও শ্বাসকষ্টের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ঘরে বা আশপাশে অন্যদের ধূমপান করা থেকে বিরত রাখুন।
♦ হাঁপানি থাকলে চিকিৎসা করান।
♦ অ্যালার্জি থাকলে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে এমন বস্তু (যেমন—ধুলাবালি, মাইট) ও খাবার (যেমন—গরুর মাংস, ইলিশ মাছ, বাদাম ইত্যাদি) এড়িয়ে চলুন।
♦ সঠিক ওজন বজায় রাখুন। অতিরিক্ত ওজনের কারণেও শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পেতে পারে।
♦ ঘর গোছানোর সময় বা বাইরে গেলে ডাস্ট মাস্ক পরে বের হোন।
♦ ঘরে বেশি পশমওয়ালা পশু পালন করবেন না।
♦ ঘরবাড়ি সব সময় পরিষ্কার ও ধুলামুক্ত রাখুন।
♦ অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
লেখক : বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক ও কনসালটেশন সেন্টার, লালবাগ শাখা, ঢাকা।
https://www.youtube.com/watch?v=AoO_iZhlnGs&t=10s