ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যের যাদবপুর অশ্বিনীনগরের ঘটনা। মধ্যরাত। ক্রমাগত বাড়ির দরজা নক করছেন কেউ। বিরক্ত হয়ে দরজা খোলেন বাড়ির এক গৃহবধূ। দেখেন, এক যুবককে দাঁড়িয়ে আছে। জিজ্ঞেস করেন, ‘এত রাতে কী দরকার? এভাবে দরজা নক করছেন কেন?’
যুবকের পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আপনিই তো এই ঠিকানাই দিয়েছেন। এখন বলছেন কী দরকার?’ নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে ওই যুবকের কাছে গোটা ঘটনাটি শোনেন ওই গৃহবধূ।
অবাক হওয়ার তখনও বাকি। ষড়যন্ত্র করে কেউ একজন সেক্স ওয়েবসাইটে তার নামে আইডি খুলেছেন। তার বাসার ঠিকানা, কখন পৌঁছতে হবে- সম্ভাব্য ‘কাস্টমার’কে মোবাইল চ্যাটে সব তথ্য দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
গত দুই থেকে আড়াই মাস ধরে এভাবে দিন-রাতের বিভিন্ন সময়ে ওই ফ্ল্যাটে ‘গোপনে বন্ধুত্ব করতে’ হাজির হচ্ছেন বিভিন্ন বয়সের পুরুষ। বাড়িতে থাকাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই পরিবারের।
ওই গৃহবধূর ভাইয়ের বউকেও এভাবে টার্গেট করা হয়েছে। তার ছবি আপলোড করে দেওয়া হয়েছে এই ধরনের ওয়েবসাইটে। বন্ধুত্ব পাতানোর কথা বলা হলেও এই ধরনের ওয়েবসাইট সাধারণত এসকর্ট সার্ভিসের জন্যে ব্যবহার করা হয়।
ওই গৃহবধূর নাম ও ছবি ব্যবহার করে লেখা হয়েছে, ‘আমি….। কিছু দিন আগে বিয়ে হয়েছে। স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে খুশি নই। স্বামীর চাকরিও নেই। আমি একা। টাকারও দরকার। আমার বয়স ২০ বছর। বাড়িতে এলে ২ ঘণ্টার জন্য লাগবে ৫০০ টাকা। গ্রুপ সার্ভিসও পাওয়া যায়।’
বাড়ির দরজার সামনে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। তারপরও আসছেন বহু পুরুষ। ‘কাস্টমার’ মোবাইল চ্যাটে সিসি ক্যামের কথা জিজ্ঞেস করলে তাদের বলা হচ্ছে, ‘আমার নিরাপত্তার জন্যেই এসব করেছি। ভয় পাবেন না। চলে আসুন।’
অতিষ্ঠ হয়ে সম্প্রতি বাড়ির সামনে বাংলা, হিন্দি ও ইংরাজিতে লেখা হয়েছে, ‘ওয়েবসাইট দেখে কেউ দরজা নক করবেন না।’ ওই লেখা দেখে কাস্টমার প্রশ্ন করলে বলা হচ্ছে, ‘ওটা ইচ্ছে করে লাগানো হয়েছে। যাতে কারও সন্দেহ না হয়।’
দুই পরিবারের অভিযোগ, এই চক্রান্তে প্রতিবেশী কারও হাত রয়েছে। না হলে তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ কিভাবে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে? তাদের পারিবারিক শান্তি নষ্ট করতে অসৎ উদ্দেশ্যে কেউ এটা করছে। ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন তারা। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।