নবম ও দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায় থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হলো-
১। উদ্দীপক : রাকিব একটি ক্লাবের সদস্য। ওই ক্লাসের বেশিরভাগ সদস্যই ‘সাধারণ সম্পাদক’ হতে চায়। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। অবশেষে সম্পাদক বাছাইয়ের জন্য কয়েকজনকে ক্ষমতা দেওয়া হয়। ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পরবর্তীতে তাদের ক্লাবের একজন সাধারণ সম্পাদক বাছাই করে। নতুন সম্পাদক সবার আস্থা অর্জনের চেষ্টা করলেও পরবর্তীতে তার দূরদর্শীতার অভাব এবং তার কাছের কিছু ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার জন্য তিনি বিতর্কিত হয়ে পড়েন। ফলে সম্পাদক বাছাই প্রক্রিয়াটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
ক) রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ম্যাকাইভার প্রদত্ত রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞাটি লেখ। খ) নির্বাচন কমিশন কি ? ব্যাখ্যা কর। গ) রাকিবদের ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাছাইয়ের প্রক্রিয়াটি তোমার পঠিত বিষয়বস্ত‘র আলোকে ব্যাখ্যা কর। ঘ) ‘ বাছাই প্রক্রিয়ার দুর্বলতা নিরসন করতে পারলেই সম্পাদক বাছাই প্রক্রিয়াটি সর্বোত্তম হবে। ’- মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর :
ক) উত্তর : রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ম্যাকাইভার রাজনৈতিক দল সম্পর্কে বলেছেন ,“ যারা কতগুলো সুনির্দিষ্ট নীতির ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং সাংবিধানিক উপায়ে সরকার গঠন করতে চেষ্টা করে , সেই জনসমষ্টিকে রাজনৈতিক দল বলা হয়। ”
খ) উত্তর : বাংলাদেশে নির্বাচন সমূহ পরিচালনার জন্য যে সাংবিধানিক সংস্থা রয়েছে তার নাম নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কয়েকজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেন। নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুযায়ী ও আইনের দ্বারা অর্পিত দায়িত্ব পালন করে। নির্বাচন কমিশনারের মেয়াদ পাঁচ বছর।
গ) উত্তর : রাকিবদের ক্লাবের অধিকাংশ সদস্যই সাধারণ সম্পাদক হতে চায়। কেউ কাউকে ছাড় দিতে না চাওয়ায় অবশেষে কয়েকজনকে ক্ষমতা অর্পণ করে একজন সম্পাদক বাছাই করার জন্য। উক্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাপরবর্তীতে তাদের ক্লাবের একজন সাধারণ সম্পাদক বাছাই করে। রাকিবদের ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাছইয়ের প্রক্রিয়াটি আমার পঠিত পরোÿ গণতন্ত্রের বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর পরোক্ষ গণতন্তন্ত্র বলতে সাধারণত নাগরিকগণ সরাসরি অংশগ্রহণ না করে প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে শাসনকার্য পরিচালনা করার পদ্ধতিকে বোঝায়। যেমনটি রাকিবদের ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়েছে। এখানে সবাই মিলে সাধারণ সম্পাদক বাছাই না করে তারা কয়েকজনকে ক্ষমতা অর্পণ করে। আর সেই ক্ষমতাপ্রাপ্তরা মিলে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাছাই করে।
ঘ) উত্তর : রাকিবদের ক্লাবের অধিকাংশ সদস্যই সাধারণ সম্পাদক হতে চায়। কেউ কাউকে ছাড় দিতে না চাওয়ায় অবশেষে কয়েকজনকে ক্ষমতা অর্পণ করে একজন সম্পাদক বাছাই করার জন্য। উক্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ পরবর্তীতে তাদের ক্লাবের একজন সাধারণ সম্পাদক বাছাই করে। নতুন সম্পাদক সবার আস্থা অর্জনের চেষ্টা করলেও পরবর্তীতে তার দূরদর্শীতার অভাব এবং তার কাছের কিছু ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার জন্য তিনি বিতর্কিত হয়ে পড়েন। ফলে সম্পাদক বাছাইপ্রক্রিয়াটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। বস্ত‘ত রাকিবদের ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাছই করা হয়েছে পরোক্ষ পদ্ধতিতে। এ পদ্ধতিতে নাগরিকগণ সরাসরি অংশগ্রহণ না করে প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে শাসনকার্যে অংশ নেয়। কিন্তু রাকিবদের ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাছাই প্রক্রিয়ায় যে দুর্বলতা কাজ করেছে তা হলো সততা ও নৈতিকার বিচার না করে সাধারণ সম্পাদক বাছাই করা। বাছাইকৃত সম্পাদকের মধ্যে সততা ও নৈতিকতা থাকলে তাকে কিছু ব্যক্তির স্ত^ার্থের জন্য বিতর্কিত হতে হতো না। পাশাপাশি সম্পাদক বাছাই প্রক্রিয়াটিও প্রশ্নবিদ্ধ হতো না। অতএব বাছাই প্রক্রিয়ার দুর্বলতা নিরসন করতে পারলেই সম্পাদক বাছাই প্রক্রিয়াটি সর্বোত্তম হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।